বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এক ‘সোনালি’ অধ্যায়ের সমাপ্তি। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। শারীরিক অসুস্থতায় একাধিকবার হাসপাতালে থেকেছেন তিঁনি। প্রতিবারই যুদ্ধ জয় করে ফিরেছিলেন কমরেড। তবে এবার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়টুকু দেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
চিরনিদ্রায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী (Buddhadeb Bhattacharjee)
পাম অ্যাভিনিউয়ের দু’কামড়ার ফ্ল্যাটে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ৮টা ২০ নাগাদ নিঃশ্বাস ত্যাগ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন বুদ্ধবাবু। পাশাপাশি ৩দিন ধরে জ্বরও ছিল বর্ষীয়ান সিপিএম নেতার। প্রতিদিনের মতো সকালে উঠে প্রাতঃরাশ সারেন। তবে তারপরই বিপত্তি। হঠাৎই অবস্থার অবনতি হয়। বাড়িতে অক্সিজেন দেওয়া হলেও শেষরক্ষা করা যায়নি।
শারীরিক সমস্যার জন্য প্রায় ১১ বছর ধরে ঘরবন্দি ছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সিওপিডি-জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিঁনি। এর আগে বহুবার হাসপাতালেও ভর্তি হয়েছেন। তবে এবার হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। বাড়িতেই ছিলেন তিঁনি। বরাবরই হাসপাতাল নিয়ে অনীহা ছিল বুদ্ধবাবুর। শেষবার গত বছর অগাস্ট মাসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিঁনি। ভেন্টিলেশনেও ছিলেন।
সেবার পরিস্থিতি জটিল থাকলেও একটু একটু করে সুস্থ হয়ে ওঠেন বুদ্ধবাবু। ভেন্টিলেশন থেকে বের করে নন ইনভেসিভ ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল তাঁকে। তবে মাঝে মাঝেই তাকে বাইপ্যাপ সাপোর্ট দিতে হত। রাইলস টিউবের মাধ্যমে খাবার ঢুকছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীরে। যা তাঁর একেবারেই অপছন্দ ছিল। যখন ধীরে ধীরে আরেকটু সুস্থ হয়ে উঠছিলেন, নিজে থেকেই কথা বলতেন বুদ্ধবাবু। সেই সময় চিকিৎসকদের কাছে করেছিলেন মিষ্টি আবদারও।
আরও পড়ুন: মাটি ১৫ অগস্টের ছুটি! সরকারি কর্মীদের জন্য জারি নয়া বিজ্ঞপ্তি, না মানলেই কড়া পদক্ষেপ
এক বছর আগের কথা। হাসপাতালের বেডে শুয়েই তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা চিকিৎসকদের কাছে আম খাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিলেন বুদ্ধবাবু। তবে সেই সময় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আমের আবদার মেটানো হয়নি। জানা গিয়েছিল সেই সময় রাইলস টিউব থাকায় তরল খাবারই একমাত্র দেওয়া হয়েছিল বুদ্ধবাবুকে। হাসপাতালে থেকে চিকিৎসায় সর্বদাই অনীহা ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। সেবারে চিকিৎসকদের কাছে কাতর আর্জি জানিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আমাকে এ বার ছেড়ে দিন।’’