বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বৃহস্পতিবার রাত থেকে কুণাল নামে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। একের পর এক বিস্ফোরক পোস্ট, তারপরই ইস্তফা। শুক্রবার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র পদ থেকে শুক্রবার ইস্তফা দিয়েছিলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। শনিবার মুখপাত্র পদে তার ইস্তফা গ্রহণও করেছে দল। তবে এখানেই শেষ নয়। রবিতে আরও এক ধাপ এগিয়ে কুণালকে শোকজ় নোটিস পাঠাতে চলেছে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব (Trinamool Congress)। সূত্রের খবর এমনটাই।
শনিবার সন্ধ্যায় নিজের এক্স হ্যান্ডলে কুণাল লেখেন, ‘‘আমি তৃণমূলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্রের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলাম। খবর পেয়েছি, শুধু মুখপাত্র থেকে ইস্তফার অংশটি গ্রহণ করা হয়েছে। দলের কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে ইস্তফাটিও গ্রহণ করা হোক। আমি ওই পদে থাকব না। আমি শুধুমাত্র সাধারণ কর্মী হিসেবে থাকতে চাই।’’
সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটের আগে কুণাল যেভাবে প্রকাশ্যে দলের প্রবীণ সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Sudip Banerjee) বিরোধীতা করে চলেছেন তা মোটেও ভালো ভাবে নেয়নি দল। দলের একাংশের মতে দলের কারও বিরুদ্ধে কারও ক্ষোভ জন্মাতেই পারে তবে তা এভাবে বলা দল সমর্থন করে না কোনোমতেই।
দলের ভেতরকার কোন্দল দলের মধ্যেই থাকুক, অযথা যেভাবে কুণাল ক্রমাগত সুদীপকে নিশানা করে তোপ দেগে চলেছেন তাতে দলের ভালো কিছু হচ্ছে না বলেই মত দলের নেতাদের। গতকাল ইডি, সিবিআইকে ট্যাগ করে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কুণাল ঘোষ।
ইডির (ED) ডিরেক্টর এবং সিবিআইয়ের (CBI) সদর দফতরকে ট্যাগ করে আজ সকালে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করেন কুণাল ঘোষ। তৃণমূল নেতা লিখেছেন, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Account) এবং তাঁর তরফ থেকে ভুবনেশ্বর অ্যাপোলোকে দেওয়া টাকা নিয়ে তদন্ত হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ‘ওই দিনই বউ আর পরিবারের লোকেদের…’, লাগাতার CID জেরায় শাহজাহানের বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি
কুণাল লেখেন, ‘তিনি যখন হেফাজতে ছিলেন সেই সময় তাঁকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছে কিনা অথবা তাঁর হয়ে হাসপাতালকে টাকা দেওয়া হয়েছে কিনা তা নিয়ে যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত। এটা সত্যি হলে, এর সঙ্গে কয়লা-কেলেঙ্কারির যোগসূত্র থাকতে পারে। এই প্রসঙ্গে আরও তদন্তের স্বার্থে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করা উচিত’।
এখানেই শেষ নয়। এক্স হ্যান্ডেলে তাঁর হুঁশিয়ারি দিয়ে কুণাল বলেন, ‘এজেন্সি যদি এটা এড়িয়ে যেতে চায়, তাহলে এই বিষয়ে তদন্ত চেয়ে আমি নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হব’। কুণালের তোপ, ‘বিজেপিটা তো সুদীপ ব্যানার্জি চালান। সুদীপবাবুর একটু অসুবিধা হচ্ছে যাঁকে দেখতে পারতেন না সে কাউন্সিলর হয়ে গিয়েছে। সে বিজেপিতে জয়েন করেছে বলে একটু অসুবিধা হচ্ছে’।
যদিও যার বিরুদ্ধে এত কিছু সে এখনও মুখে কুলুপ এঁটেই রয়েছেন।এই গোটা পর্বে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কথাও বলেননি। এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি তার থেকে। তার স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। দলের কিছু নেতাদের কথায়, সমস্ত অভিযোগ চুপচাপ হজম করে যাওয়া, কোনও প্রতিবাদ না করাই সুদীপের পায়ের তলার মাটি আরও শক্ত করছে। গোটা পরিস্থিতি উল্টে তার পক্ষে চলে যাচ্ছে।