বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুজোর আগে লালমাটির জেলায় ফিরেছেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। গরু পাচার মামলায় জেলযাত্রার কারণে টানা প্রায় দু’বছর রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও জেলায় ফিরেই পুরোনো ফর্মে ফিরেছেন কেষ্ট। দলীয় অনুষ্ঠান থেকে বিজয়া সম্মেলনী, সবতেই জ্বলজ্বল করেছে কেষ্ট দা’র উপস্থিতি। তবে কেষ্ট ফেরার পর থেকেই ফের পাল্লা দিয়ে ফিরেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কেষ্ট বনাম কাজলের ঠান্ডা লড়াইয়ের ছবিও স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতেই এবার মুখ খুললেন কোর কমিটির কাজল শেখ (Kajal Sheikh)।
গত বৃহস্পতিবার কঙ্কালীতলার লায়েকবাজার তৃণমূল কার্যালয়ে একটি দলীয় সভায় বক্তব্য রাখেন কাজল শেখ। সেখানেই তিনি বলেন, “কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্যান্য সংসদে তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে ঠিক তবে এই লায়েকবাজারে মানুষ দু’হাত ভরে তৃণমূলকে ভোট দিয়েছে। উন্নয়ন হয়নি সেটা বলব না তবে গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জন্য এই এলাকা সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত। কেউ কেউ বিভেদ, দ্বন্দ্ব তৈরির চেষ্টা করেছিল।”
নিজের বক্তব্যে একবারের জন্যও অনুব্রতর নাম নেয়নি কাজল শেখ। তবে বীরভূম জেলা সভাধিপতির নিশানায় যে অনুব্রত মণ্ডল তা বুঝতে সমস্যা হয়নি কারও। যদিও এদিন দ্বন্দ্ব-বিভেদ ভুলে সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজের বার্তা দেন কাজলবাবু। উল্লেখ্য, কঙ্কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েত উপপ্রধান মামন শেখ কাজল ‘গোষ্ঠী’ ছেড়ে যোগ দিয়েছেন অনুব্রত শিবিরে। ওদিকে প্রাক্তন পঞ্চায়েত সমিতির বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ আলেফ শেখ কেষ্ট শিবির ছেড়ে নাম লিখিয়েছেন কোর কমিটির সদস্য কাজল শেখের শিবিরে।
কেষ্ট ফেরার পর কি ফের তিনিই একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিপতি হবেন নাকি কোর কমিটির হাতেই থাকবে যাবতীয় ক্ষমতা এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। এদিকে সূত্রের খবর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) চাইছেন বীরভূম জেলার সংগঠন কোর কমিটির হাতেই থাকুক। জেলা সভাপতি হিসেবে অনুব্রত মণ্ডল যেন কোর কমিটিকে সঙ্গে নিয়ে চলেন।
প্রসঙ্গত, অনুব্রত জেলে যাওয়ার পর বীরভূমে তৃণমূলের এক কোর কমিটি গড়ে দিয়েছিলেন মমতা। রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ এবং তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষকে নিয়ে গঠিত হয় সেই কমিটি।
আরও পড়ুন: সরকারি কর্মীদের জন্য বড় খবর! নতুন বছরেই বাড়বে মূল বেতন? DA নিয়ে নয়া আপডেট!
লোকসভা ভোটের মুখে প্রথমে ৫ সদস্যের কোর কমিটি তৈরি করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত ঘনিষ্ঠদেরই সেখানে প্রভাব অধিক ছিল। পারে অবশ্য অনুব্রত বিরোধী হিসেবে পরিচিত কাজল শেখকেও কমিটিতে নেওয়া হয়। গরু পাচার মামলায় প্রায় দু’বছর জেলে ছিলেন অনুব্রত (Anubrata Mondal)। সেই সময়ের মধ্যে অনুব্রতর ‘চেয়ার’ কাউকে না দিলেও সব ক্ষমতা ছিল কোর কমিটির হাতেই। কেষ্ট জেল থেকে ফেরত এলেও এখনও সেই কোর কমিটি রয়েছে।