বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে আক্রান্ত খোদ তদন্তকারীরা। এক নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলা। শুক্রবার সকালে রেশন দুর্নীতি মামলায় (Ration Scam) তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বাড়িতে ইডির (Enforcement Directorates) অভিযান ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 parganas) সন্দেশখালি। তৃণমূল নেতার অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ছাড় পায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান সহ সংবাদমাধ্যমও। রাজ্যের কোনও মন্ত্রী নন তিনি, সামান্য এক তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। আর তার বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে রক্তারক্তি অবস্থা।
শুধুই যে আক্রান্ত তেমনটা নয়, মেরে ইডি অধিকারীদের মাথা ফাটিয়ে দিল শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। মার খেয়ে কোনও রকমে প্রাণ হাতে করে এলাকা ছাড়লেন ইডি আধিকারিক ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। লজ্জাজনক এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে।
গত বছর থেকে দুর্নীতির দায়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বহু তাবড় তাবড় নেতা থেকে শুরু করে দুই মন্ত্রী। গারদবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিক। আর শুধু গ্রেফতারি কেন, শেষ ১.৫ বছর ধরে ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র থেকে শুরু করে তৃণমূলের একাধিক হেভিওয়েটদের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি-সিবিআই।
যেখানে এই সকল বড় বড় মন্ত্রী এবং বিধায়ক অথবা অন্য কোন নেতাদের বাড়িতে তল্লাশি বা কাউকে গ্রেফতারির সময় পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয়নি, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সামান্য একজন তৃণমূল নেতার বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে রীতিমতো প্রাণ ভয়ে পালাতে হল তদন্তকারীদের? স্বাভাবিকভাবেই এখন একটাই প্রশ্ন সামনে আসছে যে কে এই শাহজাহান শেখ?
আরও পড়ুন: ‘অভিষেক এসেছিলেন…’, ‘ওকে বলবো দোষ স্বীকার করে চলে আয়, ডাল ভাত খা’, কাকুকে অনুরোধ তার দাদার
এই শাহজাহানের উত্থান বাম জামানার শেষ দিকে। কাঠ, গরু পাচার সহ মানুষ পাচারেরও অভিযোগে অভিযুক্ত শাহজাহান। বাম জামানায় বিধায়ক অনন্ত রায়ের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। এরপর ২০১১ সালে নয়া সরকার ক্ষমতায় আসতেই মাথার ওপর পাহাড় ভেঙে পড়ে শাহজাহানের। পরে ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগদান। জানা যায় জ্যোতিপ্ৰিয় মল্লিকের হাত ধরেই জোড়াফুলে ফোটেন শাহজাহান। পদও পেয়ে যান খুব দ্রুতই। বর্তমানে জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী কর্মাধ্যক্ষ পদে রয়েছেন তিনি। কান পাতলেই শোনা যায় তার ডাকে সন্দেশখালি এলাকায় বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খায়। আর তৃণমূলের সেই দাপুটে নেতাই এবার ইডির স্ক্যানারে।