বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিনে দিনে আরও ভয়ঙ্কর অভিশাপে পরিণত হচ্ছে বিশ্ব উষ্ণায়ন। হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে এভারেজ গ্লোবাল টেম্পারেচার। সেই সাথে পাল্লা দিয়ে গলছে হিমবাহের বরফ। অবিশ্বাস্য হারে হিমবাহের বরফ গলতে শুরু করায় সমুদ্রের জলস্তরও ক্রমশ বেড়েই চলেছে। যার ফলে এবার চরম অস্তিত্ব সংকটে মুখে খোদ কলকাতাবাসী (Kolkata)।
জলের তলায় তলিয়ে যাবে কলকাতা (Kolkata)
দিন দিন সমুদ্র জলস্তর বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিবেশ বিদদের কপালে চওড়া হচ্ছে চিন্তার ভাঁজ। কারণটা সত্যিই ভয়ের। শোনা যাচ্ছে আগামী দিনে জলের তলায় তলিয়ে যেতে পারে প্রাণের শহর কলকাতা (Kolkata)। সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যা থেকে জানা যাচ্ছে, যে হারে সমুদ্রের জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে তাতে আগামী দিনে জলের তলায় তলিয়ে যেতে পারে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকা।
একই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ভারতের অন্যান্য মেট্রো সিটি গুলি নিয়েও। এই তালিকায় কলকাতা (Kolkata) ছাড়াও রয়েছে দিল্লী-মুম্বাই-চেন্নাইয়ের মতো শহরগুলিও। নানান গবেষণা থেকে উঠে আসছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। পরিবেশবিদরা বলছেন এইভাবে চলতে থাকলে আগামী ছয় বছরের মধ্যেই কলকাতাকে (Kolkata) স্পর্শ করে ফেলবে সমুদ্র। তাই হাতে আর বেশি সময় নেই। কিন্তু কেন? কলকাতা (Kolkata) শহর নিয়ে এই ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণী করার কারণ কি?
এ প্রসঙ্গে ভূতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন কলকাতার মাটির তলা থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে পলিরাশি। দুর্বল হয়ে যাচ্ছে কলকাতার মাটি। অন্যদিকে অবিশ্বাস্য হারে বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। আর তাতেই অতল সমুদ্রের তলায় তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এড়িয়ে যেতে পারছেন না পরিবেশবিদরা। তবে শুধু কলকাতা নয় জানা আছে আগামী ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে সমুদ্রের তলায় চলে যেতে পারে ভারতবর্ষের উপকূলবর্তী আরও ১২-টি শহর।
লাগাতার সমুদ্রের জলস্তরের বৃদ্ধির ফলে নদীতে ঢুকতে শুরু করেছে সমুদ্রের জল। যা উপকূলবর্তী শহরগুলির জন্য খুব একটা ভালো সংকেত নয়। কিন্তু কি কারণে এই চরম বিপদের মুখে দাঁড়িয়ে কলকাতা? বিজ্ঞানীদের দাবি বিশ্ব উষ্ণায়নের কারণেই হিমবাহ গলে সমুদ্রের জলস্তর বৃদ্ধির কারণেই আগামী দিনে কলকাতা সহ গোটা ভারতবর্ষের উপকূলীয় শহর গুলিকেও সমুদ্রের গ্রাসে চলে যেতে হতে পারে।
আরও পড়ুন : আত্মত্যাগকে শ্রদ্ধা! ‘ওয়ান র্যাঙ্ক ওয়ান পেনশন’ পেয়ে উপকৃত ২৫ লক্ষ জওয়ান
আসলে দিনের পর দিন পরিবেশ দূষণের কারণে বাড়ছে কার্বন-ডাই-অক্সাইড-এর মাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে কমে যাচ্ছে অক্সিজেন। আর যার যা গলিয়ে দিচ্ছে হিমবাহের বরফ। যার ফলে হু হু করে বাড়ছে সমুদ্রের জলস্তর। কিন্তু ইদানিং অনেকের মনেই একটা ভুল ধারণা তৈরি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে শুধুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে কলকাতা কিংবা মুম্বাই।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন এই ধারণা একেবারে ভুল। পূর্ব এবং পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকা থেকে স্ট্রেট লাইনের ৮২ কিলোমিটার এলাকা সমুদ্রের তলায় চলে যাবে। এই ঘটনার ১০ বছর পর ভূমিভাগের আরও ৭০ কিলোমিটার ভেসে যাবে সমুদ্রের তলায়। শুধু তাই নয় আগামী দশ বছরে ভারতবর্ষের প্রায় ৪৩ কোটি মানুষ এনভায়রনমেন্টাল রিফিউজিতে পরিণত হবে। তবে বিশেষজ্ঞদের কথায় এই ভয়ঙ্কর বিপদের মুখে পড়েও শুধুমাত্র টিকে থাকবে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম,পশ্চিম মেদিনীপুর,পুরুলিয়া, বীরভূম, বাঁকুড়া,পশ্চিম বর্ধমানের বেশ খানিকটা অঞ্চল।
কিন্তু এই বিপদের হাত থেকে বাঁচার উপায় কি? এ প্রসঙ্গে ভূতত্ত্ববিদদের পরামর্শ প্রথমত দূষণ কমানো তা অত্যন্ত জরুরী। তাছাড়া আগেই বলা হয়েছে যে কলকাতার মাটি দিনে দিনে দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই মাটির তলায় যে অংশগুলি সমুদ্রের সঙ্গে সংযুক্ত সেই সমস্ত সংলগ্ন এলাকার ৮৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন এলাকাকে মাটির নিচ দিয়ে ব্যারিকেড করে দিতে হবে। যাতে সমুদ্রের জল কোনোভাবে মাটি ক্ষয় করতে না পারে।