বাংলা হান্ট ডেস্ক : মনের মধ্যে পুষে রাখা প্রতিহিংসা অপরজনের পক্ষে ঠিক কতটা ক্ষতিকারক হতে পারে, সম্প্রতি ময়নাগুড়ির জলপাইগুড়ির এক ঘটনায় তা প্রমাণিত হল আরও একবার। সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে এক গৃহবধূর নোংরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল (Cyber Crime) করার অপরাধে পুলিশের হাতে গ্রেফতার এক গুণধর যুবক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় গৃহবধূর নোংরা ছবি ভাইরাল (Cyber Crime) করে দিল যুবক
আগেও একবার সোশ্যাল মিডিয়ার ওই গৃহবধূর অশ্লীল ছবি ভাইরাল (Cyber Crime) করে তার সংসার ভেঙে দিয়েছিল ওই যুবক। কিছুদিন আগে আবার বিয়ে হয়েছিল ওই মহিলার। জানতে পেরে যথারীতি আবার হাজির সেই কীর্তিমান। এদিন গৃহবধূর দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতে পেরে আবার ওই গৃহবধূ সহ তার অবিবাহিত ননদ এবং শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য মহিলাদের ছবি নিয়ে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল (Cyber Crime) করে দেয় সে।
ইতিমধ্যেই ওই অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে আদালতে তুলেছে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ। এই ঘটনা জানাজানি হতেই সম্প্রতি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু তরুণীর ওপর ওই যুবকের আক্রোশের কারণটা ঠিক কি? তরুণীর সাথে ওই যুবকের এত শত্রুতাই বা কীসের?
আসলে এই ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০১২ সালে। সেসময় ময়নাগুড়ি ব্লকের ওই তরুণীকে স্কুলে যাওয়া আসার পথে রোজ কু-প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো চাতরার পার গ্রামের বাসিন্দা তাপস সরকার নামে এক যুবক। মেয়েটির পরিবার সেসময় বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সালিশি করার চেষ্টা করেছিল। পরবর্তীকালে ২০২২ সাল নাগাদ মেয়েটির ১৮ বছর বয়স হতেই তাকে বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল তার বাড়ির লোক।
কিন্তু তারপরেও ওই গুণধর যুবকের হাত থেকে নিস্তার পায়নি মেয়েটি। বিয়ের পর ফেসবুকে তরুণীর অশ্লীল ছবি দিয়ে ভাইরাল করতে শুরু করে দেয় সে। এই নিয়ে যুবতীর শ্বশুরবাড়িতে শুরু হয় ব্যাপক অশান্তি। তখন তিনি বাধ্য হয়ে বাপের বাড়ি চলে এসেছিলেন। তারপর তার শ্বশুরবাড়ির লোক তাকে আর ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়নি।
আরও পড়ুন : হাসিনা সরকারের পতনের পর, গণ অভ্যুথান! প্রত্যেকটি মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রসংঘের
তবে সম্প্রতি মাত্র ৬ মাস আগেই ওই যুবতীর আবার অন্য জায়গায় বিয়ে হয়েছে। কিন্তু তারপরেও নিজের অশ্লীল কর্মকাণ্ড থামায়নি অভিযুক্ত যুবক। তরুণীর মায়ের অভিযোগ ছেলেটি তার মেয়ের অশ্লীল ছবি নিয়ে আবার নতুন করে ভাইরাল করে দেয়। আবার সেই একই ঘটনা ঘটায় ওই গৃহবধূ লজ্জায়-অপমানে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
আপাতত গৃহবধূর পরিবারের লোকজন ওই যুবকের উপযুক্ত শাস্তি চাইছেন। অন্যদিকে গৃহবধূর স্বামী অভিজিৎ সরকার জানিয়েছেন শুধু তার স্ত্রীর ছবিই নয় পাশাপাশি তার ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল ঘেঁটে তার অবিবাহিত বোন সহ বাড়ির অন্যান্য মেয়েদের ছবি নিয়ে সমস্ত ছবিতে অশ্লীল মন্তব্য লিখে তা ফেসবুকে ভাইরাল করে দিয়েছে ওই যুবক। পুলিশ সূত্রে খবর অভিযোগ পেয়ে ইতিমধ্যেই থানায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলার রুজু করার পর অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।