বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৩ সালে নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) তদন্ত করার সময় কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে বেরিয়ে আসে কেউটে। পুর নিয়োগ দুর্নীতি (Municipality Recruitment Case) নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য হাতে আসে সিবিআই-ইডির। তারপর থেকেই চলছে কেন্দ্রীয় তদন্ত। আগে এই মামলায় একাধিক পুর আধিকারিকদের পাশাপাশি রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের বাড়িতেও তল্লাশি চালায় এজেন্সি। সামনে আসে নিত্যনতুন নাম।
মঙ্গলবার পুরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) চার্জশিট জমা করে মারাত্মক দাবি সিবিআই এর।
কোভিভকালে অতিমারির সময় এক নোটিসেই রাতারাতি ২৯ জনের নিয়োগ হয় দক্ষিণ দমদম পৌরসভায়। এই নিয়োগ সঠিকভাবে হয়নি বলেই আদালতে দাবি করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এদিন CBI- র পেশ করা চার্জশিটে নাম রয়েছে দক্ষিণ দমদম পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পাঁচু গোপাল রায়ের। এই নতুন নামেই এবার শোরগোল।
পাশাপাশি পুর নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত ‘মিডলম্যান’ অয়ন শীলের নামও রয়েছে চার্জশিটে। তদন্তকারী সংস্থার দাবি একদিনে ২৯ খানা চাকরি কোনোভাবেই নিয়ম মেনে হয়নি। সব নিয়োগ (Recruitment Scam) অবৈধ। পাশাপাশি এর সাথেও টাকার লেনদেন জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে সিবিআই।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেই থেকেই সূত্রপাত। এরপর একে একে গ্রেফতার হন বহু নেতা থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের একাধিক আধিকারিক। প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হন তৃণমূল যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। তাকে জেরা করেই খোঁজ মেলে আরেক নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বর্তমানে দুজনাই জেলবন্দি।
এরপর শান্তনুর সূত্র ধরে সামনে আসে এই প্রোমোটার তথা প্রযোজক অয়ন শীলের নাম। গত বছর মার্চ মাসে টানা ৩৭ ঘণ্টা তার সল্টলেকের অফিসে ম্যারাথন তল্লাশি চালানো হয়। এরপরই ইডির হাতে গ্রেফতার হন অয়ন। তার অফিস বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে একের পর গুচ্ছ গুচ্ছ ওএমআর শিট উদ্ধার হয়। মেলে ২৮ পাতার একটি নথি।
আরও পড়ুন: ৪ ঘণ্টা সময় দিলেন বিচারপতি সিনহা! শুভেন্দুর করা মামলায় বড় নির্দেশ হাইকোর্টের
সিবিআই-এর দাবি, অয়নের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সেই নথিতে রয়েছে একাধিক পুরসভার প্রার্থীতালিকা ও সেই সংক্রান্ত সুপারিশ। মেলে ‘কোড ওয়ার্ড’। নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) তদন্তে নেমে সামনে কেউটের মতো বেরিয়ে আসে পুর নিয়োগ দুর্নীতি। তদন্তকারীদের দাবি ওই নথিতে দক্ষিণ দমদম-সহ বেশ কয়েকটি পুরসভার প্যানেলের তথ্যও ছিল। সেই সূত্র ধরেই উঠে আসে পাঁচু রায়ের নাম।
এদিকে এই প্রসঙ্গে নিজের দোষ কার্যত স্বীকার করে নিয়ে পাঁচুবাবু বলেন, “যখন ওই নিয়োগ হয় তখন আমি চেয়ারম্যান পদে ছিলাম। তাই অন্য কারোর ওপর দোষ দিতে পারব না। আমারই সই রয়েছে। ওই সময় কিছু গরমিল হয়েছে।” আর এই পাঁচুকে নিয়েই এবার নতুন করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।