বাংলা হান্ট ডেস্ক : ডিজিটাল মাধ্যমকে হাতিয়ার বানিয়েই দিনে দিনে প্রতারণার জাল বিস্তার করে চলেছে বেশ কিছু জালিয়াতি চক্র (Cyber Crime)। এই পরিস্থিতিতে আগেই কেন্দ্রীয় সরকারের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ‘ডিজিটাল গ্রেফতারি’। এরই মাঝে এবার নতুন করে চিন্তা বাড়াতে শুরু করেছে বেআইনি ‘ভাড়াটে অ্যাকাউন্ট’ গুলিও।
সাইবার ক্রাইমের (Cyber Crime) নতুন ফাঁদ
এই অনলাইন প্রতারণার (Cyber Crime) যুগে অনেক সময় দেখা যায় প্রতারকরা নিজের অ্যাকাউন্টের পরিবর্তে অন্য কোন ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট কাজে লাগিয়ে এই ধরনের প্রতারণার (Cyber Crime)টাকা লেনদেন করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতারকরা নিজস্ব একাউন্ট ব্যবহার করে না কারণ এ ক্ষেত্রে ধরা পড়া সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তৃতীয় ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে এই ধরনের ডিজিটাল প্রতারণা (Cyber Crime) করা হয়ে থাকে।
এগুলি অনেকটা ভাড়াটে অ্যাকাউন্ট-এর মত হয়ে থাকে। ডিজিটাল গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে-ও টাকা হাতানোর সময় এই ধরনের ভাড়াটে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করার প্রবণতা দেখা যায়। ইদানিং এই সমস্ত ভাড়া নেওয়ার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে বেআইনি পেমেন্ট গেটওয়ে তৈরি করছে প্রতারকরা। বিষয়টি নজরে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
এ ব্যাপারে জারি করা হয়েছে কড়া সতর্কতা। দেশবাসীকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে সতর্ক করে জানানো হয়েছে আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্র এই ধরনের ভাড়াটে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করছে। এগুলি ব্যবহার করেই অনলাইনে লেনদেনের বেশ কিছু বেআইনির মাধ্যমে তৈরি করে ফেলছে তারা।
গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গুজরাট এবং অন্ধ্রপ্রদেশ পুলিশ ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্তের হানা দিয়ে এই ধরনের বেআইনি ভাড়াটে অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে। তবে এখানে বলে রাখি এই অনলাইন প্রতারণার জগতে এই ধরনের বেআইনি ভাড়া নেওয়া অ্যাকাউন্টের চল নতুন নয়। সাধারণত এই ধরনের প্রতারণা চক্রের মাথারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষদের থেকেই এই ধরনের অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া নিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন : ২৬-এর নির্বাচন নিয়ে মলয় ঘটকের ভবিষ্যদ্বাণী! জল ঢাললেন বিজেপির বাংলা দখলের ‘স্বপ্নে’
শর্ত অনুযায়ী প্রকৃত মালিককে কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেওয়া হয়। সম্প্রতি ‘দ্য হিন্দু’তে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা থেকে জানা যাচ্ছে এই ধরনের ভাড়া নেওয়া অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া অপরাধের টাকার অংক নাকি সারা দেশের মোট জিডিপির প্রায় ০.৭ শতাংশ। এখানেই শেষ নয়, জানলে অবাক হবেন ইন্ডিয়ান সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টারের রিপোর্ট বলছে এইভাবে প্রতিদিন প্রায় ৪ হাজার ভাড়া নেওয়া ব্যাংক অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করছে তদন্তকারী সংস্থা।
সেসাথে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে এই ধরনের প্রতারকরা সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলিকে ব্যবহার করে এই ধরনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট গুলির খোঁজ চালাচ্ছে। যার জন্য তারা মূলত হাতিয়ার বানাচ্ছে ফেসবুক এবং টেলিগ্রাম-এর মতো জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলিকে। এই মাধ্যমগুলির সাহায্যেই লগ্নির ভুয়ো ওয়েবসাইট, কিংবা কোনও অনলাইন জুয়ার হুয়াও ওয়েবসাইট, আবার কখনও শেয়ার কেনাবেচার ফেক সাইটের সাহায্যে এই ‘পেমেন্ট গেটওয়ে’ ব্যবহার করা হয়। তবে ইতিমধ্যেই এমনই বেশ কয়েকটি বেআইনি মাধ্যমের কথা উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।