বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্গাপুজো,কালীপুজোর পর শেষ জগদ্ধাত্রী পুজো। হুগলির চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Pujo) খ্যাতির কথা অজানা নয় কারও কাছেই। সারা বছর এই জগদ্ধাত্রী পুজোর (Jagadhatri Pujo) অপেক্ষাতেই থাকেন চন্দননগরের মানুষ। আলোর মালয় সেজে ওঠে গোটা শহর। দুর্গা-কালী কিংবা জগদ্ধাত্রী (Jagadhatri Pujo) প্রত্যেকেই মাতৃশক্তির আলাদা-আলাদা রূপ। আর মায়ের কাছে পশু-পাখি হোক কিংবা মানুষ প্রত্যেকেই সন্তান তুল্য।
জগদ্ধাত্রী পুজোয় (Jagadhatri Pujo) পোষ্যকে নিয়ে গিয়ে অপমান আত্মঘাতী যুবতী
কিন্তু এবছর চন্দননগরেরই এক জগদ্ধাত্রী পুজোয় প্রিয় পোষ্যকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে গিয়ে চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন এক তরুণী। সেদিনের অপমানের জেরে অবসাদে ভুগতে শুরু করেন তরুণী। আর শেষ পর্যন্ত নিয়ে ফেলেন এক চরম সিদ্ধান্ত। ঘটনায় স্তম্ভিত হুগলির ফটকগোড়া এলাকার মানুষজন।
ঠিক কি ঘটেছিল সেদিন?
ঘটনার সূত্রপাত হয় জগদ্ধাত্রী পুজোর ষষ্ঠীর দিন। ওই দিন প্রিয় প্রিয় পোষ্যদের সঙ্গে নিয়ে মায়ের সাথেই ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটির সদস্য ছিলেন সুশ্রিকা দত্ত (২৩)। ফটকগোড়া নন্দ ঘোষ লেনের বাসিন্দা সুশ্রিকার বাবা সুমন দত্তের অভিযোগ ষষ্ঠীর দিন তার মেয়ে এবং স্ত্রী চারপেয়ে পোষ্যদের নিয়ে মন্ডপে ঢুকতে গেলেই বাধা দেয় এক প্রবীণ সদস্য।
কুকুর নিয়ে মণ্ডপের ভিতরে ঢোকায় তাকে ভর্ৎসনা করেছিলেন ওই ব্যক্তি। বিষয়টা খারাপ লাগলেও তখন কোন প্রতিবাদ না করেই সেখান থেকে সটান বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তরুণী। তবে গোটা বিষয়টা জানিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্টও করেছিলেন সুশ্রীকা। তারপরেই ফটকগোড়া পুজো কমিটির তরফে একটি পোস্ট করে সুশ্রীকাকে পাল্টা আক্রমণ করা হয়।
আরও পড়ুন: WAQF বিল নিয়ে বড় ঘোষণা অমিত শাহের! কবে পাশ হবে এই বিল?
শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে নিজের করা পোস্টটিকে ডিলিট করে দেন সুশ্রিকা। সেই সাথে অপর একটি পোস্টে তিনি জানান সব মিটে গিয়েছে। তবে গোটা ঘটনার জেরে ব্যাপক মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন তরুণী। শনিবার মেয়েকে বাড়ি রেখেই ঠাকুর দেখতে গিয়েছিলেন বাবা-মা। বাড়ি ফিরে এসেই তাঁরা দেখেন ভয়ংকর দৃশ্য। গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলছে। মেয়ে। পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্দের জন্য জন্য চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে পাঠায়। চন্দননগর থানা ইতিমধ্যেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলার অজু করেছে।
অন্যদিকে ফটকগোড়া পুজো কমিটির সম্পাদক বিপ্লব দাস দায় ঝেড়ে বলেছেন, ‘খুবই মর্মাহত আমরা এই ঘটনায়। ওনার বাবা যে অভিযোগ করছেন সেটা হয়ত ঘটনার আকস্মিকতায়। পুজো এই ঘটনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। সেদিনকার ঘটনাটা খুব সামান্য। ষষ্ঠীর রাতে খুব ভিড় ছিল। অনেক দর্শনার্থী সরাসরি পুজো কমিটির দিকে আঙুল তুলেছিল। তখন অনুরোধ করা হয় কুকুর নিয়ে বেরিয়ে যান। ব্যক্তিগতভাবে সোশাল মিডিয়ায় কে কী পোস্ট করেছে সে বিষয়ে পুজো কমিটির কিছু জানে না। কেউ কিছু মন্তব্য করে থাকলে তার দায়িত্ব পুজো কমিটির নয়।’