বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় বহুদিন জেলবন্দি রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেলেঙ্কারির অভিযোগে জেলেই রয়েছেন শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিকও। আগেই গ্রেফতার হওয়া সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরুর প্রক্রিয়া নিয়ে কঠোর অবস্থান জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এবার সেই মামলাতেই ফের প্রশ্নের মুখে রাজ্যের মুখ্যসচিব (State Chief Secretary)।
বারংবার আদালতের নির্দেশ না মানায় এবার মুখ্যসচিবের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। এদিন এই মামলার শুনানিতে মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকাকে তুলোধনা করে বিচারপতি বলেন, ‘পার্থ মন্ত্রী না থাকলেও তার ক্ষমতা আদালতে বসেই বেশ বুঝতে পারছি।’ বিচারপ্রক্রিয়া শুরু নিয়ে আদালতে রাজ্যের আইনজীবী জানান, ‘আমদের সাত সপ্তাহ সময় লাগবে।’ একথা শুনতেই বিচারপতি বাগচি বলেন, ‘খুব খারাপ। এটা ইচ্ছাকৃত দেরি।’
মুখ্যশচীবের ভূমিকায় বিরক্তি প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন, “এটা কী আপনাদের আদালত অবমাননার কৌশল? আমাদের নির্দেশের অবমাননা হচ্ছে। এই মামলা দ্রুত হওয়ার গুরুত্ব বুঝুন। সিরিয়াস ম্যাটার। আপনি এজি হয়ে যদি না বোঝেন, আদালতের নির্দেশের অবমাননা করেন , তাহলে তা বিচারব্যবস্থার অপমান।”
মুখ্যসচিবকে তুলোধোনা করে বিচারপতি বলেন, ‘এটা কোনও সাধারণ ল্যাথার্জি হতে পারে না। গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় বিশ্বাস থাকে। এভাবে স্টান্ট চলে না।” বিরাট বড় পর্যবেক্ষণ করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, “জানমতাম আপনারা খুব ভালো বন্ধু। আপনার বন্ধুরা আপনাকে রক্ষা করছে। এবার এই মামলায় শেষ দিনেও যদি রাজ্য অনুমোদন না দেয় তাহলেও আর অবাক হব না। এই স্ট্র্যটেজি খুব ভালো বুঝি আমরা।”
বিস্ময় প্রকাশ করে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে বিচারপতি আরও বলেন, ” আপনি প্রভাবশালী ছিলেন। তবে এতটাই প্রভাবশালী যে ক্রিমিনাল প্রক্রিয়ার ওপরে পর্যন্ত প্রভাব বিস্তার করতে পারেন। এটা প্রতিষ্ঠানের ষড়যন্ত্র। মুখ্যসচিবের পেন উঠছে না? এমন অবস্থার কথা কল্পনাও করা যায় না। সবই আমরা বুঝি। গোপনে যখন আপনার বন্ধু আছেন তারাই আপনার জামিনের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন।” পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেন বিচারপতি।
আরও পড়ুন: মহুয়াকে সংসদ থেকে কেন বহিষ্কার করা হয়েছিল? ভোটের মুখে ‘আসল কারণ’ ফাঁস মমতার
আগেই রাজ্যের কাছে নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া সরকারি আধিকারিকদের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করার অনুমোদন চেয়েছিল সিবিআই (CBI)। জানুয়ারি মাসে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে কতদিন সময় লাগবে তা জানতে চেয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল আদালত। তবে আদালতের নির্দেশকে কোনও তোয়াক্কা না করে এখনও সেই বিষয়ে পদক্ষেপ করতে পারেন নি মুখ্যসচিব।