‘সত্যিটা..,’ সাংবাদিক ‘শ্লীলতাহানির’ ঘটনায় এবার মুখ খুললেন তন্ময় ভট্টাচার্যের বড় বউদি, শোরগোল

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মহিলা সাংবাদিকের শ্লীলতাহানির অভিযোগের ঘটনায় ইতিমধ্যেই প্রবীণ বাম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যকে (Tanmoy Bhttacharya) সাসপেন্ড করেছে সিপিএম (CPM)। অভিযোগ আসার দিনই তন্ময়ের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ শুরু করে দেয় দল। ওদিকে বিরোধী দলকে বিধঁতে বিন্দুমাত্র সময় ব্যয় করেনি তৃণমূলও। শাসকদলের একাধিক নেতা তন্ময়বাবুর শাস্তি চেয়ে সরব হয়েছেন। সব মিলিয়ে ‘ঘরে-বাইরে’ যখন প্রবল চাপে প্রাক্তন বাম বিধায়ক, সেই সময় তার পাশে এসেছে দাঁড়ালেন নিজের বড় বউদি দীপিকা ভট্টাচার্য।

সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে দীপিকা ভট্টাচার্য বলেন, ‘ওই ইন্টারভিউয়ের জন্য আমিই তন্ময়কে ঘুম থেকে ডেকে দিয়েছিলাম। সাংবাদিককে চা-ও দিয়েছিলাম। ওই তরুণী অসম্ভব কথা বলছেন। মুখে ইয়ার্কির মতো করে কোনো কথা বলাটা আলাদা জিনিস কিন্তু কোলে বসার দাবি অসত্য।’ তিনি জানান, ওই সাক্ষাতকারের দিন তিনি ঘরেই ছিলেন। নিজের দেওরের বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘ওই সাংবাদিক এর আগেও বহুবার আমাদের বাড়িতে এসেছেন ইন্টারভিউ নিতে। ঘটনার দিন সকলেই আমার চোখের সামনেই ছিলেন। সত্যিটা জানি। সব থেকে বড় কথা হল ওই তরুণী সাংবাদিকের সঙ্গে তার ক্যামেরাম্যান ছিলেন। যদি সত্যিই এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটে থাকে সেই সময় ক্যামেরাম্যান কি করছিলেন? বাড়ির জানালা দরজা সবটাই খোলা ছিল। কোনও কিছুই গোপন রাখার মতো কিছু নেই।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে শোরগোল পড়েন। হেনস্থার অভিযোগ তুলে লাইভ করেন এক মহিলা সাংবাদিক (Female Journalist)। রবিবার দুপুরে ফেসবুক লাইভ করে ওই সাংবাদিকের অভিযোগ, সকালে তিনি তন্ময়ের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন, সেই সময় নাকি হঠাৎই সিপিএম নেতা তার কোলে বসে পড়েন। সেই নিয়েই ক্ষোভ উগরে দেন তিনি।

মহিলা সাংবাদিকের অভিযোগ, এই প্রথম নয়, এর আগেও নানা ভাবে তন্ময় তার সঙ্গে ‘অন্যরকম’ ব্যবহার করেছেন। তবে এবার সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যাওয়ায় তিনি বাধ্য হয়েছেন সকলকে সবটা জানাতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মহিলা সাংবাদিক লেখেন, ‘‌চার বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি। কিন্তু এত খারাপ অভিজ্ঞতা আমার কখনও হয়নি। আসলে পোটেনশিয়াল রেপিস্ট এরাই। এদের চিনে রাখা দরকার। আমি বিষয়টাকে কোনওভাবে কন্ট্রোল করে ইন্টারভিউ নিই। কারণ এটাই আমার কাজ। মানসিকভাবে এত ইরিটেশন হচ্ছিল যে আমি এক্সপ্লেইন করতে পারব না।’

যদিও গোটা ঘটনাই অস্বীকার করেন তন্ময় ভট্টাচার্য। সাফাই দিয়ে বাম নেতা বলেন, ‘একটা বাচ্চা মেয়ে। ওকে আমি মা বলে ডাকি। ও একথা বলবে আমি ভাবতে পর্যন্ত পারছি না।” তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি স্বভাবগত ভাবে সকলের সঙ্গেই ইয়ার্কি করে থাকি। এই মেয়েটি এর আগে অন্তত দশবার আমার সাক্ষাৎকার নিয়েছে। আগেও আমি ওর সঙ্গে ইয়ার্কি করেছি। কিন্তু আজকে হঠাৎ করে কী হল আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না।’’

tanmay

আরও পড়ুন: অবশেষে! কেন্দ্রের পর DA বৃদ্ধি করল রাজ্য সরকার, কতটা বাড়ল? সরকারি কর্মীদের মুখে চওড়া হাসি

চক্রান্তেরও অভিযোগ তুলেছিলেন তন্ময় (Tanmoy Bhttacharya)। পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেছিলেন, তার বাড়ি থেকে বরাহনগর থানার দূরত্ব হাঁটাপথে মাত্র ৫ মিনিটের হলেও অভিযোগকারিণী অভিযোগ দায়ের না করে কেন ফেসবুক লাইভ করলেন? পরে অবশ্য প্রাক্তন সিপিএম বিধায়কের বিরুদ্ধে বরাহনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ওই মহিলা সাংবাদিক। পুলিশ তরফে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তন্ময়বাবুকে। ইতিমধ্যেই তাকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে সিপিএম তরফে।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর