বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারি প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র বনাম রাজ্য সরকারের মধ্যে বিবাদ নতুন নয়। বহুদিন ধরে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবাস যোজনার (Awas Yojana) প্রকল্পে টাকা আটকে রাখার অভিযোগ তুলে আসছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের জট না কাটায় নিজেই টাকা দিয়ে বাংলার মানুষের জন্য নতুন করে এই বাংলা আবাস যোজনা (Awas Yojana) প্রকল্প চালু করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
আবাস প্রকল্পের (Awas Yojana) তালিকা তৈরীতে নাজেহাল জেলা প্রশাসন
তাই এবার নিজের টাকাতেই বাংলায় আবাস প্রকল্প (Awas Yojana) শুরু করতে চলেছে রাজ্য। তবে এই আবাস যোজনার (Awas Yojana) টাকা দেওয়া আগে আবেদনকারীদের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে কার্যত নাজেহাল হাওড়া জেলা প্রশাসন। নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও চূড়ান্ত তালিকা তৈরির কাজ কবে শেষ হবে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে জেলা প্রশাসনের মধ্যে।
জানা গেছে শুধু আবাস যোজনা প্রকল্পের কাজই নয়, আগামী ১১ই নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজও ঠিকমতো করা যাবে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে এই দুই কাজের দায়িত্বে রয়েছেন ব্লক প্রশাসনের কর্মীরা। তাদের মধ্যে অনেকে জানাচ্ছেন আবাসের কাজ করতে গিয়ে তারা কার্যত হিমশিম খাচ্ছেন।
যদিও এই দাবি মানতে নারাজ জেলাশাসক দীপাপ্রিয়া পি। প্রসঙ্গত তালিকা তৈরী করতে গিয়ে দেখা গিয়েছে ২০২২ সালে আবাস প্রকল্পে যে সমস্ত উপভোক্তাদের নাম ছিল দীর্ঘদিন ধরে টাকা না পেয়ে এদের মধ্যে অনেকে নিজে থেকে পাকা বাড়ি করে ফেলেছেন। তাই তাদের নাম সমীক্ষা থেকে বাদ দিতে বলা হয়েছিল শুরুতেই। নির্দেশ মেনে এক সপ্তাহ ধরে সমীক্ষার কাজ চলার পর আবার জেলা প্রশাসনকে নতুন নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেখানে জানানো হয় ইঁটের দেওয়ালের বাড়ি থাকলে যেন নাম বাদ দেওয়া হয়। এরপর সমীক্ষা করে দেখা যায় প্রতিটি ব্লকে গড়ে ৫০ শতাংশ করে নাম বাদ গিয়েছে। এরপর ৩০ অক্টোবর ছিল তালিকা তৈরির শেষ দিন। কিন্তু আবার নবান্ন থেকে আসে নতুন নির্দেশ। সেখানে বলা হয় পাকা বাড়ি থাকলেই নাম বাদ দেওয়া যাবে না।
এক্ষেত্রে দেখতে হবে পাকা বাড়ির ঢালাই ছাদ আছে কিনা। ছাদ থাকলে তবেই সেই নাম বাদ যাবে। এই সমীক্ষার কাজ শেষ হওয়ার আগেই আবার নতুন নির্দেশ পাঠায় নবান্ন। সেখানে জানানো হয় ২০২২ সালের তালিকায় নাম থাকা যেসব প্রাপক পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি তৈরী করেছেন তাদেরও বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হবে। নতুন নির্দেশ পাওয়ার শুক্রবার থেকেই আবার শুরু হয়েছে সমীক্ষার কাজ।
আরও পড়ুন: গৃহবধূর হত্যাকান্ডে চাঞ্চল্যকর রায় হাই কোর্টের! বেকসুর খালাস স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোক
এবার যারা পাকা বাড়ি তৈরি করে ফেলেছেন তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে যে তারা কোনো ঋণ নিয়ে এই বাড়ি করছেন কিনা? এপ্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একটি অংশের বক্তব্য এই ভাবে বারবার নির্দেশিকা বদল হওয়ায় তালিকা তৈরি করতে একপ্রকার নাজেহাল অবস্থা হচ্ছে ব্লক প্রশাসন কর্তৃপক্ষের।
সূত্রের খবর এক একটি ব্লকে প্রায় ১০ হাজার করে উপভোক্তার নাম রয়েছে। বারবার এই উপভোক্তাদের নাম ধরে সমীক্ষা করতে সময়ও যেমন বেশি লাগছে,তেমনি বাসিন্দাদের মধ্যেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া এই একই কাজ বারবার করতে গিয়ে আধিকারিক ]-কর্মীদের অন্যান্য কাজের সময় নষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয় ভূমি,প্রাণী সম্পদ, ও শিক্ষা সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মীরা এই আবাস প্রকল্পের কাজ করতে গিয়ে তাদের নিজস্ব দপ্তরের কাজ করতে পারছেন না বললেই চলে। যার ফলে আবাস যোজনা প্রকল্পের এই কাজ নিয়ে একপ্রকার অসন্তোষ তৈরি হয়েছে জেলা প্রশাসনের অধিকারীদের মধ্যে।