বাংলাহান্ট ডেস্ক : বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ যতজন দিকপাল পরিচালকের সান্নিধ্য লাভ করেছে, তাঁদের মধ্যে প্রথম দিকেই নাম থাকবে ঋত্বিক ঘটকের (Ritwik Ghatak)। মোট ৮ টি ছবি পরিচালনা করেছিলেন। প্রতিটিই হয়ে রয়েছে কালজয়ী। এমন প্রতিভা কদর পেল না নিজের জন্মভূমিতে। বাংলাদেশে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল ঋত্বিক ঘটকের (Ritwik Ghatak) পৈতৃক ভিটে। সোমবার সেই ধ্বংসাবশেষের মাঝে ইঁটে ইঁটে মোমবাতি জ্বালিয়েও হল পরিচালকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী পালন।
বাংলাদেশে ভেঙে ফেলা হয়েছে ঋত্বিক ঘটকের (Ritwik Ghatak) বাড়ি
বাংলাদেশের রাজশাহীতে মিয়াপাড়ায় ছিল ঋত্বিক ঘটকের (Ritwik Ghatak) পৈতৃক বাড়ি। এই বাড়িতে কেটেছে পরিচালকের শৈশব, কৈশোর এবং তরুণ বয়সের কিছু সময়। বর্তমানে তা শুধুই ধ্বংসস্তূপ। ১৯৮৯ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের তরফে এই বাড়ির ৩৪ শতাংশ জমি ইজারা দেওয়া হয়েছিল রাজশাহী হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালকে। বাড়ির উত্তর অংশে গড়ে তোলা হয়েছিল কলেজের আধুনিক ভবন এবং দক্ষিণ অংশে ছিল পুরনো বাড়িটি। উল্লেখ্য, রাজশাহীর ঋত্বিক ঘটক (Ritwik Ghatak) ফিল্ম সোসাইটি দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িটি সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিল। কিন্তু সরকারের তরফে উদ্যোগ নেওয়ার আগে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সম্পূর্ণ বাড়ি।
আরো পড়ুন : অনুষা শুধুই বন্ধু, ঋতব্রতর প্রথম প্রেমিকা এই অভিনেত্রী! কোন ক্লাসে শুরু সম্পর্ক?
কাদের বিরুদ্ধে রয়েছে অভিযোগ?
ফিল্ম সোসাইটির তরফে এর জন্য অভিযোগের আঙুল তোলা হয় হোমিওপ্যাথি কলেজের দিকেই। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিভিন্ন সময় বাড়ির আঙিনায় ঋত্বিক ঘটকের (Ritwik Ghatak) জন্মদিন পালন অনুষ্ঠানের সময় অসহযোগিতা করতে দেখা গিয়েছে হোমিওপ্যাথি কলেজের লোকজনদের। এর মাঝেই গত ৮ ই অগাস্ট ভাঙা পড়ে বাড়ি। সেই বাড়ির ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই এবার পালিত হল পরিচালকের ৯৯ তম জন্মবার্ষিকী।
আরো পড়ুন : আরো বিপাকে কানাডা প্রশাসন, হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনায় মোদীর টুইট, করলেন বিষ্ফোরক দাবি!
ধ্বংসস্তূপেই পালন পরিচালকের জন্মদিন
বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের প্রতিটি ইঁটে জ্বালানো হয়েছিল মোমবাতি। একটি স্তূপের উপরে রাখা হয়েছিল পরিচালকের ছবি। তার মাঝেই এক জায়গায় করা হয়েছিল অতিথিদের বসার আয়োজন। মোমবাতির আলোয় অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয়েছিল পরিচালকের পৈতৃক ভিটের ধ্বংসাবশেষে।
এদিন ঋত্বিক ঘটকের জন্মদিন পালনের উদ্যোগে সামিল হয়েছিলেন ফিল্ম সোসাইটির সদস্য সহ ওপার বাংলার বেশ কয়েকজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং নামী ব্যক্তিত্ব। সেখানেই বাংলাদেশের ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ভূমি অফিসে রেকর্ড রয়েছে, এই জমির মালিক ঋত্বিক ঘটকের মা ইন্দুবালা দেবী। হোমিওপ্যাথি কলেজের সঙ্গে তাঁদের কোনো বিরোধ নেই। তাঁদের একটাই দাবি। আর সেটা হল, ঋত্বিক ঘটকের মূল বাড়ির অংশটুকু সংরক্ষণ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, পাবনায় সুচিত্রা সসেনের বাড়িও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দখল করে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। ঋত্বিক ঘটকের বাড়িও উদ্ধার হবে বলেই মন্তব্য করেন তিনি।