বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বর্ষার মরশুম। বছরের এই সময়টাতে মৎস্যপ্রিয় বাঙালিরা অপেক্ষা করে থাকেন ইলিশের (Ilish) জন্য। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় এই সময়ে শুরু হয় ইলিশ উৎসবও। তবে, এবার জমিয়ে ইলিশ খাওয়ার বিষয়ে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমতাবস্থায়, আপনিও যদি বৃষ্টি ভেজা দিনে ইলিশের (Ilish) নানান পদ দিয়ে খেতে ভালোবাসেন তাহলে বর্তমান প্রতিবেদনটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হবে। কারণ, বিশেষজ্ঞরা এবার যা জানালেন তা রীতিমতো কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে।
ইলিশের (Ilish) প্রসঙ্গে সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য:
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, বর্ষার এই সময়টাতে দিঘা থেকে শুরু করে ডায়মন্ড হারবার, কাকদ্বীপের মতো উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে সন্ধান মেলে ইলিশের। পাশাপাশি, মায়ানমার এবং বাংলাদেশের মতো প্রতিবেশী দেশ থেকে আসা ইলিশের (Ilish) জন্যও অপেক্ষায় থাকেন সবাই। এদিকে, এই সময়টাতে ইলিশের চাহিদাও থাকে প্রচুর। যদিও, আবহাওয়ার পরিবর্তন সহ ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে ইলিশ রীতিমতো দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। এদিকে, বিপুল চাহিদা পরিলক্ষিত করে বেশি মুনাফা অর্জনের লোভে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন বিপজ্জনক রাসায়নিক দিয়ে সংরক্ষণ করা হচ্ছে ইলিশের। তাই, ওই ইলিশ খাওয়া আদৌ কতটা স্বাস্থ্যকর তা নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা।
এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, বেশ কয়েকমাস ধরে ইলিশকে (Ilish) সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ফর্মালিন। যেটি প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতিসাধন করে মানব শরীরের। মূলত ফর্মালিনের কারণে মানুষের লিভার এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পাশাপাশি দেখা যায় শ্বাসকষ্টের উপসর্গ। সবথেকে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, শরীরে অত্যধিক পরিমাণে এই রাসায়নিক গেলে হতে পারে ক্যানসার পর্যন্ত। তাই, ইলিশ কেনার আগে অবশ্যই থাকা উচিত সতর্ক। এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে বাজারে ইলিশ কিনতে গেলে সেই ইলিশে ফরমালিন আছে কিনা তা বুঝবেন কি করে? এরও উপায় জানিয়ে দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: প্রতিমাসে ৫০ হাজার টাকা উপার্জন করতে ইচ্ছুক? নতুন পথের দিশা নিয়ে হাজির TreasureNFT Business School
এইভাবে করুন পরীক্ষা: সিঙ্গুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের বিভাগীয় প্রধান এবং মৎস্য গবেষক দেবজ্যোতি চক্রবর্তী বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিন ধরে যাতে মাছ অবিকৃত থাকে সেজন্য ব্যবহার করা হচ্ছে ফর্মালিন। মানুষের শরীরের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্ত বিপদজনক। আমরা পরীক্ষাগারে সংরক্ষণ করা ইলিশ (Ilish) পরীক্ষা করে বিভিন্ন সময়ে এই রাসায়নিকের উপস্থিতির বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছি। সাধারণ ক্রেতারাও এটি খুব সহজে পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। এর জন্য অনলাইনে ‘টেস্ট কিট’ কিনতে পাওয়া যায়। ওই কিটে থাকে এক ধরণের কাগজ। যেটি মাছের গায়ে ঠেকানোর পর যদি সবুজ হয়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে মাছে অল্প পরিমাণ হলেও ফর্মালিন আছে। পাশাপাশি, ওই কাগজটি যদি নীল হয়ে যায় তাহলে বুঝে নিতে হবে সেখানে অত্যধিক ফর্মালিন রয়েছে। তবে, কাগজের রং যদি হলুদ থাকে সেক্ষেত্রে বুঝতে হবে রাসায়নিক নেই।”
আরও পড়ুন: গম্ভীর আসার সাথে সাথেই দল থেকে বাদ পড়লেন ভারতের এই তারকা প্লেয়ার, কেরিয়ার হবে শেষ? শুরু জল্পনা
এদিকে, বর্তমান সময়ে ইলিশ সংরক্ষণের ক্ষেত্রে যে রাসায়নিকের ব্যবহার করা হচ্ছে তা মেনে নিচ্ছেন মাছ ধরার সাথে যুক্ত থাকা ব্যক্তিরাও। মূলত, ইলিশের (Ilish) জোগান কমে যাওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে তা মজুত রাখার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে বিভিন্ন রাসায়নিকের। এদিকে, নদীয়ার একজন মৎস্য ব্যবসায়ী জানিয়েছেন যে, “আগে দিঘা অথবা ডায়মন্ড হারবার থেকে মাছ কিনে বরফে চাপিয়ে নিয়ে এসে ব্যবসা করা হতো। কিন্তু বিগত পাঁচ-সাত বছর ধরে সেই পদ্ধতি বদলে গিয়েছে। ইলিশ এখন আর সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। যেটুকু মিলছে তা বড় কারবারিরা কিনে নিচ্ছেন। আমরা তাঁদের কাছ থেকে আট থেকে দশ মাস বা এক বছরের পুরনো মাছ কিনছি। টাটকা মাছ আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব না হওয়ায় স্টোরের ওপরেই ভরসা রাখতে হয়।”