বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২০২৪ সালের অর্থবর্ষের জন্য ইনকাম ট্যাক্স রিটার্নের (Income Tax Return) সময় শুরু হয়েছে। যেটির শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ৩১ জুলাই, ২০২৪ পর্যন্ত। এদিকে, কর সংক্রান্ত নিয়মে সম্প্রতি একাধিক পরিবর্তন এসেছে। যেগুলি সম্পর্কে একজন করদাতার অবশ্যই সচেতন হওয়া উচিত। এমতাবস্থায়, আপনি যদি ITR ফাইল করতে উদ্যোগী হন সেক্ষেত্রে পরিবর্তিত কর নিয়মগুলি সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় আপনার ট্যাক্স রিফান্ড আটকে যেতে পারে। বিজনেস টুডে অনুসারে, অল ইন্ডিয়া ITR-এর ডিরেক্টর বিকাশ দাহিয়া জানিয়েছেন যে, নিয়মের পরিবর্তন উপেক্ষা করলে আপনার ট্যাক্স রিফান্ড প্রভাবিত হতে পারে। তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথাও বলেছেন। যা আপনার ITR-কে প্রভাবিত করতে পারে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা ঠিক সেইরকমই ৮ টি বিষয় উপস্থাপিত করছি।
১. ট্যাক্স স্ল্যাব এবং রেট পরিবর্তন: ২০২৪ সালে, সরকার অপশনাল নিউ ট্যাক্স রিজিমের অধীনে নতুন ট্যাক্স স্ল্যাব প্রবর্তন করেছে। যা কোনো ছাড় ছাড়াই কম ট্যাক্সের রেট উপলব্ধ করে। এমতাবস্থায়, আপনি যদি পুরনো ট্যাক্স রিজিম বেছে নেন সেক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন ছাড় দাবি করতে পারেন। এদিকে, নতুন ট্যাক্স ব্যবস্থা প্রক্রিয়াটিকে সরল করে। কিন্তু, অধিকাংশ ডিডাকশন সমাপ্ত করে। তাই, হিসেব অনুযায়ী আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন কোনটি আপনার জন্য বেশি উপকারী?
২. পেনশনভোগীদের জন্য স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন: উল্লেখ্য যে, পেনশনভোগীদের জন্য ৫০,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন শুরু হয়েছে। এটি পেনশন আয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পেনশনভোগীদের নিশ্চিত করা উচিত যে, এই ছাড়টি তাদের ট্যাক্স যোগ্য আয় হ্রাস করার জন্য দাবি করা হয়েছে।
৩. ধারা 80C এবং 80D-র লিমিটের পরিবর্তন: আপনি PPF, NSC এবং জীবন বিমা প্রিমিয়ামে বিনিয়োগ করে ধারা 80C-র অধীনে ১.৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পেতে পারেন। এদিকে, স্বাস্থ্য খাতে ডিজিটাল অর্থপ্রদান এবং সঞ্চয় প্রচারের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যা চিকিৎসা বিমার জন্য ধারা 80D-র অধীনে বর্ধিত সীমাতে প্রযোজ্য। করদাতারা এখন তাঁদের পরিবার এবং পরিবারের বয়স্ক পিতামাতার জন্য স্বাস্থ্য বিমার লক্ষ্যে প্রদত্ত প্রিমিয়ামের জন্য উচ্চ ট্যাক্স ডিডাকশনের দাবি করতে পারেন।
৪. হোম লোনের সুদে উচ্চ ছাড়: প্রথমবার বাড়ির ক্রেতাদের জন্য ধারা 80EEA-এর অধীনে নেওয়া হোম লোনের সুদের জন্য অতিরিক্ত ১.৫ লক্ষ টাকা ছাড় বাড়ানো হয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল নতুন হোম লোন দিয়ে করদাতাদের পর্যাপ্ত ছাড় প্রদান করা।
৫. TDS এবং TCS আপডেট করা হয়েছে: এবার TDS এবং TCS-এর সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। নতুন পরিবর্তনগুলির মধ্যে অ-বেতনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য নতুন TDS হার এবং স্ব-নিযুক্ত এবং ই-কমার্স লেনদেনের জন্য অতিরিক্ত সম্মতির প্রয়োজনীয়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমতাবস্থায়, করদাতাদের তাদের TDS সার্টিফিকেট পর্যালোচনা করা উচিত এবং তাদের ITR-এ উপযুক্ত ক্রেডিট দাবি করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করা উচিত।
৬. ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট এবং আপিল: সরকার হিউম্যান ইন্টারফেস কমাতে এবং স্বচ্ছতা উন্নত করার জন্য ফেসলেস অ্যাসেসমেন্ট এবং আপিল প্রক্রিয়া প্রসারিত করেছে। করদাতাদের এই প্রক্রিয়ার সাথে নিজেদের পরিচিত হওয়া উচিত এবং এটা নিশ্চিত করা উচিত যে সমস্ত নোটিশের জবাব নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে জমা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০১৮-র জম্মু হামলার মাস্টারমাইন্ড! পাকিস্তানের বুকে আততায়ীর গুলিতে নিহত সেই পাক ব্রিগেডিয়ার
৭. ফর্মে পরিবর্তন: ITR ফর্মে অতিরিক্ত তথ্য অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সেটি সংশোধন করা হয়েছে। বৈদেশিক সম্পদ ও আয় এবং বড় লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের জন্য বিশেষভাবে নিয়ম পরিবর্তন করা হয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ বা উল্লেখযোগ্য আর্থিক কার্যকলাপ সহ করদাতাদের জরিমানা এড়াতে বিস্তারিত তথ্য প্রদান করতে হবে।
আরও পড়ুন: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনাই দিল শিক্ষা? এবার ৩ গুণ বেশি লোকো পাইলট নিয়োগ করবে রেল
৮. প্রবীণ নাগরিকদের জন্য স্বস্তি: ৭৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রবীণ নাগরিকদের যাঁদের শুধুমাত্র পেনশন এবং সুদের আয় আছে, তাঁরা ITR ফাইল করা থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে শর্ত রয়েছে যে, ব্যাঙ্ক প্রয়োজনীয় কর ডিডাকশন করবে। এমতাবস্থায়, এটি প্রত্যক্ষ আয়ের উৎস সহ প্রবীণ নাগরিকদের জন্য প্রত্যক্ষভাবে অনেকটা চাপ কমিয়ে দেবে।