বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিগত বহু সময় ধরে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের ‘দাদাগিরি’র নানা নিদর্শন সামনে এসেছে। সম্প্রতি আর জি কর ঘটনার পর সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য সরকারকে।আর জি কর (RG Kar) মামলার শেষ দুই শুনানিতে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের (Civic Volunteer) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ভৎসর্নার মুখে পড়ে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় সিভিকদের নিয়ে এবার গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সিভিক ভলেন্টিয়ারদের নিয়ে এক গুচ্ছ নির্দেশিকা জারি করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। এরপরই তড়িঘড়ি বড় সিদ্ধান্ত প্রশাসনের। আগেই কলকাতার সব হাসপাতাল থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। জানা যাচ্ছে এবার সিভিকের পরিবর্তের বেসরকারি রক্ষী ও পুলিস কনস্টেবলের উপরই ভরসা রাখতে চলেছে রাজ্য সরকার। সেই লক্ষ্যে তাদের সংখ্যা বাড়ানো কথা ভাবছে প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, আর জি কর হাসপাতালে তরুণী ডাক্তার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মূল অভিযুক্ত হিসেবে যাকে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই ব্যক্তি কলকাতা পুলিশের এক সিভিক ভলেন্টিয়ার। খুনের ঘটনায় সঞ্জয়ের যোগ নিয়ে একাধিক প্রমাণের উল্লেখ রয়েছে সিবিআই চার্জশিটে।
গত মঙ্গলবার আদালতে সিনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী করুণা নন্দী সিভিকদের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুললে রাজ্যকে একাধিক নির্দেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত। কলকাতা এবং রাজ্যে মোট কত সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছে? তাদের যোগ্যতা কী? কোন আইন তাদের নিয়োগ? কীভাবে নিয়োগ করা হয়? তাদের দৈনিক ও মাসিক বেতন কত? রাজ্যের কাছে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী শুনানিতে এই গোটা বিষয় লিখিত হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
এর আগে চুক্তিভিত্তিক কর্মীর পরিবর্তে হাসপাতালে প্রশিক্ষিত পুলিশকর্মী নিয়োগের দাবিও জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তারদের আইনজীবী। সাত দিনের ট্রেনিং দিয়ে কী ভাবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteers) নিয়োগ করা হয় সেই প্রশ্নও উঠেছিল শুনানিতে। সেই সময় প্রধান বিচারপতির মন্তব্য করেছিলেন, “ওই চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের কী ভাবে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োগ করতে পারে রাজ্য সরকার? রাজ্যের এই বিষয়ে ভাবা উচিত।”
আরও পড়ুন: ‘মঙ্গলবারই..,’ সুপ্রিম কোর্টে SSC ২৬০০০ চাকরি বাতিল মামলায় বড় আপডেট, কি জানা যাচ্ছে?
সেই সময় প্রধান বিচারপতির আরও বলেছিলেন, এভাবে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নিয়োগ করলে, ডাক্তার, বিশেষত মহিলা ডাক্তাররা কীভাবে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করবেন? বিচারপতি বলেন, “এই অপরাধ চুক্তিভিত্তিক কর্মী দ্বারা সংগঠিত হয়েছে। পুলিশ বারাক থাকা সত্ত্বেও হাসপাতালে ঢুকে পড়ে অভিযুক্ত। এই অবস্থায় ফের চুক্তিভিত্তিক কর্মী ৭ দিনের প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ করা হচ্ছে?’ শেষ শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, হাসপাতাল এবং স্কুলের মত সংবেদনশীল জায়গায় সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা যাবে না। সম্প্রতি এই নিয়ে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ
নিয়েছে রাজ্য।