বাংলাহান্ট ডেস্ক : কলকাতায় যেমন বহু বনেদি বাড়ির দুর্গাপুজো রয়েছে, তেমনি লক্ষ্মীপুজোর (Lokkhi Pujo) প্রসঙ্গ উঠলেই যে বাড়ির নাম না করলেই নয় তা হল উত্তম কুমারের বাড়ি। ভবানীপুরের গিরিশ মুখার্জি রোডে মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোর (Lokkhi Pujo) মাহাত্ম্যের কাহিনি ঘোরে লোকের মুখে মুখে। স্বয়ং উত্তম কুমার এই পুজো শুরু করে গিয়েছিলেন। তাঁর পরবর্তী প্রজন্ম আজো নিষ্ঠার সঙ্গে ধরে রেখেছে সেই ধারা। আগেকার সমস্ত নিয়ম রীতি মেনেই হয় মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো (Lokkhi Pujo)।
ধুমধাম করে হয় মহানায়কের বাড়ির লক্ষ্মীপুজো (Lokkhi Pujo)
বর্তমানে এই পুজোর দায়িত্বে রয়েছে মহানায়কের বাড়ির তরুণ প্রজন্ম। উত্তম কুমার নাতবৌ গৌরব চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী দেবলীনা কুমার এই পুজোর (Lokkhi Pujo) অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। বাড়ির বউ হওয়ার কারণে বেশ কিছু দায়িত্বও রয়েছে তাঁর। আগের থেকে জাঁকজমকে কিছুটা ঘাটতি পড়লেও এখনো ধুমধাম করেই বাড়িতে লক্ষ্মীপুজো (Lokkhi Pujo) করে থাকেন মহানায়কের পরবর্তী প্রজন্ম।
আরো পড়ুন : সলমনই মূল লক্ষ্য, মাথার উপরে ঝুলছে খাঁড়া, প্রাণভয়ে কী সিদ্ধান্ত নিলেন ভাইজান!
কবে থেকে শুরু হয়েছিল পুজো
উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মীপুজোর (Lokkhi Pujo) সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নানান কাহিনি। ছেলে গৌতমের জন্মের পরেই বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর প্রচলন উত্তম কুমার করেছিলেন বলে শোনা যায়। অভিনেত্রী দেবলীনা কুমার জানান, এই বাড়ির পুজোর (Lokkhi Pujo) সবথেকে বড় এবং আলাদা যে বিশেষত্ব তা হল, প্রতিমার মুখ। দেবলীনার দিদিশাশুড়ি অর্থাৎ উত্তম জায়া গৌরী দেবীর মুখের আদলেই লক্ষ্মী প্রতিমার মুখ তৈরি হয়।
আরো পড়ুন :পেয়েছিল ভূতুড়ে তকমা, সুশান্তের মৃত্যুর ৪ বছর পর এখন কে থাকেন তাঁর ‘অভিশপ্ত’ ফ্ল্যাটে?
গৌরী দেবীর মুখের আদলে হয় প্রতিমা
হ্যাঁ, উত্তম কুমারের বাড়ির লক্ষ্মী প্রতিমার (Lokkhi Pujo) মুখ প্রথম বার তাঁর স্ত্রী গৌরী দেবীর মুখের আদলেই তৈরি করা হয়েছিল। সেই প্রতিমা তৈরি করেছিলেন শিল্পী নিরঞ্জন পাল। শোনা যায়, ‘যদুভট্ট’ ছবির শুটিংয়ে তাঁকে মূর্তি গড়তে দেখে নিজের বাড়ির পুজোর প্রতিমা গড়ার বায়না দেবেন বলে শিল্পীকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন উত্তম কুমার। তিনি বাড়িতে এসে দেখেছিলেন, গৌরী দেবী ঘর মুছছেন। ঘোমটার ফাঁকে তাঁর এক ঝলক মুখ দেখেই সেই আদলে লক্ষ্মী প্রতিমার (Lokkhi Pujo) মুখ তৈরি করেছিলেন শিল্পী। সেই ধারা আজো বজায় রয়েছে। এখন অবশ্য কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা আনা হয়।
দেবলীনা জানান, বাড়িতে নিয়ে আসার সময়ে মায়ের পরনে থাকে লাল পাড় সাদা শাড়ি। প্রতি বছর আত্মীয় স্বজনরা কেউ না কেউ শাড়ি দেন মাকে। সেই শাড়িই পরানো হয় তারপর। দেবলীনা জানান, এ বছর তাঁর মা একটি বেনারসী শাড়ি দিয়েছেন মা লক্ষ্মীকে। মায়ের পরনে থাকে সোনা এবং সোনার জল করা রূপোর গয়না। পরের দিন আবার গয়না খুলিয়ে মাকে পরানো হয় ফুলের গয়না। এই সাজেই বিসর্জন দেওয়া হয় মাকে। সঙ্গে বেনারসী শাড়িটির বদলে আবার পরানো হয় লাল পাড় সাদা শাড়ি। আর মায়ের পরনের বেনারসী পান বাড়ির বউ। দেবলীনা আরো জানান, তাঁরা যেহেতু এদেশীয় তাই রীতি মেনে নারকেল এবং তিলের নাড়ুর পাশাপাশি তৈরি হয় আনন্দ নাড়ু। এছাড়াও ভোগে থাকে লুচি, পাঁচ রকম ভাজা, ডাল, তরকারি, চাটনি এবং মিষ্টি। তবে বাড়ির দীক্ষিত সদস্যদের কাছেই শুধুমাত্র ভোগ রাঁধার অনুমতি থাকে।