নক্ষত্রপতন! না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন “বাঞ্ছারাম”, প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ মিত্র

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ২০২৪-এ ফের টলিউডের বিরাট আকাশে মহীরুহু নক্ষত্রপতন। চিরতরে বিদায় নিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ মিত্র (Manoj Mitra)। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে এক বিরাট অধ্যায়ের অবসান। প্রয়াণকালে বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। এর আগেও কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যু খবর নিয়ে বিভিন্ন ভুয়ো খবর ছড়াতে দেখা যায়। ফলে অভিনেতার অনুরাগীরা শুধু চাইছিলেন যেন খবরটি এবারও মিথ্যে হোক। কিন্তু আজ অর্থাৎ ১২ নভেম্বর অভিনেতার নক্ষত্রদের দেশে পাড়ি দেওয়া চির সত্য। জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।

প্রয়াত বর্ষীয়ান অভিনেতা মনোজ মিত্র (Manoj Mitra):

গত ২৩ সেপ্টেম্বর শারীরিক অসুস্থতা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে অভিনেতাকে ভর্তি করা হয় সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেই সময়, তাঁরই কন্যা সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে জানান, বাবার শারীরিক অবস্থা খুবই সংকটজনক। হার্ট ঠিকভাবে কাজ করছে না। যদিও তারপর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন সকলের প্রিয় “বাঞ্ছারাম।” তবে বাড়িতে তিনি চিকিৎসার আওতায় ছিলেন।

কিন্তু এবার আর ফিরিয়ে আনা গেলো না। বর্ষীয়ান অভিনেতার ভাই, সাহিত্যিক অমর মিত্র জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫০ নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন অভিনেতা মনোজ মিত্র। আর তারপর থেকেই টলিউডে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। এক স্বর্ণযুগের অবসান ঘটলো অভিনেতা মনোজ মিত্রের (Manoj Mitra) হাত ধরে।

বর্ষীয়ান অভিনেতার অভিনয় এখনো সকলের মনে দাগ কেটে রয়েছে। জানা যায়, ১৯৩৮ সালে ২২ ডিসেম্বর অবিভক্ত বাংলাদেশের খুলনা জেলার সাতক্ষীরা মহকুমার ধুলিহর গ্রামে জন্ম অভিনেতা মনোজ মিত্রের (Manoj Mitra)। অভিনেতার বাবা ছিলেন অশোককুমার মিত্র এবং মা রাধারানী মিত্র। স্বাধীনতার পরই সকলে এপার বাংলায় চলে আসেন। এরপর অভিনেতার এখানেই বেড়ে ওঠা।

Veteran actor Manoj Mitra passed away.

১৯৫৮ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে দর্শন বিষয়ের উপর স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে পড়াশোনা করলেও অভিনয় যেনো মনোজ বাবুর মনে গেঁথেছিল। তাইতো অধ্যাপনার পাশাপাশি থিয়েটারে অভিনয় চালিয়ে যেতেন। যদিও বাড়ি থেকে অভিনেতার থিয়েটার করাতে বিন্দু মাত্র মত ছিল না। তবুও মনোজ বাবুর জেদের কাছে সবকিছুই তুচ্ছ হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: লিঙ্গ পরিবর্তন করলেন ভারতের এই তারকা ক্রিকেটারের সন্তান! আরিয়ান থেকে হলেন অনায়া

জানা যায়, ওই কলেজেই থিয়েটারের মধ্যে দিয়ে তিনি নিজের অভিনয় দক্ষতা প্রদর্শন করেন। স্নাতক পাশ করার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করে, ডক্টরেটের জন্য গবেষণা শুরু করেন। পড়াশোনার পাশাপাশি চালিয়ে যান থিয়েটারের কে। অভিনেতা একটি নাট্য দল তৈরি করেছিলেন যার নাম ছিল “ঋতায়ন”। আর সেই যে পথ চলা শুরু তারপর থেকে আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিনেতার বিশিষ্ট কিছু নাটকের নাম হচ্ছে, “অবসন্ন প্রজাপতি”, “নীলা”, “মৃত্যুর চোখে জল”, “সিংহদ্বার”-এর মত আরো অনেক জনপ্রিয় নাটক।

আরও পড়ুন: মোক্ষম জবাব পাবে চিন-পাকিস্তান! এবার রাশিয়ার সহায়তায় শত্রুদের দাদাগিরি খতম করবে ভারত

থিয়েটার এর পাশাপাশি অভিনয় জগতেও শুরু হয় অবাধ বিচরণ। বাংলা সিনেমার অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন তিনি। তার উল্লেখযোগ্য কিছু ছবি হলো, “বাঞ্ছারামের বাগান”, “শত্রু”, “তিন মূর্তি” সহ আরো বিশেষ ছবি। তবে অভিনয় করে শুধু দর্শকদের মন কেড়েছেন এমনটা নয়, পেয়েছেন অনেক পুরস্কারও। পুরনো দিনের সিনেমা বলতে বোঝায় অভিনেতা মনোজ মিত্রের (Manoj Mitra) ছবি।


Sunanda Manna
Sunanda Manna

সুনন্দা মান্না, বাংলা হান্টের স্ক্রিপ্ট রাইটার। গুরুদাস কলেজ থেকে সাংবাদিকতা করার পর থেকেই সংবাদ মাধ্যমে কাজ শুরু। দেশ থেকে বিদেশ, রাজনীতি, বিনোদন বিভিন্ন তথ্যই আপনাদের কাছে তুলে দেওয়া আমার মূল লক্ষ্য।

সম্পর্কিত খবর