গরমে গোদের ওপর বিষফোঁড়া লোডশেডিং! দায়ী কি টোটো? সামনে এল বিদ্যুৎ পর্ষদের গুরুতর অভিযোগ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চলতি বছর রেকর্ড গরম পড়েছে রাজ্যে। যার ফলে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় বঙ্গবাসীর। এরইমাঝে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো অস্বস্তি বাড়াচ্ছে নিয়মিত লোডশেডিং (Loadshedding)। বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রায় প্রত্যেক দিন রাজ্যের একাধিক জেলায় নিয়ম করে লোডশেডিং হওয়ায় ক্ষুব্ধ আমজনতা।

যা নিয়ে বারবার প্রকাশ্যে আসছে ভুরি ভুরি  অভিযোগ। তবে এতদিন লোডশেডিং-এর কারণ হিসেবে শুধুমাত্র দায়ী করা হচ্ছিল দেদার এসি বিক্রির ঘটনাকে। প্রচন্ড গরমের হাত থেকে বাঁচতেই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর একটু বেশিই বিক্রি বেড়েছে এসির। কিন্তু মুশকিল হলো অধিকাংশ মানুষই নতুন এসি কিনলেও ইলেকট্রিক অফিসে তা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সংগ্রহ করছেন না।

যার ফল নিয়ম না মেনেই লোডিং বাড়াতে থাকায় চাপ পড়ছে বিদ্যুৎ সরবরাহের উপর। যার ফলস্বরূপ ঘন ঘন হচ্ছে লোডশেডিং। কিন্তু এবার জানা যাচ্ছে শুধু এসি নয়, এবার এসির সঙ্গী হয়েছে টোটো। যার কারণে রাজ্যে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে লোডশেডিং হচ্ছে প্রত্যেক দিন। এমনিতেই রাস্তাঘাটে আইনি কিংবা বেআইনি সব ধরনের লাগাম ছাড়া টোটো চলার কারণে অহেতুক যানজট তৈরির অভিযোগ রয়েছে অনেক।

আর এই লাগাম ছাড়া টোটো চলাচলের ওপর চেষ্টা করেও আজ পর্যন্ত রাশ টানতে পারেনি রাজ্যের পরিবহন দপ্তর। এসবের মধ্যেই রাজ্যের টোটো চালকদের বিরুদ্ধে উঠলো গুরুতর অভিযোগ। জানা যাচ্ছে  বিদ্যুতের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র ছাড়াই দেদার এসি লাগানোর পাশাপাশি দিনভর টোটো চালানোর পর রাতে গিয়েই এই সমস্ত টোটো চার্জে বসাচ্ছেন অসংখ্য টোটো চালক। যার ফলে ভোল্টেজ ডাউন হয়ে গিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের ওপর ব্যাপক চাপ পড়ছে। আর এই কারণেই বাড়ছে লোডশেডিং-এর মাত্রা।

আরও পড়ুন: ডিপ ফ্রিজও ফেল! কারেন্ট ছাড়াই মিলবে বরফের মত ঠান্ডা পানীয় জল,বাজিমাত এই দেশি রেফ্রিজারেটরের

টোটোর কারণে লোডশেডিং বাড়ার এমনই যুক্তি পেশ করা হয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদের  তরফ থেকে। এমনিতেই হামেশাই অভিযোগ ওঠে রাস্তাঘাটে মানুষের চেয়ে টোটোর পরিমাণ বেশি। তারই মধ্যে সারারাত  সমস্ত টোটো চার্জে বসানোয় টান পড়ছে বিদ্যুৎ সরবরাহে। এবিষয়ে বিদ্যুৎ পর্ষদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুমিত মুখোপাধ্যায় উদাহরণ দিয়ে জানিয়েছেন এই মুহূর্তে সল্টলেক নিউটনের সমস্যা কমলেও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বারাসত, ব্যারাকপুর, হুগলি কিংবা  হাওড়া থেকে লোডশেডিং-এর অভিযোগ উঠছে প্রচুর।

সেই সাথে তিনি জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার মত ছোট জেলাতেও ইতিমধ্যেই ৪৭% লোড বেড়ে গিয়েছে। টোটো চালকদের ডোমেস্টিক রেটেই চার্জ দেওয়ার সুবিধা করে দেওয়ার পরেও এখনও পর্যন্ত বহু টোটো চালক ডোমেস্টিক কানেকশনেই চার্জে বসাচ্ছেন টোটো। তাই  এই সমস্ত ব্যাটারি চার্জ হওয়ার ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খরচ হচ্ছে ডোমেস্টিক রেটে যা কার্যত বা বেআইনি।

Toto 1

শুধু তাই নয় পরিবহন সূত্রে খবর এখনও রাজ্যের এমন অনেক টোটো রয়েছে যার  না আছে কোন রেজিস্ট্রেশন নাম্বার না আছে কোন নম্বর প্লেট। তাছাড়া টোটো চালানোর জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক নয়। যার ফলে টোটোর বাড়বাড়ন্তের জেরে অনেক জায়গাতেই বাড়ছে পথ দুর্ঘটনা। যদিও সম্প্রতি নিষেধাজ্ঞা জারি করে জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়কে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে বর্ধমান শহরেও দিনের বেলায় মেইন রোডে টোটো চলাচল নিষিদ্ধ। তবে এই নিয়ম এখানকার সব জায়গায় চালু নেই।

Anita Dutta
Anita Dutta

অনিতা দত্ত, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৪ বছরের বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশার সাথে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর