বাংলা হান্ট ডেস্ক: ছাত্র-জনতার রোষে পড়ে বাংলাদেশে (Bangladesh) শেখ হাসিনার ১৫ বছরের রাজত্বকালের অবসান ঘটে। “পরাধীন” বাংলাদেশ এবার নতুন করে স্বাধীন। এমনটাই বলতে শোনা যায় ওপার বাংলায়। দেশবাসীরা সকলে এখন মুক্ত পাখি। তবে স্বাধীনতা মানে যে , প্রধানমন্ত্রীর রাজভবন দখল করা সেটা জানা ছিল না। আসলে স্বাধীনতার পর জনতাদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। ভাঙ্গা হয়েছে বঙ্গবন্ধু মুজিবরের মূর্তি, অসম্মানিত করা হয়েছে রবি ঠাকুরকে। চেপে ধরা হয়েছে সংখ্যালঘুদের কন্ঠস্বর। তবে এবার যা ঘটলো সেটা তো ধিক্কারজনক ঘটনা। উগ্র মৌলবাদী এবং ধর্মান্ধদের হাত থেকে বাঁচলেন না ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং লালন ফকির।
বাংলাদেশে (Bangladesh) চরম অরাজকতা:
বাংলাদেশে অসম্মানিত হলেন বিদ্যাসাগর এবং লালন ফকির: বাংলাদেশ (Bangladesh) নতুন করে স্বাধীন হওয়ার পর উন্মত্ত জনতাদের বেড়েই চলেছে অত্যাচার। নারীরা হচ্ছেন শারিরীক হেনস্থার শিকার। হিন্দুরা ভয়ে তটস্থ। এবার এই নোংরা খেলায় লুণ্ঠিত হলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং ধর্মীয় ভেদাভেদ ভুলে মানুষকে একসাথে বেঁচে থাকার বার্তা দিয়ে যাওয়া লালন ফকির। তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার কিছু মৌলবাদীরা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে ফেলে। বাংলার ভাষার পথ প্রদর্শক যিনি, একসময় গোটা জাতিকে শিক্ষিত করতে মাথা পেতে নিয়েছিলেন সমস্ত অবজ্ঞা, অসম্মান, কুরুচিকর মন্তব্য। আর আজ সেই মূর্খ জাতি এই ব্যক্তিকেই কলঙ্কিত করতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
জানা গিয়েছে ওই দিন ফরিদপুরের ভাঙ্গায় লালন ফকিরের নামাঙ্কিত “লালন আনন্দধাম”-এ সন্ত্রাসবাদীরা চালায় হামলা। লালন ফকিরের ছবি আগুনে পুড়িয়ে ফেলে সেই দুষ্কৃতীরা। এছাড়াও মূল্যবান গ্রন্থসহ, একতারা, দোতারা, বায়া, জুড়ি, গিটারসহ একাধিক বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। জানা যায় ১১ বছর আগে ২০১৩ সালে কাউলিবেড়া ইউনিয়নের মোটরা গ্রামে “লালন আনন্দধাম” প্রতিষ্ঠা করা হয়। আর এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সদরপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহ অধ্যাপক সৈয়দ জাহিদ হাসান।
এই ঘটনার পর, “লালন আনন্দধাম”-এর প্রতিষ্ঠাতা সৈয়দ জাহিদ হাসান জানিয়েছেন, “দীর্ঘদিন ধরেই একাধিক মৌলবাদী গোষ্ঠী লালন আনন্দধামে হামলার ছক কষছিল। এমনকি গত ১২ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে সরাসরি হামলা চালানোর হুমকিও দেয় মৌলবাদীরা। এই বিষয়েও পুলিশকে জানানো সত্বেও নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি তারা। এমনকি যে সমস্ত মৌলবাদীরা হুমকি দিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” যদিও, এই বিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের এই বিষয়টি জানা নেই। জানলে অবশ্যই আগে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের অধিনায়ক পদ থেকে ইস্তফা বাবরের! কে হবেন পরবর্তী ক্যাপ্টেন? সামনে আসছে এই নাম
তবে জানিয়ে রাখি, বাংলাদেশে (Bangladesh) এই ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও সামনে আসে পুজো কমিটির দলের সদস্যদের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা। এমনকি, টাকা না দিলে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছিলেন। একের পর এক এই খবর সেখানকার নাগরিকদের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। তবে, আগামী দিনে বাংলাদেশ নাগরিকদের জন্য কতটা নিরাপদ সেটা বলা মুশকিল।