বাংলা হান্ট ডেস্কঃ হাইকোর্টে (Calcutta High Court) গ্রীষ্মকালীন অবকাশের সময়ই রোস্টার পরিবর্তন হয়েছিল বিচারপতিদের। তার এক মাস কাটতে না কাটতেই ফের কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের রোস্টার আংশিক পরিবর্তন করা হয়েছে গত শুক্রবার। তাতে বিচারপতি অমৃতা সিনহার (Justice Amrita Sinha) কাছ থেকে পুলিশের অতিসক্রিয়তা বা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সংক্রান্ত বেশ কিছু মামলা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই চলছে তুমুল চৰ্চা।
জনস্বার্থ মামলার পরই রস্টার বদল হাইকোর্টে (Calcutta High Court)
কিছুদিন আগে যখন হাইকোর্টের মামলাগুলির রুটিন পরিবর্তন করা হয় সেই সময় পুলিশের অতিসক্রিয়তা বা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সংক্রান্ত মামলাগুলির (Police Case) শুনানির দায়িত্ব পান কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) জাস্টিস অমৃতা সিনহা। তবে এবার নতুন রোস্টারে এই সংক্রান্ত মামলাগুলিকে দুটি ভাগে ভাগ করে শুনানির কথা বলা হয়েছে।
বিচারপতি অমৃতা সিনহাকে শুধুমাত্র ২০১৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যেকার মামলাগুলি শোনারই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে সাম্প্রতিক কালে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে সমস্ত মামলা দায়ের হয়েছে সেগুলি থেকে। ওদিকে ওদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পুলিশের অতিসক্রিয়তা বা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানির দায়িত্ব পেয়েছেন বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ। ২০২২ সালের পর থেকে পুলিশের অতিসক্রিয়তা বিষয়ে দায়ের হওয়া মামলাগুলি শুনবেন জাস্টিস ভরদ্বাজ।
হাইকোর্ট সূত্রে জানা গিয়েছে পুলিশের অতি সক্রিয়তা বা নিষ্ক্রিয়তা এই সমস্ত মামলার চাপ বেড়ে যাওয়ায় এই এজলাস বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আবার শোনা যাচ্ছে সম্প্রতি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে ডিভিশন বেঞ্চে উত্তীর্ণ হয়েছেন। এক বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে উত্তীর্ণ হওয়ার কারণেই রোস্টারে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। তার এজলাসে থাকা প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানির দায়িত্ব গিয়েছে। বিচারপতি সিনহার এজলাসে।
এর আগে ১০ জুন থেকে বিচারপতিদের নতুন রোস্টার কার্যকর হয়। তবে তারপরই হাইকোর্টে দায়ের হয়ে মামলা। প্রসঙ্গত, জুন মাসে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। পুলিশ সংক্রান্ত মামলার ক্ষেত্রে বিচারপতি অমৃতা সিনহা নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারী। বিচারপতি নিরপেক্ষ রায় দিতে পারবেন কিনা সেই বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেই মামলাকারী কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন।
জনস্বার্থ মামলায় বলা হয়, বিচারপতির সিনহার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি মামলায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছিল। পরবর্তীতে সেই মামলায় বিচারপতির নামও জড়িয়ে যায়। এই আবহে তার এজলাস থেকে পুলিশ সংক্রান্ত বিচারের দায়িত্ব সরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে আবেদন করা হয়েছিল।
যদিও বিচারপতির স্বামীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করে দেয় সুপ্রিমকোর্ট। একই সঙ্গে বিচারপতি অমৃতা সিনহার নিরপেক্ষতা নিয়ে মামলা করায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির এজলাস এই জনস্বার্থ মামলাকারীর কড়া সমালোচনা করেছিলেন। সেই মামলাও আর শোনেননি বিচারপতি।
আরও পড়ুন: ‘১৫ দিনের মধ্যে সরাতে হবে..,’ হল নিষ্পত্তি, জনস্বার্থ মামলায় বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের
জানা যাচ্ছে বিচারপতি সিনহার স্বামীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে সেই মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা ছিল আগামী সপ্তাহেই। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা। তবে তার আগেই বিচারপতিদের রোস্টার বদলের এই পদক্ষেপ নিয়ে শুরু হয়েছে চৰ্চা। সেই মামলার শুনানির আগেই রোস্টার বদলের সিদ্ধান্ত নিয়ে জোর জল্পনা চলছে আইনজ্ঞ মহলে।