বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রায় দুমাসের অপেক্ষা, টানটান উত্তেজনার পর অবশেষে পুলিশের জালে সন্দেশখালির (Sandeshkhali) বাঘ। ইডি পেটানোর ঘটনার ৫৫ দিন পর অবশেষে গ্রেফতার তৃণমূলের শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাত্রিবেলা গ্রেফতার হয়েছেন শাহজাহান। মিনাখাঁর বামনপুকুর বাজার এলাকায় খ্রিস্টান পাড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এই শাহজাহানের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে সন্দেশখালিবাসীর। Ed-র উপর হামলার ঘটনাতেই শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এডিজি দক্ষিণবঙ্গ সুপ্রতীম সরকার। ওদিকে শাহজাহানকে ইডি নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য পুলিশ ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বিরুদ্ধে ১১টি ধারায় মামলা রুজু করেছে।
শাহজাহানের সঙ্গী সন্দেশখালির শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে ধর্ষণ বা গণধর্ষণের ধারা যুক্ত করা হলেও শাহজাহানের বিরুদ্ধে সেই ধারা নেই। রয়েছে মানবপাচার ও দেহব্যবসার মতো অভিযোগ। জামিন অযোগ্য ধারাও রয়েছে। ন্যাজাট থানা শাহজাহানের বিরুদ্ধে ১৪৭/১৪৮/১৪৯/৩৪১/১৮৬/৩৫৩/৩২৩/৪২৭/৩৭০/৫০৬/৩৪- মোট ১১ টি জামিন অযোগ্য ধারায় মামলার রুজু করেছে।
বৃহস্পতিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে শাহজাহানের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত দিয়েছেন বিচারক। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭ ধারা অনুযায়ী, অশান্তি ছড়ানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা হতে পারে অভিযুক্তর। কিংবা দুবছরের জন্য জেল হেফাজত হতে পারে। অথবা জেল ও জরিমানা দুই-ই হতে পারে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৮ ধারা অনুযায়ী, ধারালো কোনও অস্ত্র বা জিনিস নিজের কাছে রাখলে বা কোনও ধারালো জিনিস যা অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, যা দিয়ে কাউকে হত্যা করা যায়। দোষ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ তিন বছরের জেল হেফাজত হতে পারে। জরিমানাও হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৯ ধারা অনুযায়ী, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অবৈধ জমায়েতের অংশ হওয়ার ধারা যুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাহজাহানের গ্রেফতারিতে মিষ্টিমুখ, আবির খেলা, সন্দেশখালিবাসীর কণ্ঠে আজ ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৮৬ ধারা অনুযায়ী, সরকারি আধিকারিককে তার কাজে বাধা প্রদানের অভিযোগে সর্বোচ্চ তিন মাসের জেল হতে পারে। অথবা সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা জরিমানাও হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারা অনুযায়ী, স্বেচ্ছায় কাউকে আঘাত করলে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত জেল হেফাজত হতে পারে। অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানাও হতে পারে। আবার দুই-ই হতে পারে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪১ ধারা অনুযায়ী, অবৈধভাবে বাধা দিলে একমাস সময়ের জন্য জেল এবং ৫০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারা অনুযায়ী যদিও কোনো ব্যক্তি অন্যায়ভাবে অন্য কোনও ব্যক্তিকে তিনদিন বা তার বেশি সময়ের জন্য আটকে রাখে, তাহলে তার দুই বছরের জন্য জেল পর্যন্ত হতে পারে। জরিমানাও হতে পারে। অথবা দুই-ই হতে পারে।
ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭০ ধারা অনুযায়ী, নাবালক-নাবালিকাদের পাচার এবং জোর করে দেহব্যবসায় লিপ্ত করার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ৭ বছরের জেল হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২৭ ধারা অনুযায়ী, পঞ্চাশ টাকা বা তার বেশি পরিমাণের ক্ষতি করলে, সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। অথবা জরিমানা হতে পারে বা উভয়ই হতে পারে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারা অনুযায়ী, ভয় দেখানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ২ বছরের জেল ও জরিমানা হতে পারে।