‘আর কোনো সময় দেওয়া হবে না কালই…’, ভরা এজলাসে তুমুল ক্ষুব্ধ প্রধান বিচাপতি, এল বিরাট নির্দেশ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রোষের মুখে কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের করা এক মামলায় তুমুল ক্ষুব্ধ প্রধান বিচারপতি। এবছর দীর্ঘ তীব্র তাপপ্রবাহ ভেঙেছে গত ৪০ বছরের রেকর্ড। কিছুদিন আগেই অসহ্য গরমের জেরে টেকা দায় হয়ে উঠছিল। এখন সামান্য কমলেও গরম থেকে পুরোপুরি নিস্তার মেলেনি। উত্তরবঙ্গের তুলনায় দক্ষিণবঙ্গে গরমের তীব্রতা বহু গুনে বেশি। আর এর অন্যতম প্রধান একটি কারণ হল নির্বিচারে গাছ কাটা। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই গরম থেকে বাছতে যখন পরিবেশবিদ থেকে শুরু করে সচেতন নাগরিকরা গাছ লাগানোর পক্ষে সওয়াল করেন। ঠিক উল্টো ভাবে জোকা–বিবাদী বাগ মেট্রো রেল সম্প্রসারণ করার জন্য নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ সামনে আসে।

জোকা–বিবাদী বাগ মেট্রো রেল সম্প্রসারণের কাজে লাগামছাড়া মনোভাব নিয়ে কাটা হচ্ছে গাছ। সবুজকে বাঁচাতে গাছ কাটা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। এবার সেই নিয়ে কলকাতা পুরসভার রিপোর্ট না পেয়ে প্রচণ্ড বিরক্ত কলকাতা হাইকোর্ট।

প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা উঠলে রাজ্য সরকার, সেনাবাহিনী, কেন্দ্রীয় সরকার, রেল বিকাশ নিগম, বন দফতরের পক্ষ থেকে সম্প্রতি হলফনামা জমা পড়ে। আগের শুনানিতে হাইকোর্ট এই সব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য তলব করেছিল। তবে সেখানেই বিপত্তি।

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ হলফনামা চাইলেও কলকাতা পুরসভা হলফনামা জমা দেয়নি। এতেই প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতে হলফনামা জমা দেওয়ার জন্য আরও কিছুটা সময় চায় পুরসভা। তবে আদালত সেই আর্জিতে সায় দেয়নি। হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার তাদের বক্তব্য জানিয়ে দিয়েছে। তাই কলকাতা পুরসভার জন্য তারা আর অপেক্ষা করবে না।

প্রসঙ্গত, মোমিনপুর থেকে ধর্মতলা—মেট্রো রেলপথ নির্মাণের জন্য ময়দান এলাকায় নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ‘পিপল ইউনাইটেড ফর বেটার লিভিং ইন ক্যালকাটা’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ তুলে দায়ের হয় মামলা।

Calcutta High Court

আরও পড়ুন: হাইকোর্টের নয়া নির্দেশিকায় তোলপাড়! বিপাকে লক্ষ লক্ষ সরকারি কর্মচারী

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের বক্তব্য, এই এলাকাজুড়ে মোট ৭০০ গাছ মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ কাটবে এমন তথ্য মিলেছে। সংবাদমাধ্যম থেকেই এই তথ্য পেয়েছেন তারা। প্রায় ২০০ গাছ কাটা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তারা। এর বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয় সেই সংগঠন। জানা গিয়েছে প্রথমে এই কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিলেও পরে তা ফের করার অনুমতি দেয় আদালত। পাশাপাশি গাছ কাটার বিকল্প কেমন করে পূরণ করা হবে সেই বিষয়ে জানতে কলকাতা হাইকোর্ট সব সংস্থার থেকে হলফনামা চায়। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে নানা সংস্থা নিজেদের বক্তব্য জানালেও কলকাতা পুরসভা এখনও জানায়নি। এই নিয়েই ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট। আগামীকাল এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর