বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমেরিকানরা তাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট (US President Election) বাছাই করার জন্য ৫ নভেম্বরে নির্বাচনের দিনটির জন্য অপেক্ষা করেছে। যেখানে দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে, এই নির্বাচনে নিউ ইয়র্কের ব্যালট পেপারগুলি উঠে এসেছে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। যেগুলি একটি অনন্য কারণে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। জানিয়ে রাখি যে, এবার নিউ ইয়র্ক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালটে বাংলা ভাষা অন্তর্ভুক্ত করেছে। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, হিন্দি ভাষা সেখানে অন্তর্ভুক্ত না হলেও বাংলা ভাষা স্থান পেয়েছে। বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করছি।
নির্বাচনে (US President Election) নিউ ইয়র্কের ব্যালটে স্থান পেল বাংলা:
ব্যালটে বাংলা ভাষার গুরুত্ব: জানিয়ে রাখি যে, বিপুলসংখ্যক প্রবাসী নিউ ইয়র্ক সিটিতে বাস করেন। যাঁদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ তাঁদের প্রথম ভাষা হিসেবে ইংরেজি বলেন না। তাঁদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হল এশিয়ান আমেরিকান। যাঁরা ভাষার সমস্যার সম্মুখীন হন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে নিউইয়র্ক সিটি বোর্ড অফ ইলেকশনের এক্সিকিউটিং ডিরেক্টর মাইকেল জে. রায়ান সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে চাইনিজ, স্প্যানিশ, কোরিয়ান এবং বাংলার মতো ভাষাগুলি ব্যালটে (US President Election) অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। যাতে আরও বেশি প্রবাসীর পক্ষে ভোট দেওয়া সহজ হয়। রায়ান বলেন, “এশীয় ভাষা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে, আমরা প্রতিটি ভোটারের পক্ষে ভোটদানের প্রক্রিয়া বুঝতে সহজ করার জন্য আমাদের দায়িত্ব পালন করছি।”
সবথেকে অবাক করার মত বিষয় হল, এশিয়ান আমেরিকান ফেডারেশনের তথ্য অনুসারে, নিউ ইয়র্কে বাংলা দ্বিতীয় সর্বাধিক কথ্য এশিয়ান ভাষা হিসেবে বিবেচিত হয়। যা ১২.২ শতাংশ এশিয়ান নিউ ইয়র্কবাসীর কথ্যভাষা। যার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের বাসিন্দা রয়েছে। অপরদিকে এই পরিসংখানের নিরিখে, হিন্দি ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। যেটিতে ৩.৩ শতাংশ মানুষ কথা বলেন। বাংলা ভাষার এই জনপ্রিয়তার কারণেই ওই ভাষাকে ব্যালটে (US President Election) অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যাতে এই সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশের জন্য ভোট দেওয়া সহজ করা যায়।
কেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে: জানিয়ে রাখি, নিউ ইয়র্কের ব্যালটে বাংলা ভাষার অন্তর্ভুক্তি শুধু একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পদক্ষেপই নয়। বরং, এর পেছনে একটি আইনি প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে। ২০১০-এর দশকের গোড়ার দিকে, ভাষার সহজলভ্যতার জন্য একটি মামলার পরে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে নিউ ইয়র্ককে অন্তত একটি দক্ষিণ এশীয় ভাষায় ভোটদানে সহায়তা প্রদান করতে হবে। ওই আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলা ভাষা বলার মানুষ থাকায় বাংলাকে বেছে নেওয়া হয়। তারপর থেকে, ২০১৩ সালে, কুইন্সে প্রথমবারের মতো বাংলায় ব্যালট (US President Election) উপলব্ধ করা হয়।
আরও পড়ুন: “আমেরিকার স্বর্ণযুগ আসছে….”, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের পর বিরাট ঘোষণা ট্রাম্পের
এই সিদ্ধান্তটি ১৯৬৫ সালের ভোটাধিকার আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। যা সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলিকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণরূপে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করার জন্য ভাষার সহায়তা প্রদান করে। এই আইনের অধীনে, নিউ ইয়র্ককে শুধুমাত্র ব্যালট নয়, অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভোটদান সামগ্রীও বাংলা ভাষায় উপলব্ধ করতে হবে। যাতে বাংলা বলা বাসিন্দারা ভাষার বাধা ছাড়াই নির্বাচনে (US President Election) অংশগ্রহণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: এবার ভারতে আয়োজিত হবে অলিম্পিক! পাঠানো হল চিঠি, হতে চলেছে স্বপ্নপূরণ
এমতাবস্থায়, নিউ ইয়র্কের বাংলাভাষী সম্প্রদায় এই পদক্ষেপকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে। শুধু তাই নয়, ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, ডঃ অবিনাশ গুপ্তও এটিকে ভারতীয় সম্প্রদায়ের জন্য একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করেছেন। তিনি জানান, “এটি আরও বেশি ভারতীয়কে ভোট দিতে এবং তাঁদের আওয়াজ সামনে আনতে উৎসাহিত করবে। এই সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়ছে, এবং এই পদক্ষেপ তাঁদের সমর্থন জানাচ্ছে।”