বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান, সেনা-অর্থনীতিতে কে বেশি কড়া প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের?

বাংলাহান্ট ডেস্ক: প্রতিবেশী কেমন হবে তার উপর আপনার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমানে ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির পরিস্থিতি চিন্তা ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছে ওয়াকিবহাল মহলের। বাংলাদেশের (Bangladesh) সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিক্ষোভ কারোরই অজানা নেই। কোটা আন্দোলন অচিরে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হতেই প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। বর্তমানে পড়শি দেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস।

আরোও পড়ুন : এটাই হল LIC’র সবথেকে বেশি বিক্রিত পলিসি! হাতে আসে লাখ লাখ টাকা রিটার্ন, বিনিয়োগ করেই দেখুন!

কিন্তু একসময় যে ছাত্রদের সমর্থনে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন তিনি, এখন সেই ছাত্ররাই ফের বিদ্রোহে অবতীর্ণ হয়েছেন তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সেখানকার সংখ্যালঘুদের দিকেও কড়া নজর রয়েছে ভারতের। একদা মিত্র রাষ্ট্র বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমেই ভারতের বিরুদ্ধে যেতে শুরু করেছে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং পাকিস্তানের (Pakistan) মধ্যে আর্থিক পরিস্থিতি এবং সৈন্য সংখ্যার ভিত্তিতে কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছে কোন দেশ?

সেনা ক্ষমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং পাকিস্তানের (Pakistan) অবস্থান

১৪৫ টি দেশের মধ্যে সেনা ক্ষমতার দিক দিয়ে ৩৭ নম্বরে রয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং ৯ এ রয়েছে পাকিস্তান। সেখানে ভারত (India) বর্তমানে সৈন্য ক্ষমতার দিক দিয়ে চতুর্থ শক্তিশালী দেশ। ১৪.৪৪ লক্ষ সক্রিয় সেনা রয়েছে ভারতের, যা বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয়। সেই তুলনায় পাকিস্তানের সেনা সংখ্যা অর্ধেকেরও কম। ভারতের প্যারামিলিটারি ফোর্সে মোট ২৫,২৭,০০০ জন সৈনিক রয়েছে। সেখানে পাকিস্তানের কাছে রয়েছে মাত্র ৫ লক্ষ সৈনিক। এছাড়াও, ৪৫০০ টি ট্যাঙ্ক, ৫৩৮ টি সেনা বিমান, সুপারসনিক মিসাইল, পারমাণবিক অস্ত্র সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের থেকে ঢের এগিয়ে রয়েছে ভারত।

বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং পাকিস্তানের (Pakistan) সেনা ক্ষমতা এক নজরে :

বাংলাদেশে রয়েছে ১,৭৫,০০০ জন সক্রিয় সৈনিক। এদের মধ্যে রয়েছে সীমান্ত রক্ষা বাহিনী সহ ভূখণ্ড রক্ষাকারী বাহিনীও। রয়েছে ১৩,১০০ সাঁজোয়া গাড়ি, ২৮১ টি ট্যাঙ্ক, ৩০ টি স্বয়ংক্রিয় কামান, ৩৭০ টো আর্টিলারি, ৭০ রকেট আর্টিলারি। রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতি বছর সেনাবাহিনীর রক্ষণাবেক্ষণের উপরে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ করে বাংলাদেশ (Bangladesh)। অন্যদিকে পাকিস্তানের কথা বলতে গেলে, সেনা ক্ষমতার দিক দিয়ে বাংলাদেশের থেকে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে তারা। রিপোর্ট মোতাবেক, পাকিস্তানের সক্রিয় সেনার সংখ্যা ৬,৫৪,০০০ এর থেকেও বেশি। রয়েছে ১,৪৩৪ টি বিমান, ৬০ টি ট্রান্সপোর্ট এয়ারক্রাফট, ৪ টি এরিয়াল রিপ্যুলার বিমান। পাকিস্তানের কাছে রয়েছে ৩,৭৪২ টি ট্যাঙ্ক এবং ৫০ হাজারেরও বেশি সশস্ত্র যান। পাশাপাশি ৬০২ টি রকেট লঞ্চার, ৭৫২ টি সেল্ফ প্রোপেল্ড আর্টিলারি, ২ টি বিধ্বংসী পোর্ট, ৪ টি সাবমেরিন, ১১৪ নৌবাহিনীর জাহাজ, ৩৮৭ টি ফাইটার জেট নিয়ে বাংলাদেশকে কড়া টক্কর দিতে পারবে পাকিস্তান।

আরোও পড়ুন : বাংলা ছেড়ে সোজা বলিউড! ‘পাগলপ্রেমী’ আদৃতের ঝুলিতে এবার  বিরাট সাফল্য

বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতি :

IMF অনুসারে, বিগত ৪ বছর ধরে বাংলাদেশের (Bangladesh) জনপ্রতি GDP ভারতের তুলনায় বেশি রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনপ্রতি GDP ২,৬৮৮ ডলার। আরো জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ৭৪ বছর, ভারতের যেখানে ৬৮ বছর। তবে ছাত্র বিক্ষোভের কারণে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি কার্যত তলানিতে এসে ঠেকেছে। ২০২৪ এও জনপ্রতি আয় প্রায় ২,৬৫০ ডলার অনুমান করা হয়েছিল হাসিনা সরকারের তরফে। ভারতীয় মুদ্রার তুলনায় বাংলাদেশি টাকার মূল্যও অনেকটা কম।

Bangladesh

অন্যদিকে পাকিস্তানের আর্থিক পরিস্থিতির দিকে নজর রাখলে, বাংলাদেশের (Bangladesh) থেকেও বেশি টালমাটাল পরিস্থিতি রয়েছে সেখানে। ২০২৪ এ ভারতের জিডিপি যেখানে রয়েছে ৩৩৯৭ আরব ডলার, সেখানে পাকিস্তান ধুঁকছে ৩৩৮ আরব ডলার জিডিপিতে। দেশের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৭১.২ বিলিয়ন ডলারের থেকেও বেশি। রিপোর্ট বলছে, ২০২৪ শেষ হতে হতে পাকিস্তানের জিডিপি পৌঁছাতে পারে ৩৪৭.১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। অন্যদিকে সম্প্রতি ব্রিটিশ যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। ৫ ট্রিলিয়ন ইকোনমিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে ভারত সরকারের। এমতাবস্থায় দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ (Bangladesh) এবং পাকিস্তান কার্যত অবনতির মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। এই দুই দেশের পরিস্থিতির উপরেই কড়া নজর রয়েছে ভারতের।

Niranjana Nag
Niranjana Nag

নীরাজনা নাগ, বাংলা হান্টের কনটেন্ট রাইটার। নারুলা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক পাশ করার পর সাংবাদিকতার সফর শুরু। বিগত ৫ বছর ধরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত।

সম্পর্কিত খবর