বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর (RG Kar) হাসপাতালে কর্মরত ৩১ বছরের তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় তোলপাড় দেশ। ইতিমধ্যেই মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। রাজ্যের হয়ে এই মামলা লড়ছেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল (Kapil Sibal)। এই মামলার গত শুনানিতে আদালতের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়েন মমতা সরকারের আইনজীবী। গত শুনানিতেও ‘সুপ্রিম’ প্রশ্নবাণে রীতিমতো বিদ্ধ হন সিব্বল।
কিছুদিন আগেই আর জি কর ইস্যুতে নিজের ‘ব্যক্তিগত’ বিবৃতি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের লেটারহেডে প্রকাশ করে আর চাপের মুখে পড়েছিলেন কপিল। সবমিলিয়ে বর্তমানে চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে এই প্রখ্যাত আইনজীবী। যাকে নিয়ে এত কথা, জানেন কে এই কপিল সিব্বল?
কপিল সিব্বল ৮ আগস্ট ১৯৪৮ (বয়স ৭৬) সালে পাঞ্জাবের জলন্ধরে এক হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি বহুদিন যুক্ত। শিক্ষা স্নাতকোত্তর। সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে ভারতের সুপ্রিম কোর্টে নিযুক্ত রয়েছেন তিনি। তার পিতার নাম প্রয়াত হীরা লাল সিব্বল। মাতার নামপ্রয়াত কৈলাশ রানি সিব্বল।
১৯৭০-এর দশকের গোড়ার দিকে তিনি দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন কলেজ থেকে ইতিহাসে এমএ সম্পন্ন করেন এবং আইন বিষয়ে ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এর পর হার্ভার্ড ল স্কুল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনি এলএলএম অর্জন করেন। অনুসারে ১৯৭৩ সালে, ভারতের সিভিল সার্ভিসে যোগদানের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন সিব্বল।
আরও পড়ুন: কলকাতা এবার দুবাই! পুজোর আগেই বিরাট উদ্যোগ মমতার, হয়ে গেল বড় ঘোষণা
সিব্বল তার নিজস্ব আইন অনুশীলন প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮৩ সালে একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসাবে মনোনীত হন কপিল সিব্বল। ১৯৮৯-৯০ সালে দেশের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ১৯৯৮ সালে বিহার থেকে জাতীয় কংগ্রেসের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করে রাজ্যসভায় (ভারতের সংসদের উচ্চ কক্ষ) মনোনীত হন সিব্বল।
এরপর ২০০০-২০০২ সালে তিনি কংগ্রেসের সংসদীয় সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দিল্লি জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের একটি নির্বাচনী এলাকায় একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন সিব্বল। ফের ২০০৯ সালে তিনি ওই আসন থেকেই পুনর্নির্বাচিত এই আইনজীবী। কংগ্রেস জমানায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্বও সামলেছেন সিব্বল (Kapil Sibal)।
তার অধিষ্ঠিত পদগুলি হল:
সিনিয়র অ্যাডভোকেট, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট, ভারতের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (১৯৮৯-১৯৯০), সংসদ সদস্য, রাজ্যসভা (১৯৯৮, একাধিক মেয়াদ), সংসদ সদস্য, লোকসভা (২০০৪-১৪), বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী (২০০৪-২০০৯), আর্থ বিজ্ঞান মন্ত্রী (২০০৪-২০০৯), মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী (২০০৯-১২), যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী (২০১০-১৪), আইন ও বিচার মন্ত্রী (২০১৩-১৪)। কর্মজীবনে এই সকল দায়িত্ব সামলেছেন সিব্বল।
আরও পড়ুন: আন্দোলনের মাঝেও পুলিশের প্রাণ ফেরালেন ডাক্তাররা! তাদেরই বাস চালকদের সঙ্গে তুলনা দেবাংশুর?
রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলা, তিন তালাক মামলা, রাফাল চুক্তি বিতর্ক, হাদিয়া মামলা, ভোডাফোন ট্যাক্স ইত্যাদি হল তার কিছু উল্লেখযোগ্য মামলা। সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হিসাবে তিনি চতুর্থবারের মতো নির্বাচিত হন ২০২৪ সালে। বর্তমানে তিনি সেই দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৬ সালে ভারত সরকার তাকে ‘পদ্মভূষণ’ পুরস্কারে সম্মানিত করেন। ওয়ান ইন্ডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী কপিল সিব্বলের নেট ওয়ার্থ ₹৫১৬. ৪৫ কোটি এবং সম্পদ ₹৬০৮. ৬১ কোটি।
এই প্রতিবেদনে কপিল সিব্বল সম্পর্কিত যেসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা ওয়ান ইন্ডিয়া থেকে সংগৃহীত।