বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এবারে ধুমধাম করে পালিত হল বোলপুরে তৃণমূল কার্যালয়ের কালীপুজো। মাঝে প্রায় দু’বছর জেলে কেটেছে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal)। কেষ্টর অনুপস্থিতিতে এতদিন জাঁকজমকহীনভাবে হয়েছে পুজোর আয়োজন। তবে এবারে ভিন্ন ছবি ধরা পড়েছে শুরু থেকেই। কেষ্টর ‘প্রত্যাবর্তনে’র পর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো। স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলে দলে যোগ দিয়েছেন পুজোর কাজে। যদিও এসব থেকে দূরেই ছিলেন কেষ্ট।
কালাশৌচ থাকায় দলীয় কার্যালয়ে পুজোয় শামিল হয়েছিলেন ঠিকই তবে কালীপ্রতিমাকে (Kali Pujo) নিজের হাতে গয়না পরানো থেকে পুষ্পাঞ্জলি এই সব কিছু থেকেই বিরত ছিলেন কেষ্ট। এই নিয়ে রবিবার খয়রাশোলে বিজয়া সম্মিলনী থেকে অনুব্রত জানিয়েছিলেন, ‘‘কাকার মৃত্যুতে আমাদের এখন কালাশৌচ চলছে। তাই পার্টি অফিসে গিয়ে দেবীকে দূর থেকেই প্রণাম করব। পুজোতেও থাকব। কিন্তু পুজো দেওয়া বা গয়না পরানো এসব কাজে হাত দেব না। ”
সে এক ছিল কোনও সময়, যখন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) নিজের হাতে ভরি ভরি সোনার গয়না দিয়ে কালী মূর্তিকে সাজাতেন। আর সোনায় মোড়া মায়ের সেই রূপ দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসতেন। দলীয় কর্মীদের দাবি, কালীপ্রতিমার গয়না প্রায় ৫৭০ ভরি সোনা রয়েছে। যদিও এবারেও নামমাত্র গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছিল প্রতিমাকে।
অনুব্রত নিজেই জানিয়েছেন, “গত বছর যা পরানো হয়েছিল তাই এ বছরও তাই পরানো হবে। যারা আগের বছর গয়না পরিয়েছিলেন এবারেও তারাই মাকে গয়না পরাবেন। তবে কী পরিমান গয়না ছিল তা আমার জানা নেই।” প্রসঙ্গত, বোলপুরে তৃণমূল জেলা পার্টি অফিসে কালীপুজো শুরু হয় অনুব্রতর উদ্যোগেই। শোনা যায়, ২০১৮ সালে কালীপুজোয় সোনার গয়না ছিল ১৮০ ভরি, ২০১৯ সালে ২৬০ ভরি। ২০২০ সালের কালীপুজোর সময় অনুব্রত মণ্ডলের কালী প্রতিমাকে ৩৬০-৩৭০ ভরি গয়না দিয়ে সাজানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: দু’বছর পর ফিরেছেন! মা কালীর কাছে কী চাইলেন? নিজে মুখেই জানালেন অনুব্রত
২০২১ সালে সেই অলংকারের পরিমাণ এক লাফে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫৬০-৫৭০ ভরিতে। যার বাজার মূল্য মোটামুটি তিন কোটি টাকারও বেশি। তবে অনুব্রতর জেলযাত্রার পর থেকে সেই জাঁকজমক কমতে থাকে। গতবছর নাকি সোনার বদলে ইমিটেশনের গয়না পরানো হয়েছিল কেষ্টর কালী প্রতিমাকে। অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে পড়ে কেষ্টর কালীর গয়না। সেইসময় বোলপুরে তৃণমূলের দপ্তরেও হানা দিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তবে কেষ্টদের কালীপুজো পরিচালনা হয় একটি ট্রাস্ট এর দ্বারা। ঠাকুরের যাবতীয় গয়নাও তাদের কাছেই রাখা থাকে। কেষ্টর কালী মায়ের গয়নার সন্ধানে এর আগে লকারেও হানা দিয়েছিল ইডি। তবে কোনো গয়নাই সেখানে মেলেনি। তাহলে সেই কয়েক কোটি টাকার গয়না কোথায়? সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।