বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগে সংবাদ শিরোনামে বড়সড় জায়গা করে নিয়েছিল যে ইস্যু তা হল নির্বাচনী বন্ড (Electoral Bonds)। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নির্বাচনী বন্ডের সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই দেশজুড়ে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। বন্ড মারফত কোন দলের তহবিলে কত টাকা গিয়েছে সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই লাইমলাইটে উঠে আসে আঞ্চলিক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে সেই চ্যাপ্টার আপাতত বর্তমানে চলছে লোকসভা নির্বাচন। দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণও শেষ। তবে এরই মাঝে ফের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মুখে উঠে এল নির্বাচনী বন্ডের প্রসঙ্গ।
সম্প্রতি দ্বিতীয় দফার ভোটের প্রচারে মেদিনীপুরে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকেই নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে, নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারীকে। পুরোনো স্মৃতি উস্কে নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীর কথা শোনা যায় মমতার গলায়। বলেন, “সেদিন যখন এসেছিলাম আমি, কোথায় ছিলেন পিতা-পুত্র? কেউ কেন দেখতে পাননি তাদের?” এদিকে মমতার এই আক্রমণের পাল্টা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীও।
কারও নাম না নিয়েই শুভেন্দু বলেন, ‘এই মা-ব্যাটা কোথায় ছিল নেতাইয়ে, কোথায় ছিল নন্দীগ্রামে? জানতে চাই। মা-ব্যাটা আলালের দুলাল। হেলিকপ্টার চড়ছেন, ফ্লাইট চড়ছেন। Adidas-র জুতোতে Adidas লেখা তুলে পড়ছেন জানেনা কেউ? এরপরই শুভেন্দুর মুখে উঠে আসে নির্বাচনী বন্ডের প্রসঙ্গ।
ভরা সভায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে তীব্র আক্রমণ করে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘চোরেদের সর্দার। ১৪০০ কোটি টাকা কেবল মাত্র নির্বাচনী বন্ডে চাঁদা নিয়েছে। যার ৬০০ কোটি টাকা ডিয়ার লটারি আর ৪০০ কোটি দিয়েছে আরেক চিটিংবাজ সঞ্জীব গোয়েঙ্কা।’ প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে নির্বাচনী বন্ড থেকে ১,৩৯৭ কোটি টাকা চাঁদা তুলে সকলকে চমকে দিয়েছিল বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আঞ্চলিক দল হয়েও তৃণমূলের চাঁদা-প্রাপ্তির অনুপাত দেখে রীতিমতো থ হয়ে যান সকলে।
কেবলমাত্র ডিয়ার লটারি সংস্থার কাছ থেকেই তৃণমূলের প্রাপ্তির পরিমাণ ছিল ৫৪২ কোটি টাকা। সর্বোচ্চ নির্বাচনী বন্ড ক্রেতা ‘লটারি কিং’ ওরফে সান্তিয়াগো মার্টিনই সবচেয়ে বেশি অনুদান দিয়েছেন দল তৃণমূল কংগ্রেসকে। ওদিকে দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা হিসেবে কলকাতা-ভিত্তিক আরপি-সঞ্জীব গোয়েঙ্কা গ্রুপ অফ কোম্পানি সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সংস্থা থেকে তৃণমূলের ঝুলিতে যাওয়া চাঁদার পরিমাণ ৪৫৯ কোটি। একদিন আগে এই দুই সংস্থার সাথেই তৃণমূলের যোগসাযোগ নিয়ে সুর চড়ান শুভেন্দু।
আরও পড়ুন: সবে বেড়েছে টাকা, ভোট মিটলেই বন্ধ লক্ষীর ভাণ্ডারের ভাতা? সভায় দাঁড়িয়ে যা বললেন অভিষেক…
প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয় এর আগেও এই ইস্যুতে শাসকদলকে একাধিকবার বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা। এর আগে জলপাইগুড়িতে ঝড়ের তাণ্ডবের সময়ে মমতাকে সেখানে তড়িঘড়ি পৌঁছনো নিয়ে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেছিলেন, ‘ওর চার্টার্ড ফ্লাইট আছে, তাই উনি রাতে চলে গিয়েছেন। তৃণমূল তো নির্বাচনী বন্ড থেকে অনেক টাকা পেয়েছে। সঞ্জীব গোয়েঙ্কা ৪০০ কোটি টাকা দিয়েছে। ডিয়ার লটারি দিয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। ভোররাতে, মাঝরাতে যখন খুশি চার্টার্ড ফ্লাইটে ওরা যেতে পারেন।”