বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের আবহে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির তালাভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। এই জল গড়িয়েছিল আদালত অবধি। এবার এই মামলাতেই বিরাট নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিশ, জানিয়ে দিল উচ্চ আদালত। হাই কোর্টের এই নির্দেশে রক্ষাকবচ পেল বনগাঁর বিদায়ী সাংসদ তথা বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur) এবং তাঁর পরিবার।
একইসঙ্গে শান্তনুকে মতুয়া মহাসংঘের পাঠানো আগের নোটিশও খারিজ করেছে হাই কোর্ট। বলা হয়েছে, তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পুলিশকে নতুন করে নোটিশ পাঠাতে হবে। তিন দিন তথা ৭২ ঘণ্টা আগে সেই নোটিশ পাঠাতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
এদিকে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির (Matua Thakurbari) মন্দিরের তালাভাঙা, শ্লীলতাহানি, মারধরের অভিযোগে শান্তনুর বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। অন্যদিকে আবার তৃণমূল নেত্রী মমতাবালা ঠাকুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শান্তনুদের তরফ থেকে। তবে অভিযোগ, পুলিশের তরফ থেকে শান্তনু ও তাঁর পিতাকে তলব করা হলেও মমতাবালাকে তলব করা হয়নি। বুধবার মামলার শুনানির সময় এই নিয়ে খানিক উষ্মা প্রকাশ করেন হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত।
আরও পড়ুনঃ সকাল থেকে লাইন বানিয়ে বিক্রি করেছেন চাকরি! ২৬০০০ চাকরি বাতিল হতেই সামনে সেই ‘সৎ রঞ্জন’
FIR-এ নাম না থাকলেও শান্তনুর পিতাকে যেভাবে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, সেই বিষয়টিতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন জাস্টিস সেনগুপ্ত। সেই সঙ্গেই জানান, তাঁদের ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, উচ্চ আদালতের অনুমতি ছাড়া নিম্ন আদালতে রাজ্য চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দিতে পারবে না। আগামী ১০ মে মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।
মতুয়া ঠাকুরবাড়ির মন্দিরের তালাভাঙা এবং মারধরের এই মামলায় হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, পুলিশের তরফ থেকে যদি সকলের অভিযোগের প্রতি সমান গুরুত্ব দেওয়া হতো, তাহলে বিষয়টা এত জটিল হতো না। জবাবে রাজ্যের তরফ থেকে দাবি করা হয়, সেদিন দরজা ভাঙার এবং মারধরের ছবি দ্রুত সকল সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়। CRPF জওয়ানরাও ভাঙচুর চালিয়েছে বলে দাবি করে রাজ্য।
সব শুনে হাই কোর্টের প্রশ্ন, ভাঙচুর করার কোনও ছবি কিংবা ভিডিও পুলিশের কাছে কেন নেই? তাহলে কীসের ভিত্তিতে এত ধারা যুক্ত করল পুলিশ? দু’টো অভিযোগ দায়ের হলেও পুলিশ কীভাবে অনুসন্ধান ছাড়াই FIR দায়ের করল? সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি।