বাংলা হান্ট ডেস্ক: সেই যে শুরু হয়েছে যুদ্ধ, এক বিরামহীন যুদ্ধ। এই যুদ্ধে কে হারবে কে জিতবে তার কোনো ঠিক নেই। শুরুটা রাশিয়া (Russia) করেছিল। তবে এর শেষ দেখে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইউক্রেন। কিন্তু প্রথম দিকে ইউক্রেনকে কোণঠাসা করতে একবারে উদ্যত হয়ে পড়ে রাশিয়া (Russia)। বিগত তিন বছর ধরে চলছে লাগাতার যুদ্ধ। তবে প্রথম দিকে ইউক্রেন দূর্বল থাকলেও, পরবর্তীতে আমেরিকার সঙ্গে জোট বেঁধে নিজেদের শক্তিশালী করে তুলেছে ভলোদিমির জেলেনস্কি। উল্টোদিকে ইউক্রেনের গলা চেপে ধরতে একেবারে পরমাণু অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মাঠে নেমেছে রাশিয়া। রয়টার্স সূত্রে জানা গিয়েছে, পরমাণু অস্ত্র নিয়ে সামরিক বাহিনী ইতিমধ্যেই প্রস্তুত রাশিয়ার। আর তারপর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে, তাহলে কি পুতিনের দেশ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে?
রাশিয়া (Russia)-ইউক্রেনের মধ্যে হবে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ?
আসলে সাম্প্রতিককালে ইউক্রেনকে সামরিক দিক থেকে প্রস্তুত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে আমেরিকা। লড়াই শুরু হবার পর থেকেই এখনো পর্যন্ত অজস্র অস্ত্রের ব্যবস্থা করে নিয়েছে ইউক্রেন। এমনকি ইউক্রেনীয় সেনাদেরও সেইভাবে প্রস্তুতি নিতে দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয় বেশ কিছুদিন আগেই আমেরিকায় গিয়ে জেলেনস্কি আমেরিকার সাথে গিয়ে বৈঠক করে আসেন। এই বৈঠকে আমেরিকার কাছে অস্ত্র সাহায্যের কথা জানায় ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর তার জন্য হাত বাড়িয়ে দিতে প্রস্তুত আমেরিকা। শুধু তাই নয় জানা গিয়েছে, ইউক্রেনকে আরো শক্তিশালী করতে ক্রুজ মিসাইল দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে হোয়াইট হাউস। একইসাথে রুশ (Russia) সেনারা আক্রমণ করলে পাল্টা আক্রমণ করার বার্তা দিয়েছেন।
তবে এদিকে, আমেরিকার সাহায্য রাশিয়ার বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তাই এই বাঁধা দূর করতে নতুন ফন্দি পুতিনের। আমেরিকা সহ পশ্চিম দুনিয়াকে চাপে ফেলতে রুশ প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক অস্ত্রকে ব্রহ্মাস্ত্র হিসেবে কাজে লাগাচ্ছেন। এমনকি এই নিয়ে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিকে রীতিমতো কড়া হুঁশিয়ারিও দিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। জানা গিয়েছে চলতি সপ্তাহে বুধবার পারমাণবিক হাতিয়ার নিয়ে রীতিমতো সামরিক বাহিনী প্রস্তুতি শুরু করেছে। মূলত এই কর্মকান্ডের মাধ্যমে ইউক্রেনকে চাপে রাখার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে রাশিয়া (Russia)।
এ বিষয়ে ক্রেনলিনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, “ইউক্রেন যুদ্ধ এখন সবচেয়ে কঠিন পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশেই এই পরমাণু অস্ত্রের মহড়া শুরু হয়েছে। মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে যেকোনো পদক্ষেপ করতে পারি আমরা।” যদিও এই নিয়ে স্পষ্ট মতামত দিয়েছেন পুতিনও। তিনি জানিয়েছেন, “চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়েই আমরা পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করব। এখনই আমরা করতে চাই না। কিন্তু আমরা সবদিকে প্রস্তুত থাকতে চাই।”
আরও পড়ুন: BSF জওয়ানদের সাথে দীপাবলির আনন্দ ভাগ করে নিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, নিজের হাতে করালেন মিষ্টিমুখ
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য রাশিয়ার (Russia) সাথে জোট বেঁধেছে উত্তর কোরিয়াও। ইউক্রেনকে চাপে রাখতে প্রায় ১০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। জানা যাচ্ছে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই ১০ হাজার সেনার মাধ্যমেই ইউক্রেনে ফের যুদ্ধ শুরু হবে। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন। তিনি বলছেন, “রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে প্রশিক্ষণের জন্য উত্তর কোরিয়ার অন্তত ১০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। এর মধ্যে আনুমানিক ৩ হাজার সেনাকে ইতিমধ্যেই ইউক্রেন সীমান্তে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই সেনাগুলির মাধ্যমেই রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করবে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে।” যদিও এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই, উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন জো বাইডেন। এমনকি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: তৈরি হল সাফল্যের নয়া নজির! রাজ্যের হাজার হাজার পড়ুয়ার জীবন গড়ে দিচ্ছে BSSEI, জানলে হবেন অবাক
তবে এই বিষয় স্পষ্ট নয় যে এখনই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হচ্ছে। কিন্তু আগাম যুদ্ধের পূর্বাভাস দিয়ে দিয়েছে রাশিয়া। তবে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধে কোথাও গিয়ে জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা এবং উত্তর কোরিয়া। কিন্তু এখন প্রশ্ন এই যুদ্ধ কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আহ্বান করছে? আবারো কি বিরাট কোনো কিছু ঘটতে দেখবে বিশ্ববাসী?