নরবলি থেকে শুরু করে ডাকাতের দাপাদাপি! হুগলির এই কালীপুজোর সাথে জড়িয়ে আছেন এক সাধক

বাংলাহান্ট ডেস্ক : হুগলির বাঘটি জয়পুর গ্রামের ডাকাত কালীবাড়িতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। আর কিছুদিন পর কালীপুজো (Kalipuja) উপলক্ষে এই মন্দিরে সমাগম হবে হাজার হাজার ভক্তের। গাছ-গাছালিতে ঘেরা আলো-আঁধারি এই পরিবেশে গা ছমছম করে উঠতেই পারে আপনার। তবে এখানকার ডাকাত কালীপুজো আজও বয়ে নিয়ে চলেছে হাজারো ইতিহাস।

রঘু ডাকাতের কালীপুজো (Kalipuja)

জাগ্রত এই কালী মায়ের দর্শন পেতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। কথিত আছে রঘু ডাকাত প্রায় ৫০০ বছর আগে নদী থেকে একটি কালী মূর্তি পান। বর্তমানে যেখানে মন্দির রয়েছে তখন সেখানে ছিল শ্মশান। বুধো ও রঘু ডাকাত এই শ্মশানেই শুরু করেন মায়ের আরাধনা। কালক্রমে এই পুজো (Kalipuja) রঘু ডাকাতের পুজো নামে বিখ্যাত হয়।

Kalipuja

সিদ্ধেশ্বরী কালী রূপে এখানে মাকে পুজো করা হয়।কথিত রয়েছে রঘু ডাকাত ও তার সঙ্গীরা মা কালীকে নরবলি ও পোড়া ল্যাটা মাছের ভোগ নিবেদন করে বের হতেন ডাকাতি করতে। ডাকাতির সম্পত্তি বিলিয়ে দিতেন দুঃস্থ মানুষদের মধ্যে। জানা যায়, পূর্ববঙ্গের রামশরণ সিমলাই নামের এক ব্যবসায়ী যাত্রা পথে পুজো দিয়েছিলেন এই কালী মন্দিরে। 

আরোও পড়ুন : ‘তিন দিনের মধ্যে ক্ষমা চান, নয়তো..,’ আর জি কর ইস্যুতে এবার চরম বিপাকে জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত

তবে রঘু ডাকাত তার প্রতি প্রসন্ন হয়ে আক্রমণ করেননি। এমনকি জানা যায় মাতৃ সাধক রামপ্রসাদ একবার রঘু ডাকাতের কবলে পড়েছিলেন। যখন হাঁড়ি কাঠে রামপ্রসাদকে বলি দেওয়ার জন্য চড়ানো হয়, তখন তিনি মা কালীকে গান শোনানোর আর্জি জানান। সেই গান শুনতে শুনতে রঘু ডাকাত হাঁড়িকাঠে রামপ্রসাদের বদলে দেখতে পান স্বয়ং মায়ের মুখ।

তারপর রঘু ডাকাত রামপ্রসাদকে অত্যন্ত যত্ন ও খাতির করেন। তারপর নিজের উদ্যোগে রামপ্রসাদকে বাড়ি পৌঁছে দেন। কথিত রয়েছে তারপর থেকেই এখানে বন্ধ হয়ে যায় নরবলি। তবে নরবলি বন্ধ হলেও এখনো ছাগবলি দেওয়া হয় এখানে। এখনো পোড়া ল্যাটা মাছের ভোগ মাকে নিবেদন করার প্রচলন রয়েছে পুজোয় (Kalipuja)।

img 2702

 

মন্দিরের সেবাইত সুমন চক্রবর্তী বলছেন, “কালীপুজোর দিন সারাদিন ধরেই পুজো হয় ঠিকই তবে মূল পুজো শুরু হয় রাত ১১টার পর। মায়ের ভোগে আজও দেওয়া হয় পোড়া ল্যাটা মাছ। এছাড়াও খিচুড়ি, পায়েস, পাঁচরকম ভাজা তো রয়েইছে।” এক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “এখনও কালীপুজোর রাতে প্রথা মেনে মশাল জ্বেলেই বলি দেওয়া হয়। হাজার হাজার ভক্ত সমাগম হয় ওই রাতে।”

Soumita

আমি সৌমিতা। বিগত ৩ বছর ধরে কর্মরত ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমে। রাজনীতি থেকে শুরু করে ভ্রমণ, ভাইরাল তথ্য থেকে শুরু করে বিনোদন, পাঠকের কাছে নির্ভুল খবর পৌঁছে দেওয়াই আমার একমাত্র লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর