বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর কাণ্ডে অস্বস্তিতে রাজ্য। এরই মাঝে ফের একবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রশ্নের মুখে সরকারের ভূমিকা। বর্তমান সময়ে গোটা রাজ্যের অধিকাংশই চলছে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করে। আর এই চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী ননিয়োগ নিয়ে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞমন।
রাজ্যের বিভিন্ন দফতরে শূন্যপদে নিয়োগ বন্ধ। শুধুমাত্র অস্থায়ী কর্মীদের নিয়োগ করে কাজ চালানো হচ্ছে। কেন এই দুরাবস্থা সেই নিয়ে আগেও প্রশ্ন উঠেছে। এবারে ফের হাইকোর্টে একই ইস্যু। মঙ্গলবার বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একটি মামলা শুনানির জন্য উঠলে দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে অবশ্যই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করে কাজ চালানো যেতে পারে। কিন্তু তা কখনই নিয়মিত ভাবে করা যায় না। এখানে তো পুলিশও নিয়োগও চুক্তির ভিত্তিতে হয়। গোটা দেশে আর কোথাও এমনটা হয় না।
বিচারপতির প্রশ্ন, “চুক্তির ভিত্তিতেই নিয়োগ হতে থাকলে কর্মীরা দায়িত্বশীল হবেন কী ভাবে? আদালতের কর্মী চুক্তিভিত্তিক হলে যদি কখনও একটি ফাইল হারিয়ে যায় তার দায় তিনি নিতে যাবেন কেন? কে দায়িত্ব নেবে তখন?” প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানম প্রশ্ন, “সকাল থেকে মাঝরাত পর্যন্ত কাজ করছেন কর্মীরা। তাদের বেতন ১৪ হাজার টাকা! এমন কিভাবে চলতে পারে? ”
চিফ জাস্টিস আরও বলেন, “কিছু পিডব্লুডি কর্মী স্থায়ী কাজ করতে আসেন, তাদের চিঠির কালি শুকনোর আগেই ঠিকেদার তাদের বের করে দিয়েছে।” এরপরই স্থায়ী পোস্টে অস্থায়ী ইংলিশ স্টেনোগ্রাফার, পিওন সহ অন্যান্য নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর অন্তর্বতীকালীন স্থগিতাদেশ জারি করেছে উচ্চ আদালত।
চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, ‘সব সীমানা পেরিয়ে যাচ্ছে। গোটা দেশে এমন কোথাও হয়না।’ দিনের পর দিন রাজ্য এভাবে নিয়োগ বন্ধ করে রাখতে পারে না। চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ কখনও নিয়ম হতে পারে না। এদিন ভরা এজলাসে মন্তব্য প্রধান বিচারপতির।
আরও পড়ুন: সব নিয়োগ বন্ধ! হঠাৎ নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করল রাজ্য সরকার, কেন এমন সিদ্ধান্ত?
প্রসঙ্গত, গত মার্চ মাসে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চুক্তির ভিত্তিতে আদালতের কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় রাজ্য সরকার। এরপর এর এই নিয়ে হাইকোর্টে মামলা হলে বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায় গোটা নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। পাল্টা সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য।
মঙ্গলবার সেই মামলায় শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই আদালতের কড়া সমালোচনার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। এদিন রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানায়, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর একক বেঞ্চের স্থগিতাদেশের নির্দেশই আপাতত বহাল থাকবে।