বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এক বা দুই নয়, উঠেছে ১৭ দফা অনিয়মের অভিযোগ। বারংবার এসএসসির কাছে যোগ্য-অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা চেয়েও মেলেনি। শেষমেষ খাঁটি আর ভেজাল পৃথক না করতে পারার জেরে গত সোমবার এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (SSC Recruitment Scam) কলকাতা হাই কোর্টের ( Calcutta High Court) রায়ে বাতিল হয়েছে SSC ২০১৬ সালের গোটা প্যানেল। যার জেরে এক ধাক্কায় চাকরি হারিয়েছেন ২৫৭৫৩ জন। এই নিয়ে যখন উত্তপ্ত পরিস্থিতি তারই মাঝে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট (Primary TET) মামলায় সেই একই সমস্যা সামনে।
শুক্রবার ২০১৪ সালের টেট মামলায় বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার পর্যবেক্ষণ, সিবিআইয়ের রিপোর্টে ওই পরীক্ষা নিয়ে বহু অনিয়মের কথা সামনে এসেছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিজেই টেট-এ উত্তীর্ণ এবং ফেল করা প্রার্থীদের আলাদা করতে ব্যর্থ। সে ক্ষেত্রে ওই পরীক্ষার কি আদৌ বৈধতা রয়েছে? প্রশ্ন বিচারপতির।
এদিন মামলার শুনানিতে একাধিক প্রশ্ন সামনে উঠে আসে। পর্ষদ কি আগে কখনও আদালতে পাশ এবং ফেল করা প্রার্থীদের পৃথক তালিকা জমা দিয়েছে? প্রশ্ন বিচারপতির। সেই তালিকা জমা দেওয়া সম্ভব কি না, সেই বিষয়েও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। জাস্টিস মান্থার পর্যবেক্ষণ, ভুয়ো ওয়েবসাইটে যে সকল প্রার্থীদের নাম ছিল এবং যারা ভুয়ো ই-মেলের ভিত্তিতে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছেন তাদেরকে অযোগ্য বলে ধরা যেতে পারে?
মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, “কারা টেট পাশ করেছিলেন এবং কারা করেননি, তা পর্ষদ বলতে পারছে না। টাই তাদের পৃথক করা যাচ্ছে না। যাদের কাছে উত্তরপত্রের প্রতিলিপি আছে তাদের অবশ্য পাশ-ফেল নিয়ে সন্দেহ থাকার কথা নয়।” প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে প্রার্থীরা ২০১৬, ২০২০ এবং ২০২২ সালে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। তবে ২০১৪ সালের টেট নিয়ে বহু অভিযোগ সামনে আসে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন এই টেটের ওএমআর শিট পাওয়া যাচ্ছে না। পাশাপাশি তার স্ক্যান করা প্রতিলিপি নিয়েও ধন্দ। এদিন এই নিয়েই বিচারতি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ও ওএমআর শিট স্ক্যান করার দায়িত্বে থাকা সংস্থা এস বসুরায় অ্যান্ড কোম্পানির ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। ওই কোম্পানির এক কর্মী কেন মেধাতালিকা পর্ষদের সরকারি ই-মেলে না পাঠিয়ে মানিক ভট্টাচার্যের (তৎকালীন পর্ষদ সভাপতি বর্তমানে জেলবন্দি) ব্যক্তিগত ই-মেলে পাঠিয়েছিলেন? আসল OMR কেন ফেরত চাইল না? উত্তরপত্রই স্ক্যান করা হয়েছিল কি না?
আরও পড়ুন: SSC-র ২৬০০০ চাকরি যাওয়ার মাঝেই গুরুতর অভিযোগ! ফুঁসে উঠলেন বিচারপতি, ফের বাতিল নিয়োগ?
টেট নেওয়ার ক্ষেত্রে কী নিয়ম তৈরি করেছিল পর্ষদ সেই বিষয়েও জানা প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষণে জানান বিচারপতি। এই মামলায় পর্ষদ-সহ সব পক্ষের মতামত জানতে চেয়েছেন বিচারপতি মান্থা। জুন মাসে মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।