বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত মাসে নিউ টাউনের একটি রেস্তোরাঁয় শ্যুটিং করতে গিয়েছিলেন অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty)। সেখানে পার্কিং নিয়ে রেস্তোরাঁর মালিকের সঙ্গে বচসায় জড়ান তিনি। অভিযোগ ওঠে, রেস্তোরাঁর মালিককে মারধর করার পাশাপাশি রেস্তোরাঁ বন্ধের হুমকি দিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। এমনকি টেকনো সিটি থানার পুলিশও একই হুমকি দিয়েছে বলে দাবি করেন আনিসুল আলম। এবার তিনিই বড় বিপাকে পড়লেন!
সোহম (Soham Chakraborty) কাণ্ডের জেরে ফাঁপরে রেস্তোরাঁর মালিক?
সোহম কাণ্ডের পর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে প্রায় এক মাস। এরপর গত ৮ তারিখ রেস্তোরাঁর নামে স্থানীয় পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের তরফ থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে জমির নথি, নির্মাণের নকশা, চুক্তির অনুলিপি এবং অনুমোদনপত্র সহ বেশ কিছু কাগজপত্র নিয়ে ১০ জুলাই পঞ্চায়েতে দেখা করার কথা বলা হয়। তাহলে কি সোহম কাণ্ডের জেরে পাঠানো হল এই চিঠি? শুরু হয়েছে জল্পনা।
পঞ্চায়েতের দাবি, গার্ডেনরিচ কাণ্ডের পর থেকে এলাকার নানান নির্মাণের কাগজপত্র খতিয়ে দেখার জন্য চিঠি পাঠানো হচ্ছে মালিকদের। সোহমের হাতে প্রহৃত নিউ টাউনের (New Town) ওই রেস্তোরাঁর মালিক আনিসুলকেও তেমনই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এদিকে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে কাগজপত্র নিয়ে ১০ জুলাই দেখা করতে বলা হলেও কলকাতা হাইকোর্টে শুনানি থাকার কারণে তিনি সেখানে যাননি।
আরও পড়ুনঃ বাংলা থেকে ধুয়েমুছে যাবে BJP? ‘একুশে জুলাই…’, তোলপাড় করা দাবি কুণালের!
এদিকে সোহম (Soham Chakraborty) কাণ্ডে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ইতিমধ্যেই উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন আনিসুল। হাইকোর্টের নির্দেশ, ৩১ জুলাই অবধি তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না। যদিও তৃণমূল বিধায়কের দাবি, তিনি ওই চিঠি সম্বন্ধে কিছু জানেন না। এদিকে নিউ টাউনের ওই রেস্তোরাঁর (Restaurant) মালিক বলছেন, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে ওই চিঠি শুধুমাত্র তাঁদের কাছেই এসেছে।
আনিসুলের বন্ধু জিম নওয়াজ বলেন, ‘ওই বাড়ি ভাড়া নিয়ে আনিসুল রেস্তোরাঁ চালাচ্ছেন। অন্যান্য রেস্তোরাঁ বা ধাবাকে কোনও চিঠি দেওয়া হয়নি’। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, জমির মালিকের নামে চিঠি না দিয়ে কেন রেস্তোরাঁর মালিকের নামে দেওয়া হল? তাঁদের দাবি, কাগজপত্রে গণ্ডগোল আছে এই বাহানায় ওই নির্মাণটিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলা হতে পারে। যে কারণে প্রভাবিত হতে পারে ওই রেস্তোরাঁ।
পাথরঘাটা পঞ্চায়েতের উপপ্রধান টুটুন গাজি অবশ্য জানিয়েছেন, সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার উদ্যোগী হয়েছে। নিউ টাউনের ওই এলাকার বেশিরভাগ নির্মাণের কোনও অনুমোদিত নকশা নেই। এর মধ্যে ওই রেস্তোরাঁও রয়েছে। পাশাপাশি সেটির প্রচুর করও বকেয়া রয়েছে। তাই জন্য জমির মালিককে ডাকা হয়েছে। রেস্তোরাঁর মালিককে কিছু বলা হয়নি। তাহলে রেস্তোরাঁর মালিকের নামে কেন চিঠি গেল? এই বিষয়ে কোনও সদুত্তর না দিলেও টুটুন বলেন, আনিসুলের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। জানিয়েছেন, কোনও সমস্যা হবে না।
এদিকে ওই নির্মাণের মালিক বলছেন, তাঁরা পঞ্চায়েতে কাগজপত্র নিয়ে গিয়েছিলেন, তবে সেখানে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁর কথায়, নিউ টাউন তৈরির সময় তাঁদের জমি গিয়েছিল। তখন হিডকো ওই জমিতে নির্মাণের অনুমতি দেয়। বছর দুয়েক আগে ওই নির্মাণ হয়েছে। এরপর সোহম (Soham Chakraborty) কাণ্ডের পরেই জমির কাগজপত্র দেখার আর কর বকেয়া থাকার কথা মনে পড়ল পঞ্চায়েতের? শুনেছিলাম, আনিসুল যাতে মামলা বন্ধ করেন, সেটা বোঝানোর জন্যই আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল।