বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে ভারতের অর্থনীতি (Indian Economy) দ্রুতহারে বাড়ছে কিন্তু আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কগুলি ভারতীয় ধনীদের ঋণ হিসেবে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা ভারতীয় গ্রাহকদের তাঁদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার জন্যও অনুরোধ করছে। এর কারণ হল, সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কগুলির অধিকাংশ ব্যাঙ্ক বিদেশি গ্রাহকদের জন্য মিনিমাম ব্যালেন্সের পরিমাণ বাড়িয়েছে। এছাড়াও, RBI (Reserve Bank Of India) বিদেশে ইনঅ্যাক্টিভ ফান্ড রাখার বিরুদ্ধেও কঠোর হয়েছে। আর এইসব কারণেই আন্তর্জাতিক ব্যাঙ্কগুলি ভারতীয়দের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে।
গত ২ মাসে ব্রিটেনের দু’টি বড় ব্যাঙ্ক সহ সুইজারল্যান্ডের একটি ব্যাঙ্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর একটি বড় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বেশ কিছুজন ভারতীয়ের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। ইতিমধ্যেই সার্ভিস প্রোভাইডার ও ট্যাক্স প্র্যাকটিশনার্স এই তথ্য জানিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিরা RBI-এর লিবারলাইজড রেমিট্যান্স স্কিমের (LRS) অধীনে বিদেশে ফান্ড ট্রান্সফার করে অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এই স্কিমের অধীনে, এক বছরে বিদেশে ২,৫০,০০০ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
এদিকে, কয়েকটি বড় বিদেশি ব্যাঙ্ক মিনিমাম ব্যালেন্স বাড়িয়ে ১০ লক্ষ ডলার করেছে। কিন্তু LRS-এর সীমার কারণে ভারতীয়রা বিদেশে খুব বেশি টাকা পাঠাতে পারছেন না। এই কারণে বিদেশি ব্যাঙ্কগুলো তাঁদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে। সম্প্রতি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর একটি ব্যাঙ্ক একাধিক ভারতীয়র অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে এবং বাকি টাকার জন্য তাদের ড্রাফ্ট দিয়েছে। গ্রাহকদের জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে যে, বিদেশে তাঁদের অন্য কোথাও অ্যাকাউন্ট থাকলে সেগুলিতে অর্থ স্থানান্তর করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে মিলবে স্বস্তি, ১০ টাকা পর্যন্ত কমতে পারে পেট্রোল-ডিজেলের দাম! সামনে এল বড় খবর
কেন বন্ধ করা হচ্ছে অ্যাকাউন্ট: সিএ ফার্ম জয়ন্তীলাল ঠক্কর অ্যান্ড কোম্পানি জানিয়েছে, বিদেশি ব্যাঙ্কের ফি বাবদ আয় কমেছে। এটি সেই ভারতীয়দের অসুবিধা বাড়িয়েছে যাঁদের বিদেশে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যাঁরা এই বিষয়ে ইমেল পাচ্ছেন তাঁদের অবিলম্বে ফান্ড পাঠাতে হবে। SBI-এর নিয়ম অনুসারে, বিদেশি অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা ফান্ড ১৮০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগ করা বা ফিরিয়ে আনতে হবে। সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাঙ্ক সম্প্রতি ভারতীয় গ্রাহকদের এই ধরণের ফান্ড বিনিয়োগ করতে বলেছে।
এই প্রসঙ্গে ল ফার্ম খৈতান অ্যান্ড কোম্পানির পার্টনার মইন লাধা জানিয়েছেন, আরও বেশি সংখ্যক ব্যাঙ্ক স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে তারা মিনিমাম ব্যালেন্স আছে এমন অ্যাকাউন্টগুলি মেনটেন করতে চায় না। এদিকে, ন্যূনতম বিনিয়োগের সীমাও অনেক বেশি হওয়ায় কিছু ক্ষেত্রে ব্যালেন্স বিনিয়োগ করাও কঠিন। LRS-এর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, আনলিস্টেড ডেট সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের অনুমতি নেই। এমতাবস্থায়, অনেকেই কোনো ঝুঁকি নিতে চান না। তাই, বিদেশি অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকা টাকা ফেরত আনছেন। তাঁদের আশঙ্কা, RBI এতে পেনাল্টি বসাতে পারে। এর পাশাপাশি, ইডির নোটিশের ভয়ও তাঁদের চিন্তায় রাখছে।