বাংলাহান্ট ডেস্ক : ভারতীয় অর্থনীতিবিদ যিনি কল্যাণ অর্থনীতি এবং সামাজিক পছন্দ তত্ত্বে অবদানের জন্য এবং সমাজের দরিদ্রতম সদস্যদের সমস্যায় তার আগ্রহের জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এবার সেই অর্থনীতিবিদকেই কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস।
তিনি বলেন কবিগুরুর সম্পত্তি নেবেন যদি তিনি ভেবে থাকেন, তাহলে সেটা নির্লজ্জতা ও অসভ্যতামি। এমনকি এখানেই থেমে না থেকে তিনি আরো বলেন, ‘ওঁর শুরু থেকেই সব মিথ্যা। অর্থনীতিতে কোনওদিন নোবেল দেওয়া হয় না। ওটা ব্যাঙ্ক অব সুইডেন দিয়েছিল। সেটাকে উনি নোবেল বলে চালাচ্ছেন। ভারতবর্ষে তাঁর কী অবদান আছে? একেবারে জিরো! উনি যদি মনে করেন গুরুদেবের সম্পত্তি নেবেন তা নির্লজ্জতা, অসভ্যতামি।’
আরোও পড়ুন : বালুর হাত ধরেই হাতেখড়ি; এলাকার ত্রাস শঙ্কর আঢ্যর উত্থানের কাহিনী যেন সিনেমা! শুনলে চমকে উঠবেন
শনিবার সিউড়ি জেলা আদালতের বিচারক সুদেষ্ণা দে চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে বিশ্বভারতী ও অমর্ত্য সেনের জমি বিবাদ মামলার শুনানি ছিল। এদিন দু’পক্ষের সওয়াল–জবাব চলে। বিচারক পরবর্তী শুনানির জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। কিন্তু রায় ঘোষণার আগেই এভাবে অমর্ত্য সেনকে আক্রমণ করলেন বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাস।
আরোও পড়ুন : নজরে শিলিগুড়ি, ভুটানের পিঠে ছুরি মেরে গ্রামে দখল চীনের! সমস্যা বাড়ল ভারতের
সুচরিতা বিশ্বাসের এই কটুক্তির পর বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সঞ্জয়কুমার মল্লিক বলেন, ‘অমর্ত্য সেনকে অপমান করার কোনও নির্দেশ আমি দিইনি। আর আমার সঙ্গে আইনজীবীর সরাসরি আজ পর্যন্ত কোনও কথা হয়নি।’ উল্লেখ্য ,অমর্ত্য সেনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সীমানাবর্তী জমি নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত।
বিশ্বভারতীর তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, মোট ১.২৫ একর জমি লিজ দেওয়া হয় অমর্ত্য সেনের প্রয়াত বাবা আশুতোষ সেনকে। কিন্তু ১৩ ডেসিমেল জমি অমর্ত্য সেন ‘জবরদখল’ করে রয়েছেন। যা অমর্ত্য সেনের নামে মিউটেশন করা আছে বলে জানিয়েছেন অমর্ত্য সেনের আইনজীবী।
অন্যদিকে বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাসের কটুক্তির মন্তব্যে অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি শুধু আদালতে দাঁড়িয়ে জজসাহেবকে বললাম, অমর্ত্য সেনের অবদান এভাবে বলে শেষ করা যাবে না। যদি সহজ উদাহরণও দিই তো আজকের দিনের মিড–ডে মিল ভাবনার কথা বলা দরকার।’
অর্থনীতিবিদ নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন এর বিরুদ্ধে বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাসের কটুক্তির পরেই বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সহ–সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘এমন মন্তব্য নিয়ে কথা বলতেও রুচিতে বাধে। বাঙালি যে কাঁকড়ার জাত সেটা বোঝা যাচ্ছে। না হলে এই আইকন বাঙালিকে নিয়ে এক বাঙালি আইনজীবী এমন মন্তব্য করেন কী করে?’