বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে জোর দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার (Government Of West Bengal)। কচিকাঁচাদের স্কুলমুখো করার জন্য নেওয়া হচ্ছে একের পর এক পদক্ষেপ। তবে, এসেবের মধ্যে গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ড। যদিও, এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী এখন জেলে। তৃণমূলের তরফ থেকে ওনার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্কও ছিন্ন করা হয়েছে। এই মামলা এখনো চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। আর এরই মধ্যে শিক্ষা সংক্রান্ত এক কাণ্ড গোটা রাজ্যে শোরগোল ফেলে দিয়েছে।
খাস কলকাতায় (Kolkata) বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ আচমকাই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় (Soma Banerjee) অভিযোগ করেছেন যে, তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে, যার জেরেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্যদিকে, এই কথা শুনেই অগ্নিশর্মা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। তিনি পাল্টা জানিয়েছেন যে, উপাচার্যের পদত্যাগ করা উচিৎ।
উল্লেখ্য, গত মাসেই রাজ্যে ২৫৩টি বেসরকারি বিএড কলেজের সরকারি অনুমোদন বাতিল করা হয়েছে। বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে পরিস্কার জানানো হয়েছে, অনুমোদন বাতিল করা বেসরকারি বিএড কলেজগুলির অনুমোদন আর পুনর্নবীকরণ করা হবে না। এরপরই উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন যে, তাঁকে এই কারণে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তিনি এও অভিযোগ করেছেন যে, যারা হুমকি দিয়েছে তাঁরা রাজ্যে কোনও বেসরকারি বা সরকারি অনুদানপুষ্ট নয় এমন বিএড বা এমএড কলেজের সঙ্গে যুক্ত।
সোমাদেবী জানিয়েছেন যে, এই হুমকির কারণে বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়াও নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ তার। আর এই কারণেই তিনি আপাতত বিআর অম্বেডকর বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি এও জানিয়েছেন যে, যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে, ততদিন কাজ বন্ধ থাকবে। তিনি এর জন্য প্রশাসনের সহযোগিতাও আশা করেছেন।
এরপরই আসরে নামেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানান যে, ‘আমি দফতর থেকে খবর নিয়েছি গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ই-মেইল করে জানানো হয়েছে যে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে। উনি তো আমাদের সঙ্গে কথা বলে কোন সিদ্ধান্ত নেন নি।” পাশাপাশি তিনি আইনি পথে হাঁটারও হমকি দিয়েছেন।
আচমকাই এভাবে প্রশাসনিক কাজ বন্ধ করে দেওয়ার জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন অনুমোদন বাতিল হওয়া বিএড কলেজের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা থেকে শুরু করে পড়ুয়া ও অভিভাবকরা। আর এই কারণে তাঁরা শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ ক্যাম্পাসের সামনে এসে বিক্ষোভও দেখান। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজবাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রবল সমস্যার সম্মুখীন পড়ুয়ারা। তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় অভিভাবকরাও। তাঁদের অভিযোগ, এভাবে খামখেয়ালী কাজের কারণে হাজার হাজার পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যেতে বসেছে।
এদিকে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন যে, উপাচার্য সুপ্রিম কোর্টকেও মানছেন না। শীর্ষ আদালত ওনাকে এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার পরামর্শ দিয়েছে, কিন্তু উনি তা না করে সুপ্রিম আদেশ অমান্য করছেন। ব্রাত্যবাবু বলেন, এভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে তালাচাবি লাগিয়ে কাজকর্ম বন্ধ করে দেওয়া মেনে নেওয়া যায়না। উনি তুঘলকি কাণ্ড করছেন। আমরা আইনি পরামর্শ নেব, কী করা যেতে পারে, দেখব।