বাংলাহান্ট ডেস্ক : জগতকে যিনি ধারণ করেন তিনিই হলেন জগদ্ধাত্রী। জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja) আজ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা বাংলায়। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সুখ্যাতি আবার বিশ্বজোড়া। ইতিহাসবিদরা বলেন, রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন করেন। বাংলার বিভিন্ন পুজো ও পার্বণের পিছনে রয়েছে সুদীর্ঘ ইতিহাস।
জয়রামবাটিতে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja)
হুগলি জেলার জয়রামবাটী (Jayrambati) ধন্য হয়েছিল মা সারদার আগমনে। জয়রামবাটী হল সারদা মায়ের জন্মভূমি। জয়রামবাটীর এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নেন মা সারদা। জানা যায়, সারদা দেবীর বাবা অল্প বয়সে মারা যান। সংসার চালানোর তাগিদে সারদা দেবীর মা শ্যামা সুন্দরী দেবী ধান ভানার কাজ নেন একটি সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ বাড়িতে। ততদিনে অবশ্য রামকৃষ্ণের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন মা সারদা।
শোনা যায়, যখন মা সারদা বাপের বাড়ি যেতেন তখন তিনি তাঁর মাকে ধান ভানার কাজে সাহায্যও করতেন। কিন্তু এই দরিদ্র পরিবার হঠাৎ করেই শুরু করে জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja)। নিমাইসাধন বসু তাঁর ‘সকলের মা সারদা’ বইতে লিখেছেন, সেই সময় গ্রামের রীতি অনুযায়ী জয়রামবাটী গ্রামের ব্রাহ্মণ নব মুখার্জি কালীপুজোর জন্য নৈবেদ্য সংগ্রহ করতেন গ্রামবাসীদের কাছ থেকে।
আরোও পড়ুন : আজকের রাশিফল ৯ নভেম্বর, লটারিতে বাজিমাত করবে এই তিন রাশি
তবে এক বছর তিনি কোনও কারণে সারদা দেবীর (Maa Sarada) মায়ের কাছ থেকে নৈবেদ্য নিতে অস্বীকার করেন। সারদা দেবীর মা শ্যামা সুন্দরী দেবী এই ঘটনায় চরমভাবে আঘাত পান। সারারাত ধরে কান্নাকাটিও করেন। এরপর তিনি দেখেন এক দেবী তাঁর কাছে এসে বলছেন, ‘কাঁদছ কেন মেয়ে? তোমার নৈবেদ্য মা কালীর পুজোর জন্য নেয়নি তো কী হয়েছে, আমি তোমার নৈবেদ্য গ্রহণ করব’।
পরে শ্যামা দেবী জানতে পারেন, ইনিই হচ্ছেন স্বয়ং জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri)। তারপর থেকে জয়রামবাটী গ্রামে শ্যামা সুন্দরী দেবীর উদ্যোগে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো। জানা যায়, জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলনের পর থেকে অবস্থা ফেরে শ্যামা সুন্দরী দেবীর। শ্যামা সুন্দরী দেবীর মৃত্যুর পরেও এই পুজোয় প্রতি বছর অংশ নিতেন মা সারদা। পুরনো ঐতিহ্য মেনে আজও জয়রামবাটী গ্রামে ধুমধামের সাথে পালিত হয় জগদ্ধাত্রী পুজো।