বাংলাহান্ট ডেস্ক: বাংলায় কোনো কিছুর অভাব হলেও দুর্নীতির (Corruption) অভাব নেই। শিক্ষায় দুর্নীতি, পুরসভায় দুর্নীতি, চাকরিতে দুর্নীতি, হাসপাতালে দুর্নীতি অর্থাৎ দুর্নীতির (Corruption) আঁতুড় ঘর হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। আর এই দুর্নীতিতে অভিযুক্ত কারা বড় বড় রাঘব বোয়ালরা। বিশেষ করে শিক্ষার দুর্নীতি নিয়ে প্রতিনিয়ত বাংলার শাসক দল তালিকার শীর্ষে। আর এবার দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ উঠলো আরো দুই গুনধর ব্যক্তির নামে। গৌতম ব্যানার্জি এবং পার্থ দাসের নামেই উঠলো গুরুতর অভিযোগ। না না তবে তাই বলে এরা শাসকদলের কেউ নন। এরা হচ্ছেন নামকরা কলেজের দুই পদাধিকারী ব্যক্তি। কারা করলেন অভিযোগ? ঠিক কি অভিযোগ উঠলো? দেখে নিন আজকের প্রতিবেদনে।
রাজ্যের এই কলেজে এবার দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ:
বাংলা হান্টের সাক্ষাৎকার দিতে গিয়েই গুরুতর অভিযোগ করলেন ক্যালকাটা ইঞ্জিনিয়ারিং অফ ম্যানেজমেন্ট কলেজের ডিন ডক্টর রানা প্রতাপ পাল এবং কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রসেনজিৎ নায়েক। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই কলেজ যে সোসাইটি চালাচ্ছে তারই সম্পাদক গৌতম ব্যানার্জি এবং পার্থ দাস এখানে কোষাগারের দায়িত্বে রয়েছেন। এই বিষয় কম্পিউটার সায়েন্স ডিপার্টমেন্টের টেকনিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রসেনজিৎ নায়েক জানান, একসময় এই কলেজটি নাকি সরকারের অধীনেই ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এই কলেজ কোনো না কোনো ভাবে প্রাইভেট কলেজ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এরপরই তিনি বলেন, এই কলেজ সোসাইটির ৭ জন মেম্বারের মধ্যে মাত্র দুজন এই কলেজে যাতায়াত করেন। তারা আর কেউ নন গৌতম ব্যানার্জি এবং পার্থ দাস। যাদের দ্বারা এই গোটা কলেজটা চলছে। তবে শুধুই দুজনই নয়, এই সোসাইটির সকলেই এই কান্ডের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি।
কলেজের সমস্ত কিছু ঠিক রয়েছে, এমনকি কলেজ ভালো ভালো স্টুডেন্টরাও অত্যন্ত ভালো বলে জানান তিনি। তবে এরপরই বিস্ফোরক দাবি করেন প্রসেনজিৎ নায়েক। তিনি বলেন, কলেজের নিযুক্ত কর্মীদের এখনো পর্যন্ত ২৬ মাসের টাকা বকেয়া রয়েছে। শুধু তাই নয়, চলতি বছরেও ৬ মাসের টাকা এখনো বাকি। এই মুহূর্তে সবথেকে করুন পরিস্থিতি হচ্ছে কলেজে নিযুক্ত সুইপার সহ বিভিন্ন নিম্ন বিভাগের কর্মচারীদের। দীর্ঘদিনের টাকা এইভাবে বাকি থাকায় তিনি সোসাইটির সকলের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।
যার জেরে কলেজের সামনে শুরু হয়েছে, বিক্ষোভ। সকলের কথা ভেবেই এই বিক্ষোভ করছেন কলেজের সমস্ত আধিকারিকরা। কিন্তু এখন প্রশ্ন, এই বিক্ষোভের জেরে সমস্যার মুখে পড়তে হবে না তো ছাত্র-ছাত্রীদের? এই নিয়ে কলেজের ডিন ডক্টর রানা প্রতাপ পাল জানিয়েছেন, ২৬ মাসের টাকা বাকি থাকলেও কলেজের অ্যাক্টিভিটিতে বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি। আজ ছাত্রদের কথা ভেবে শিক্ষকদের কথা ভেবেই তারা এই আন্দোলন করছেন। কিন্তু তাতে করে, কোন স্টুডেন্টদের পড়াশুনাতে কিংবা পরীক্ষায় বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়বে না। এমনকি এখানে স্টুডেন্টদের সমর্থন রয়েছে বলে জানা যায়। ছাত্রদের সাথে কথা বলেই তারা এই আন্দোলনে নেমেছেন।
আরও পড়ুন: বিরাটের জন্মদিনে সবাইকে চমকে দিলেন বাবর আজম, তুমুল হইচই অনুরাগীদের মধ্যে, কেসটা কি?
শুধু তাই নয় তিনি জানিয়েছেন, “১১ই নভেম্বর থেকে পরীক্ষা আছে, এই পরীক্ষা যেমন আছে তেমনই হবে। এর পাশাপাশি কলেজে আরও ছোটখাটো আর বিভিন্ন পরীক্ষা রয়েছে সেগুলোতেও প্রভাব পড়বে না”। পাশাপাশি কলেজের ডিন এই ব্যক্তিদের নামে ‘চুরি’র অভিযোগ তুলেছেন। সব মিলিয়ে তাদের দাবি স্পষ্ট দাবি যতদিন না পার্থ দাস গৌতম চট্টোপাধ্যায় সহ সোসাইটির প্রত্যেকটি ব্যক্তি পদত্যাগ না করছেন অনির্দিষ্ট কালের জন্য এই আন্দোলন চলবে।
আরও পড়ুন: রোহিত শর্মার পর কে হবেন ভারতের টেস্ট দলের অধিনায়ক? নাম জানলে হয়ে যাবেন “থ”
কিন্তু কি আপনারা জানেন, এই দুই ব্যক্তিকে একসময় সিপিএমের তরফ থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। একসময় তারা বাম দলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন তারা। গতবছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে আর্থিক নয় ছয় নিয়ে তাদের নামে অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগ ওঠার পরই দলের তরফ থেকে তাদের ছয় মাসের সাসপেন্ড করে দেওয়া হয়। আর এখন কলেজের এত বড় পদে থাকা সত্ত্বেও তাদের নামে এত বড় অভিযোগ। এখন প্রশ্ন ঠিক কতদিনের মধ্যে এরা পদত্যাগ করবেন? আর কতদিন এই আন্দোলন চলবে?