বাংলাহান্ট ডেস্ক : এবার দুগ্ধ সমবায় সংস্থা নিয়ে এল বাংলার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে পুরস্কার। “সুন্দরীনি” প্রকল্পের (Sundarini Project) হাত ধরেই বাংলা ঝুলিতে আসলো এই সম্মান। সুন্দরবনের স্বনির্ভর গোষ্ঠী মহিলাদের নিয়ে গঠিত এই প্রকল্প। মূলত সুন্দরবনের মহিলারা প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সুন্দরবন ও উন্নয়ন দপ্তরের সহায়তায় এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীকে প্রতিনিয়ত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
“সুন্দরীনি” প্রকল্প (Sundarini Project) আজ গোটা দেশের গর্ব
সম্প্রতি প্যারিসে অনুষ্ঠিত হয় ‘আইডিএফ ডেয়ারি ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড।” জানা গিয়েছে সুন্দরবনের সুন্দরবন কো-অপারেটিভ মিল্ক ইউনিয়ন এন্ড লাইভস্টক প্রডিউসার্স ইউনিয়ন এই ইনোভেশন অ্যাওয়ার্ড পান। সেদিনের এই অনুষ্ঠানে ১৫৩ টি ডেয়ারি সংস্থাকে সম্মানের জন্য আবেদন করা হয়েছিল। তার মধ্যে থেকে ‘সুন্দরীণী প্রকল্প’কে (Sundarini Project) সেরা নির্বাচিত করে পুরস্কৃত করা হয়।
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যের এই প্রকল্প এত বড় সম্মান নিয়ে আসতে পেরে বাংলাকে গর্বিত করেছে। এমনকি সমবায় সংস্থার সাফল্যে আপ্লুত বঙ্গবাসী। এমনকি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীও নিজের রাজ্যকে সম্মান পেতে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেছেন, ” সুন্দরবনের মহিলাদের সাফল্যে আমরা উচ্ছ্বসিত। আমি সুন্দরীনি দুগ্ধ সমবায়ের সঙ্গে যুক্ত মহিলাদের এবং আধিকারিকদের শুভেচ্ছা জানাতে চাই”।
আরোও পড়ুন : ফ্লপ হিরো, খোঁজ রাখেন না অমিতাভ, অভিনয় ছেড়ে কয়েকশো কোটির ব্যবসা বচ্চন পরিবারের জামাইয়ের!
আপনাদের জানিয়ে রাখি, সুন্দরবনের (Sundarban) দুগ্ধ সমবায়ের ‘সুন্দরীনি ন্যাচারালস ব্র্যান্ড’ ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। এমনকি মানুষের পছন্দের অন্যতম দ্রব্য হয়ে উঠেছে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের নামকরণ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। সুন্দরবনের মহিলাদের স্বনির্ভর এবং স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে, সেই সাথে জীবনযাত্রাকে আরো উন্নত মানের করতে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজ্য সরকার (State Government)।
তথ্যসূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুগ্ধ সমবায় প্রত্যেকদিন প্রায় ২০০০ লিটার দুধ এবং আড়াইশো কেজি দ্রুত পণ্য উৎপাদন করে থাকে। এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পের সাথে প্রায় পাঁচ হাজার মহিলার যুক্ত রয়েছে। মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবনের ৯টি ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারাই এই প্রকল্পের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। তবে দুধ সংগ্রহ করারও বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে।
আরোও পড়ুন : একুশের ভোটের আগে BJP-তে আসতে চেয়েছিলেন অতীন! শুভেন্দুর দাবিতে তোলপাড়
জানা যায়, প্রতিদিন এত দ্রুত পণ্য উৎপাদন করার জন্য ৭০ টি সমবায় সমিতি তৈরি করা হয়েছে। এরপর সেই সমিতির সকলের ওই ৯টি ব্লক থেকে দুধ সংগ্রহ করে। এরপর সেই দুধ চিলিং পয়েন্টে রেখে ঠান্ডা করার পর কলকাতার চৌবাগ এলাকায় সুন্দরী কারখানায় পাঠানো হয়। তারপর সেখানে বিভিন্ন রকম পরীক্ষা, প্রক্রিয়ার পর ওই দুধ সরবরাহের জন্য বোতলজাত করা হয়। শুধু তাই নয় একই সাথে, এই দুধ দিয়েই দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরি করা হয় বলেও জানা গিয়েছে।
এই বিষয়ে প্রকল্পের বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর অম্বিকা প্রসাদ বলেছেন, “মূলত জৈব পদ্ধতিতে এই দুগ্ধ এবং দুধজাত দ্রব্য উৎপাদনই আমাদের লক্ষ্য। কাজ করতে গিয়ে একদিকে যেমন দুধ ও দুধজাত দ্রব্য উৎপন্ন হচ্ছে, তেমনি জৈব চাষের মাধ্যমে অন্যান্য ফসলে উৎপন্ন হচ্ছে আর এই গোটা বিষয়টার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরে এই সম্মান পেয়েছি আমরা। আগামী দিনে এই সুন্দরীনি প্রকল্পের মাধ্যমে এর দুগ্ধজাত দ্রব্য প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাবে।