বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ‘বুলডোজার অ্যাকশন’ নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। অবৈধ জবরদখলকারিদের সরাতে নির্বিচারে ‘বুলডোজার অ্যাকশন’এর অভিযোগও রয়েছে একাধিক। এখানেই শেষ নয়! নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের মানুষের বাড়ি ও ধর্মস্থান গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও উঠেছে। এবার এই নিয়ে মামলা হতেই বিরাট নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
‘বুলডোজার অ্যাকশন’ নিয়ে সুপ্রিম-কড়াকড়ি (Supreme Court)
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি বিশ্বনাথনের বেঞ্চে এই সংক্রান্ত একাধিক আবেদনের শুনানি হয়েছে। এদিন উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং গুজরাটের হয়ে লড়ছিলেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা।
বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে একদিনের নোটিশে অথবা কোনও নোটিশ ছাড়া বুলডোজার (Bulldozer) চালানোর অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে তুষার বলেন, কোন ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেটার ওপর নোটিশ জারি করা নির্ভরশীল। এই নিয়ে পুরসভার আলাদা আইন রয়েছে। ডাক মাধ্যমে সেই নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ টাকার বিনিময়ে চাকরি? প্যানেলে খোদ তৃণমূল নেত্রীর নাম, বিরাট হুঁশিয়ারি BJP নেতার
পাল্টা শীর্ষ আদালত (Supreme Court) বলে, পঞ্চায়েত ও পুরসভার আলাদা ইন আছে। অনলাইন ওয়েবসাইটে সকল তথ্য থাকা জরুরি। সলিসিটর জেনারেল বলেন, নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়কে ‘টার্গেট’ করে বুলডোজার চালানোর যে অভিযোগ উঠেছে, আদালত সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে নির্দেশ দিচ্ছে। সেই সময়ই আদালত বলে, ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ দেশ, অবৈধ জবরদখলকারিদের বিরুদ্ধে যদি কোনও পদক্ষেপ নিতে হয়, তাহলে ধর্ম না দেখে সবার প্রতি সমান আচরণ করা উচিত।
সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) বলে, ‘আমরা ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। ধর্ম, সম্প্রদার নির্বিশেষে আমাদের নির্দেশ সবার জন্য সমানভাবে কার্যকর। জবরদখল প্রসঙ্গে আগেও বলেছি, জনতার ব্যবহৃত ফুটপাথ, জলাশয়, রাস্তা, রেললাইনের জায়গায় যদি জবরদখল করা হয়, তা হলে তুলে ফেলতেই হবে। এক্ষেত্রে জন নিরাপত্তা প্রাধান্য পায়। রাস্তার মধ্যিখানে যদি কোনও ধর্মস্থান বানানো হয়, তা সে মন্দির হোক, দরগা হোক বা গুরুদ্বার, জনজীবনে কোনও প্রকার বাধা সৃষ্টি করা যাবে না’।
এখানেই না থেমে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বি আর গাভাই বলেন, ‘অবৈধ নির্মাণের ক্ষেত্রে একটাই আইন থাকা প্রয়োজন। সেটা ধর্ম, আস্থা, মূল্যবোধের ওপর নির্ভরশীল নয়’। এদিন আদালতে আবেদনকারীদের হয়ে সওয়াল করছিলেন সিইউ সিং। তিনি বলেন, কোনও অপরাধ মোকাবিলার অস্ত্র বুলডোজার হতে পারে না। একথা শুনে সলিসিটর জেনারেল পাল্টা বলেন, খুব কম সংখ্যক সংখ্যালঘু মানুষের সম্পদের ওপর বুলডোজার চালানো হয়েছে। তা শুনে আদালত বলে, সংখ্যাটা ৪.৪৫ লাখ। এদিন সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছে, অপরাধ করলেই সেই ব্যক্তির সম্পত্তি গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় না। নাগরিক আইন লঙ্ঘিত হলেই এটা করা যায়। আদালত জানায়, অনুমোদন ব্যতীত আপাতত বুলডোজার অ্যাকশন করা যাবে না।