বাংলা হান্ট ডেস্ক: মহাকাশে এবার ভাড়া বাড়ির বদলে নিজের বাড়ি বানাতে চলেছে ভারত। হ্যাঁ, প্রথমে এই বিষয়টি পড়ে কিছুটা অবাক হয়ে গেলেও এটা কিন্তু একদমই সত্যি। মূলত, মহাকাশে ভারতের তরফে যে নিজস্ব স্পেস স্টেশন তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে তা আগেই জানিয়েছিল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ISRO (Indian Space Research Organisation)। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও (Narendra Modi) এই বিষয়টি উপস্থাপিত করেছিলেন। তবে, এবার একটি বড় আপডেট সামনে এসেছে। মূলত, ISRO-র তরফে এবার জানিয়ে দেওয়া হলো যে ভারতের স্পেস স্টেশন তৈরি হলে তার সুফল পাবে সমগ্র দুনিয়া। এর কারণ হল, বর্তমানে লোয়ার আর্থ অরবিটে যেমন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন রয়েছে ভারতের স্পেস স্টেশনও ঠিক সেইরকম পজিশনে থাকবে।
স্পেস স্টেশনের জায়গা নির্ধারণ করল ISRO:
যদিও, এর জন্য ISRO-কে কিছু অতিরিক্ত কাঠখড় পোড়াতে হবে। তবে, সমগ্র পৃথিবীর কথা মাথায় রেখে ISRO সেই কঠিন পথেই হাঁটবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আমরা জানি পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরার সময়ে ৬৬.৫ ডিগ্রি কোণে হেলে থাকে। এমতাবস্থায়, ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশন পৃথিবীর চারিদিকে ঘোরার সময়ে হেলে থাকে ৫১.৬ ডিগ্রি কোণে। এদিকে, ISRO-র তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে ভারতের স্পেস স্টেশনও থাকবে প্রায় ৫১.৬ ডিগ্রি কোণেই। এর ফলে বর্তমানে যে রকম বিভিন্ন দেশের মহাকাশ যান হিসেবে কষে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনে পৌঁছয় ঠিক একইভাবে ভারতের স্পেস স্টেশনেও তারা আসতে পারে। কারণ, উভয় ক্ষেত্রেই ইনক্লাইনেশন থাকছে প্রায় এক।
আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল যে, ৫১.৬ ডিগ্রি কোণেই স্পেস স্টেশন হেলে থাকার কারণে সেটি পৃথিবীর ৯০ শতাংশ জায়গার ওপর সঠিকভাবে নজর রাখতে পারবে। যার ফলে প্রত্যক্ষভাবে মিলবে লাভ। অর্থাৎ, সামগ্রিকভাবে দেখতে গেলে ভারতের স্পেস স্টেশন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হবে। শুধু তাই নয়, এই স্পেস স্টেশনের সাথে সমগ্র বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সমস্ত দেশের গ্রাউন্ড স্টেশনগুলির কমিউনিকেশন সিস্টেমেও খুব একটা পরিবর্তন ঘটবে না। এবারে আসি ISRO-র কাঠখড় পোড়ানোর প্রসঙ্গে।
আরও পড়ুন: ভাগ্য পাল্টে দেবে TreasureNFT! ভিজবেন টাকার বৃষ্টিতে, এইভাবে হয়ে যাবেন লাখপতি
বিজ্ঞানীদের মত অনুযায়ী রাশিয়া যখন বৈকানুর কসমোড্রোম থেকে কোনও মহাকাশযান পাঠায় সেক্ষেত্রে বৈকানুরের অক্ষাংশের জন্য এই ৫১.৫ ডিগ্রি ইনক্লাইনেশনে পৌঁছতে কোনও অসুবিধা হয় না। কিন্তু, ভারত থেকে উত্ক্ষেপণের পর স্পেস স্টেশনকে অরবিটে এই নির্দিষ্ট অ্যাঙ্গেলে রাখার বিষয়টি আদৌ সহজ নয়। বরংশ সেক্ষেত্রে, একাধিক জটিল অঙ্ক কষতে হবে এবং অনেকগুলো ম্যানুভার লাগবে। এর পাশাপাশি বৃদ্ধি পাবে জ্বালানির খরচ। যদিও, ISRO এই কঠিন পথেই হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে ভারতীয় মহাকাশচারীরা দীর্ঘসময় ধরে মহাকাশে থাকতেও পারবেন।
আরও পড়ুন: বাড়ি ভাঙতে এলেই ঘটত বিপদ! অবশেষে মাটির নিচ থেকে উঠলেন দেবী, অলৌকিক ঘটনা রাজ্যের এই জেলায়
জানিয়ে রাখি যে, আগামী দিনে মহাকাশ বাণিজ্যে বিপুল লাভের আশা দেখে প্রাইভেট স্পেস স্টেশন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেছে। আর ঠিক সেই সময়েই এই ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে ভারত। বর্তমানে থাকা আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে ২০ টিরও বেশি দেশের ২৫০-রও বেশি মহাকাশচারী সেখানে থেকেছেন। তবে, সংশ্লিষ্ট স্টেশনের যন্ত্রপাতি অনেকটাই পুরনো হয়ে গিয়েছে। যার ফলে সেটিকে এবার নামিয়ে আনার প্রক্রিয়ার দিকে মনোযোগ দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। জানা গিয়েছে, ২০৩১ সালের মধ্যেই স্পেস স্টেশনটিকে ধ্বংস করে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, স্পেস স্টেশনটিকে ডি-অরবিট করার কাজ শুরু হয়ে যাবে ২০২৬ সালেই। এমতাবস্থায়, সামগ্রিক দিক বিচার করে অনেকেই অনুমান করেছেন পরবর্তীকালে ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের অন্যতম বিকল্প হতে চলেছে ভারতীয় স্পেস স্টেশন।