বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের একবার অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। ফেরার শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা। তার কুকর্মের ঝাঁপি খুলে ঝাঁটা, লাঠি হাতে রাস্তায় নেমে পড়েছেন গ্রামের হাজার হাজার মহিলা। অভিযোগ একটা নয়, অভিযোগ একাধিক। গ্রামবাসীর কথায়, হেন কোনও ঘৃণ্য কাজ নেই যা শাহজাহান এবং তার দলবল করেনি। গ্রামের মহিলারা জানিয়েছেন, গুণ্ডা শাহজাহান এবং তার দলবলের অত্যাচারে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে তাদের। আর তাই আজ অসুর দমনে রাস্তায় নেমেছেন তারা।
জোরজবরদস্তি জমি দখল, তোলাবাজি, চুরি, ডাকাতির অভিযোগ তো ছিলই। তবে এবার যা সামনে এল তা শুনলে গায়ের রোম খাড়া হয়ে যেতে বাধ্য। গরু, ছাগলের মত হিন্দু বাড়ির মেয়ে বৌ-দের নিয়েও নাকি সওদা করত তৃণমূলের গুণ্ডা শেখ শাহজাহান এবং তার দলবল। আর এই কথা জানাচ্ছে সন্দেশখালির মহিলারাই। এইদিন এক সাক্ষাৎকারে গ্রামের এক মহিলা বলেন, ‘ বাড়ির মেয়েদের কোনও সম্মান দেয়নি। মেয়েদের শেষ করে ফেঁলেছে। রাত সাড়ে দশটার সময়েও মেয়েদেরকে উঠতে আনত পার্টি অফিসে। আজ আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।’
সন্দেশখালির মহিলারা আজ এক জোট। সমবেত হয়ে তারা জানাচ্ছে তাদের দুঃখ দুর্দশার কথা। ক্যামেরার সামনে বলছেন, কীভাবে বাড়ি বাড়ি ঢুকে ‘মেয়ে-বৌ’ বাছাই করতে আসত শাহজাহানের গুণ্ডারা। কোনও মেয়ে নতুন বৌ হয়ে এলে তার স্বামীকে হুকুম করা হত যাতে তাকে পার্টি অফিসে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়। দিনের পর দিন পার্টি অফিসে চলত শোষণ। গ্রামের এক মহিলার কথায়, ‘বাড়ির বৌদের রাতের পর রাত তারা আটকে রাখে। যতদিন তাদের মন ভরবে ততদিন রেহাই নেই।’
আরও পড়ুন : Big Breaking, ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত মিঠুন? গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে ভর্তি হলেন হাসপাতালে
অপর এক মহিলা বলেন, ‘রাত বিরেতে আসত। জোর জবরদস্তি তুলে নিয়ে যেত। সারা রাত অত্যাচারের পর ভোরবেলা ছেড়ে দিত।’ এইসব শুনতে অনেকের কাছে অবাস্তব গালগল্প মনে হলেও সন্দেশখালির মহিলাদের কাছে এটাই বাস্তব। বাকি দেশের মহিলারা যখন দিনশেষে নিশ্চিন্তে ঘুমের অপেক্ষা করতেন সেখানেই সন্দেশখালির মহিলারা আতঙ্কে থাকতেন এই বুঝি তাকে কেউ তুলে নিয়ে গেল। আর তাই তো স্থানীয় থানা, পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে। প্রকাশ্যেই বলছেন গ্রামের ‘গুন্ডাদের’ নাম।
আরও পড়ুন : অত্যচারের সীমা ছাড়িয়েছে, ‘পুলিশকে শাঁখা-চুড়ি পরাব আজ’, হুঙ্কার সন্দেশখালির মহিলাদের
এক মহিলা প্রশ্ন তুলেছেন, ‘আমির গাজির নাম কেন সামনে আসছে না? ও তো শেখ শাহজাহানের মূল হর্তাকর্তা। দেবাশিস রয়েছে, লাল্টু রয়েছে, ওরা কোথায়? কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না?’ বারে বারে উঠে আসছে শিবু হাজরার নাম। বয়স্ক এক মহিলা বলেন, ‘কেবল শেখ শাহজাহানই নয়, লাল্টু বোস, উপপ্রধান পিন্টু বোস, আমির গাজি, রঞ্জু এরকম কিছু লোক রয়েছে। শিবু হাঁসদা, উত্তম সর্দার সব মিলে আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়েই দিয়েছে। বাইরে থেকে লোক ঢোকায়।’ সমবেত কণ্ঠে তাদের প্রশ্ন, ‘এতদিন পুলিশ প্রশাসন কোথায় ছিল?’
আরও পড়ুন : মোদীর চরিত্রে বড় সারপ্রাইজ দিলেন ‘রাম’ অরুণ গোভিল! শীঘ্রই মুক্তি পাচ্ছে দেশ কাঁপানো আরও এক মুভি
এসবের মাঝে যে প্রশ্নটা সবচেয়ে বেশি ঘুরছে তা হল রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরা কোথায়? নেটমাধ্যমে মানুষ জিজ্ঞেস করছে, ‘হাথরসের ঘটনায় বাংলার বুদ্ধিজীবীদের কলম চলে অথচ বাংলার সন্দেশখালির ঘটনা তারা দেখতে পাননা। প্রতিদিন প্রতি রাতে গ্রামের মা বোনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে, তাদের শোষণ চলছে। বেঁচে থেকেও নরকের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে সন্দেশখালির মহিলারা। এই বেলা বুদ্ধিজীবীদের মুখে ‘রা’ নেই কেন?’ উত্তর নেই বাংলার তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের কাছে। আর তাই তো, পুলিশ প্রশাসন, আইন সবকিছুর উর্ধ্বে গিয়ে সন্দেশখালির আদিবাসী মহিলারা আজ রণংদেহি।