বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নতুন বছরেও মেলেনি কেন্দ্রীয় হারে ডিএ। সেই ক্ষোভে ফুঁসছে রাজ্যের সরকারি কর্মীরা (State Government Employees)। কাঙ্খিত ডিএ (Dearness Allowance) না মেলায় এবার আরও জোরদার আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সরকারি কর্মীরা। তবে কিসের কি! এবার মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তায় রীতিমতো ঘুম উড়ল সরকারি কর্মীদের। এখন কাজে ফাঁকি দিলেই সোজাসুজি পদক্ষেপ। সরকারি কর্মচারীরা কাজে ফাঁকি দিলে আর কোনওভাবেই বরদাস্ত করবেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। (Mamata Banerjee)। গত বুধবার নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে থেকে স্পষ্ট এই কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাদের সরকারের যে সার্ভিস রুল রয়েছে তা কঠোর ভাবে বাস্তবায়িত করার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। নিয়ম অনুযায়ী সরকারি কর্মচারীরা পরিষেবা দিতে একদিন দেরি করলে, বা কোনও সরকারি কর্মচারীর জন্য সাধারণ মানুষ পরিষেবা পেতে এক দিন দেরি হলে সেই কর্মীর বেতন থেকে ২৫০টাকা হবে। এতদিন কার্যকর না করলেও এবার এই নিয়ম চালু করার জন্য শীর্ষ আমলাদের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যের সাধারণ মানুষকে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়াটাই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনওভাবে কোনও সরকারি কর্মচারীর ডিউটিতে গাফিলতি নজরে তৎক্ষণাৎ অ্যাকশন নেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। প্রসঙ্গত, ছুটি থেকে শুরু করে পদন্নতি, সর্বদাই নিজের কর্মীদের কথা সবার আগে ভাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সরকারি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সরকার, তবে কোনওভাবেই যাতে সাধারণ মানুষ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত না থাকে সেই খেয়াল রাখতেই এবার কড়া হাতে ব্যবস্থা নিলেন রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধি করেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কর্মচারীদের জন্য আরও ৪ শতাংশ ডিএ (DA) ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য জানিয়েছে, ১ জানুয়ারি থেকেই বর্ধিতহারে ডিএ পাবেন রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগীরা। আগে ৬ শতাংশ হারে ডিএ পেতেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। সম্প্রীতি ৪ শতাংশ বেড়ে তার পরিমাণ হয়েছে ১০ শতাংশ। যার সুবিধা পাবেন রাজ্যের ১৪ লক্ষ সরকারি কর্মী ও পেনশনভোগী।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় খুশি হননি সরকারি কর্মীদের অধিকাংশ। বহুদিন ধরেই কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন তারা। বর্তমানে ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছেন কেন্দ্রের কর্মচারীরা। নতুন বছরের শুরুর দিকে ফের তা বৃদ্ধি পেলে কেন্দ্রীয় কর্মচারীদের ভাতার পরিমাণ ৫০% ছাড়িয়ে যেতে পারে। এই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৪% ঘোষণার পরেও রীতিমতো অসন্তোষের সুর রাজ্য সরকারি কর্মীদের কণ্ঠে।
এই কিছুদিন আগেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারি হারে মহার্ঘ ভাতা না পেলে তারা লাগাতার কর্মবিরতিতে নামবেন। মুখ্যমন্ত্রী এই বিষয়ে মুখ না খুললেও সরকারি কর্মচারীদের হুঁশিয়ারির পরই কড়া ব্যবস্থার কথা বললেন।
ওদিকে ২০ জানুয়ারি থেকে সমস্যার সমাধান নামে রাজ্য সরকারের নতুন প্রকল্প শুরু হচ্ছে। চলবে ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে দরকার পড়লে সরকারি কর্মচারীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করার কথাও বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর সাফ বার্তা, প্রয়োজনে শনি-রবিবারও অফিস করতে হবে সরকারি কর্মীদের। জনসংযোগ কর্মসূচি শুরুর আগে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও সমস্ত দফতরে প্রধান সচিবদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন: হাতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা! আজ ফের বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের ৭ জেলায়, কখন থেকে শুরু? আবহাওয়ার খবর
শুক্রবার যাতে কোনও সরকারি কর্মী সময় শেষ হওয়ার আগেই বাড়ি না চলে যায়। কাজে গাফিলতি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সেরম মনে হলে প্রয়োজনে সররকারি কর্মীদের বরখাস্ত করতেও দুবার ভাববেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকে থেকে মুখ্যমন্ত্রী এমনটাই মন্তব্য করেন বলে জানা গিয়েছে।