বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রেশন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলায় প্রথমে বালু আর তারপর তার সূত্র ধরে সদ্য গ্রেফতার হয়েছেন জ্যোতিপ্ৰিয় (Jyotipriya Mallick) ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য (Shankar Adhya) ওরফে ‘ডাকু’। তৃণমূল নেতা তথা উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শঙ্কর আঢ্যর ঠিকানা বর্তমানে ইডি হেফাজত। আর এবার তদন্তকারীদের কড়া প্রশ্নের মুখে তিনি। জ্যোতিপ্রিয় হয়ে কত টাকা লেনদেন করেছেন?’ ইডির এই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুললেন শঙ্কর। ঠিক কী বললেন তিনি?
রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্ৰিয়র সাথে আর্থিক লেনদেনের প্রশ্ন তুলতেই ইডিকে পাল্টা প্রশ্ন করে ধৃত তৃণমূল নেতা বলেন, হেফাজতে থাকাকালীন জ্যোতিপ্রিয় কী ভাবে চিঠি লিখলেন, চিঠি লেখার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ-কলমই বা কোথা থেকে পেলেন মন্ত্রী, প্রশ্ন তুলেছেন। ইডি জেরায় ফের নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এদিন ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখ খোলেন শঙ্কর। জ্যোতিপ্ৰিয়র সাথে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শঙ্কর বলেন, ‘‘আমরা কিছুই জানি না। এক পয়সাও নিইনি। এটা অভিযোগ মাত্র। এর স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ নেই।’’
তিনি আরও বলেন, “এর সাথে আমার কোনও যোগ নেই, আমি ডিসট্রিবিউটরও নই। খাদ্য দুর্নীতির সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।’’ পাশাপাশি প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘হেফাজতে থাকাকালীন উনি (জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক) কী ভাবে কাগজ-কলম পেলেন সেটা খতিয়ে দেখা হলেই সত্যিটা বোঝা যাবে।’’
প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি টানা ১৭ ঘণ্টা তল্লাশির পর মাঝ রাতে গ্রেফতার করা হয় শঙ্কর আঢ্যকে। সেই সময় থেকেই তার স্ত্রী দাবি করতে থাকেন, মধ্যরাতে তাদের নাকি একটি কাগজ দেখানো হয়েছে। সেই কাগজ দেখিয়ে বলা হয়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Minister Jyotipriya Mallick) তার নাম বলেছেন। এরপর থেকেই প্রশ্ন উঠতে থাকে যে কি এমন ছিল সেই কাগজে!
আরও পড়ুন: চুপ থাকার নিদান দিয়েছিলেন মমতা-অভিষেক! ‘প্রতিজ্ঞা’ ভঙ্গ করে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মুখ খুললেন হুমায়ুন
এরই মধ্যে আদালতে ইডি জানায় হাসপাতালে থাকাকালীন চিঠির মাধ্যমেই নাকি মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন জ্যোতিপ্ৰিয়। কেন্দ্রীয় সংস্থার দাবি, কিছুদিন আগে যেদিন আদালতের নির্দেশে হাসপাতালে জ্যোতিপ্রিয়ের কেবিন থেকে সিসিটিভি ফুটেজ তুলে নেওয়া হয়, তার পরই তার সঙ্গে মন্ত্রী কন্যা প্ৰিয়দর্শনী দেখা করতে যায়। তার কাছে থেকেই জ্যোতিপ্রিয়র লেখা এক চিঠি উদ্ধার হয়।
ইডি তরফে সেই চিঠি তুলে দাবি করা হয় চিঠিতে কার কাছে পাওনা কত, কাকে কত টাকা দিতে হবে, সেই সব কিছুর উল্লেখ ছিল। সেই চিঠি থেকেই শঙ্করের নাম সামনে যে বলে আদালতে জানায় ইডি। তদন্তকারীরা আরও জানান ইতিমধ্যেই ইডির জেরায় চিঠি লেখার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন ধৃত মন্ত্রী। যদিও প্রথম থেকেই এসবের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করে এসেছেন শঙ্কর আঢ্য। ইডি হেফাজতের মেয়াদ শেষে আজ ধৃত শঙ্করকে আদালতে পেশ করা হবে।