১ টাকায় সৌরভকে জমি! মামলা হতেই বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের, আদালত বলল…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কারখানা তৈরির আগেই গণ্ডগোল! কয়েকদিন আগেই জানা যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে ফ্যাক্টরি বানানোর জন্য জমি দিয়েছে রাজ্য। এবার তা নিয়ে বেঁধেছে বিপত্তি। মাত্র ১ টাকার বিনিময়ে ৯৯৯ বছরের জন্য ওই জমি লিজ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই সেই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। শুক্রবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি এবং বিচারপতি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল।

শুনানিতে বিরাট নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)!

সৌরভকে কেন মাত্র ১ টাকায় জমি লিজ দেওয়া হল, এই প্রশ্ন সামনে রেখে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন শেখ মাসুদ নামের একজন ব্যক্তি। এদিন এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের সিদ্ধান্ত সাময়িক হস্তক্ষেপ করল আদালত। হাইকোর্টের নির্দেশ, এই মামলার বিচারের ওপর ওই জমির মালিকানা মালিকানার ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল।

পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনার বুকে ফিল্ম সিটি বানাতে প্রয়াগ গ্রুপকে ৭৫০ একর জমি দিয়েছিল রাজ্য। ওই গ্রুপের তরফ থেকে ২৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। তবে চিটফান্ড মামলায় ওই গ্রুপের নাম জড়াতেই মোড় ঘুরে যায়। সাধারণ মানুষের থেকে কয়েক কোটি টাকা তোলার অভিযোগ ওঠে। এমনকি ফিল্ম সিটিতে বিনিয়োগের টাকাও এভাবেই তোলা হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। এরপর আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে ফিল্ম সিটির জন্য দেওয়া ওই ৭৫০ একর জমি সহ প্রয়াগ গ্রুপের যাবতীয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাজ্য। এবার অভিযোগ, ওই ৭৫০ একর জমি থেকেই সৌরভকে (Sourav Ganguly) কারখানার জন্য জমি প্রদান করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ স্কুল পড়ুয়াদের জন্য লাগু নতুন নিয়ম! ১৫ আগস্টের আগেই জারি নয়া নির্দেশিকা

এবার বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জনস্বার্থ মামলা দায়ের হতেই বিরাট নির্দেশ দেওয়া হল। যে ৩৫০ একর জমি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে, তার মধ্যে ১১.২৮ একর জমি শৈলেন্দ্র তালুকদার কমিটির কাছে রয়েছে। ওই জমির দখল পাওয়ার জন্য কমিটির কাছে দরবার করা রাজ্যের দায়িত্ব। এমতাবস্থায় ওই জমি ব্যবহার অথবা বিক্রি কোনও কিছুই করতে পারবে না রাজ্য।

শুধু তাই নয়, প্রয়াগ গ্রুপকে চন্দ্রকোনার যে মোট জমি দেওয়া হয়েছিল, সাধারণ মানুষের আস্থা জয় করতে তা আবারও খতিয়ে দেখতে হবে। আদালত জানিয়েছে, এই প্রসঙ্গে সকল পক্ষের বক্তব্য হলফনামা দিতে হবে। আগামী ৩ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য হলফনামা দেবে। ৫ সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি হবে বলে জানানো হয়েছে।

Calcutta High Court

এখানেই শেষ নয়, হাইকোর্টের নির্দেশ, সেবি এবং তালুকদার কমিটির সঙ্গে সমন্বয় করে রাজ্য ওই ‘বিতর্কিত’ জমি ফিজিক্যালি খতিয়ে দেখবে। সেই সঙ্গেই ফিল্ম সিটির জন্য যে সকল পরিকাঠামো তৈরি হয়েছিল সেগুলির বাজারদরও দেখতে হবে। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন বাজারমূল্য অনুসারে আদালতকে একটা হিসেব দেবে রাজ্য। এছাড়া ওই জমির নিলাম হয়েছে কিনা, যদি না হয়ে থাকে তাহলে কেন হয়নি সেটাও রাজ্যকে বোঝাতে হবে।

ওই জমি নিলাম না করে, ওপেন টেন্ডার না করে কেন শুধুমাত্র একজনকে বিক্রি করা হল, সেটা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জানাতে হবে। রাজ্য যদি সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারেন, তাহলে জমি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় আদালত হস্তক্ষেপ করবে বলে জানানো হয়েছে। রাজ্যের তরফ থেকে যদিও এই প্রসঙ্গে জানানো হয়েছিল, উচিত দামে ওই জমি কেনা হয়েছিল। পরবর্তী শুনানিতে মামলা কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই এবার দেখার।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর