বাংলা হান্ট ডেস্ক: খাস কলকাতা (Kolkata) শহরে ফের কোটি কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার ঘটনা সামনে এল। মূলত, টাটার (Tata) নাম করে কার্যত ভুয়ো সংস্থা খুলে কলকাতায় (Kolkata) ১৭ কোটি টাকার আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠল ২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাগুইআটি পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। যার ওপর ভিত্তি করে গ্রেফতার করা হয়েছে একজনকে।
কলকাতায় (Kolkata) বড়সড় আর্থিক প্রতারণা:
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গুজরাটের সুরাটে স্থিত “সাই শ্রদ্ধা আউটসোর্সিং প্রাইভেট লিমিটেড”-এর অন্যতম ডিরেক্টর নিখিল কুমার প্রকাশভাই প্যাটেল এবং তাঁর পার্টনার হেমিং কিশোরভাই প্যাটেল পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন যে তাঁরা গুজরাটের সুরাটে একটি কল সেন্টারের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। এমতাবস্থায়, ওই ব্যবসা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৯ সালে তাঁরা দেখা করেন সৌমেন সেনগুপ্ত এবং শুভজিৎ মুখার্জির সাথে। তাঁরা দু’জনেই টাটার সংস্থার সাথে যুক্ত ছিলেন বলে জানানো হয়। পাশাপাশি, শুভজিৎ টাটা গ্লোবাল গ্রুপের টাটা স্টিলের ডিরেক্টর ছিলেন বলেও দাবি করা হয়।
সেই সময়ে নিখিল এবং হেমিং সৌমেন ও শুভজিতের সাথে একটি চুক্তি সম্পন্ন করেন। যেখানে কিছু তথ্য প্রদানের পাশাপাশি ইন্টারন্যাশনাল কলিংয়ের জন্য টাটা গ্লোবাল গ্রুপ থেকে মিনিট কেনার কথা উল্লেখ ছিল। যদিও, সৌমেন ও শুভজিৎ তাঁদের প্রথমে Tata Docomo এবং Tata Tetley Tea-র ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়ার বিষয়ে জানান। এমতাবস্থায়, Tata Tetley Tea-র ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং Tata Docomo-র প্ল্যান কেনার জন্য ধাপে ধাপে সর্বমোট ১৬ কোটি ৯২ লক্ষ ৬ হাজার ৬৮০ টাকা প্রদান করা হয়।
জানা গিয়েছে এই বিপুল অর্থ নগদ এবং চেক মারফত প্রদান করা হয়েছিল। এই লেনদেন সম্পর্কিত ব্যাঙ্কের বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে পুলিশকে। যেখানে দেখা গিয়েছে, ওই অর্থ মূলত সৌমেন সেনগুপ্ত এবং শুভজিৎ মুখার্জির অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছিল। এদিকে, এই লেনদেনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের তরফে অফিসিয়াল মেলের পাশাপাশি কিছু তথ্য প্রদান করা হয় বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুই ধনকুবের মেলালেন হাত! আদানির এই কোম্পানির অংশীদারিত্ব কিনলেন আম্বানি, নাম জানলে অবাক হবেন
যদিও, সেই সময়ে তাঁরা আরও একাধিক জনের সাথে নিখিল এবং হেমিংয়ের পরিচয় করিয়ে দেন। পাশাপাশি এটাও বলা হয় যে ওই সকল ব্যক্তি প্রত্যেকেই টাটার সাথে যুক্ত। এমনকি, তাঁরাও এই ব্যবসায়িক চুক্তির বিষয়ে আলোচনায় ছিলেন। তবে, পরবর্তীকালে দুজনেই বুঝতে পারেন যে তাঁরা বড়সড় আর্থিক প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন। শুধু তাই নয় সৌমেন এবং শুভজিতের তরফে পাঠানো তথ্য এবং মেলগুলি ভুয়ো ছিল বলেও দাবি করা হয়। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে তাঁরা একটি বড় চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বলে পুলিশের কাছে জানিয়েছেন নিখিল এবং হেমিং।
আরও পড়ুন: বর্ষাকালে ভালোবাসেন বেড়াতে? মিস করবেন না ভারতের এই ১১ টি ডেস্টিনেশন, গেলেই পয়সা হবে উশুল
পাশাপাশি, তাঁরা আরও জানিয়েছেন যে, একাধিক বার ঘোরাঘুরির পরে সৌমেন এবং শুভজিতের সাথে বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার চেষ্টা চালানো হলেও ২০১৬ সালের মার্চ মাসে নিখিল এবং হেমিং যখন তাঁদের সাথে কথা বলতে কলকাতায় আসেন তখন অভিযুক্ত দু’জন তাঁদের লাগেজ এবং পাসপোর্ট জোর করে আটকে রাখেন এবং খুন করে দেওয়ার হুমকি দেন। তারপরেও বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলেও অভিযুক্তরা অর্থ ফেরত দিতে চাননি। আর এইভাবেই প্রায় ১৭ কোটি টাকার প্রতারণার সম্মুখীন হয়েছেন নিখিল এবং হেমিং।