হাই কোর্টের এক রায়ে OBC থেকে জেনারেল! ‘ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেল’, কপাল চাপড়াচ্ছেন সকলে!

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) এক রায়ে ওলটপালট হয়ে গিয়েছে পুরো জীবন! এক লহমায় ওবিসি থেকে জেনারেল হয়ে গিয়েছেন প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ! ২০১০ সালের পর থেকে প্রদত্ত সকল ওবিসি সার্টিফিকেট (OBC Certificate) বাতিল করে দেওয়ায় প্রশ্নের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে চাকরিজীবী থেকে শুরু করে প্রচুর পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ। সংরক্ষণের আওতা থেকে বাদ পড়ে যাওয়ার কথা শুনে অনেকেই বলছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল।

হাই কোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি রাজশেখর মান্থা এবং বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চের তরফ থেকে পরিষ্কার জানানো হয়েছে, যারা এই শংসাপত্র ব্যবহার করে ইতিমধ্যেই চাকরি কিংবা অন্যান্য সংরক্ষণ সম্বন্ধিত সুবিধা পেয়ে গিয়েছেন, তাঁদের চিন্তার দরকার নেই। কারণ তাঁদের ওপর এই রায়ের কোনও প্রভাব পড়বে না। চাকরি, প্রোমোশন অথবা ভর্তি বিষয়ক স্থিতাবস্থা বহাল থাকবে। কিন্তু এবার থেকে এই শংসাপত্র বাতিল হিসেবে গণ্য হবে, তা আর ব্যবহার করা যাবে না।

   

হাই কোর্টের তরফ থেকে এমনটা স্পষ্ট জানানো হলেও অনেকের মনেই ভয় চেপে বসেছে! বিনপুর নিবাসী ২৬ বছরের শাহবাজ খান ইংরেজিতে গ্র্যাজুয়েট। গৃহশিক্ষকতা করেন। তিনি বলেন, ‘হাই কোর্টের এই রায়ের ফলে আমি ওবিসি-এ থেকে জেনারেল হয়ে গেলাম। চাকরির পরীক্ষায় আমার মতো অনেক যুবক-যুবতী সংরক্ষণের আওতা থেকে বঞ্চিত হবে। এই রায়ের ফলে আমাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ল’।

আরও পড়ুনঃ তৃণমূল জমানার OBC সার্টিফিকেট বাতিলের দায় বুদ্ধবাবুর? তোলপাড় করা দাবি উপেন বিশ্বাসের

কলেজ পড়ুয়া পিঙ্কি মাহাতো আবার বলেন, ‘আমি ওবিসি-সি ক্যাটাগরির। সার্টিফিকেট বাতিল হয়ে যাওয়ার নানান প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা এবং চাকরিতে সংরক্ষণের আওতা থেকে আমি বাদ পড়ে যান। অবিলম্বে এই সমস্যার সমাধান করা হোক। নাহলে প্রচুর যুবক-যুবতীতে বঞ্চিত হতে হবে’।

এই বিষয়ে ঝাড়গ্রাম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সোরেন বলেন, ‘ভীষণ মর্মান্তিক বিষয়। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের স্বার্থে রাজ্য সরকার ওবিসি-এ ও ওবিসি-বি ক্যাটাগরিতে শংসাপত্র দিয়েছে। তবে এখন তো পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়গুলিকে আরও পিছিয়ে দেওয়া হল। এই রায়ের ফলে ওবিসি-রা কার্যত জেনারেল ক্যাটাগরিভুক্ত হয়ে গেলেন’।

Mamata Banerjee

সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক প্রদীপকুমার সরকার আবার এই প্রসঙ্গে বলেন, এই সরকারের প্রত্যেকটা কাজই ভুলে ভর্তি। তাঁর কথায়, ‘বাম জমানায় দেওয়া সার্টিফিকেট নিয়ে তো কোনও সমস্যা হচ্ছে না। প্রকৃত উপভোক্তাদের শংসাপত্র বদাল থাকুক। পদ্ধতিগত কোনও ত্রুটি যদি থাকে, তা সংশোধন করে যদি দেখা যায় যারা শংসাপত্র পেয়েছেন তাঁরা যোগ্য। তাহলে আমাদের এই বিষয়ে কোনও সমস্যা নেই’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর