বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০২৪ প্রায় শেষের পথে। এখনও সুপ্রিম কোর্টে ঝুলে রয়েছে বাংলার রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলা (Dearness Allowance)। এর আগে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতার এই মামলার সঙ্গে অন্যন্য ভাতার বিষয়টিও যুক্ত হয়েছিল। মামলাটি ‘এক্সটেন্সিভ হিয়ারিং’ পর্যায়ে ছিল। গত ১৫ জুলাই ডিএ মামলার (DA Case) শুনানির পর আদালতের নির্দেশনামায় বলা হয়েছিল, এই মামলার আবেদনের বিস্তারিত শুনানির প্রয়োজন।
বাংলার ডিএ মামলার জন্য জানুয়ারির মাসের ৭ তারিখের দিনটি ধার্য করেছিলেন জাস্টিস ঋষিকেশ রায় এবং জাস্টিস এস ভাট্টি। এরপর একেবারে ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ফের উঠতে চলেছে পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ মামলা। তাই আপাতত সকলে রাজ্য সরকারি কর্মীকে তাকিয়ে থাকতে হবে আগামী বছরের দিকে।
২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। প্রথমবার যখন ডিএ মামলা সুপ্রিম কোর্টে উঠেছিল, তখন এই মামলা বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি ঋষিকেশ রায় শুনেছিলেন। পরে আবার বিচারপতি ঋষিকেশ রায় এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের এজলাসে মামলাটি ওঠে। গত বছরের মার্চে মামলাটি ওঠে বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের এজলাসে। ২০২৩ সালেরই এপ্রিল মাসে ডিএ মামলার শুনানি শেষবারের মতো উঠেছিল এই দুই বিচারপতির এজলাসে।
জানিয়ে রাখি, এরই মধ্যে অবসর নিয়েছেন বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী। ওদিকে ডিএ মামলায় সেই প্রথম থেকেই যুক্ত থাকা বিচারপতি ঋষিকেশ রায় অবসর নিতে চলেছেন ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি। ২০২৫ সালের ৭ জানুয়ারি (মঙ্গলবার) সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) ফের উঠতে চলেছে ডিএ মামলা। ওই একই মাসেই অবসর নেবেন জাস্টিস ঋষিকেশ রায়। যা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ।
অবসরের আগে ডিএ মামলার বিস্তারিত শুনানি করে তার নিষ্পত্তি জাস্টিস ঋষিকেশ রায় করে যাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে সরকারি কর্মীদের একাংশের মনে। এই নিয়েই এখন চিন্তায় সরকারি কর্মীরা। এদিকে সদ্য অবসর রয়েছেন ডি ওয়াই চন্দ্রচুড়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব নিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব খান্না। এই আবহে সম্প্রতি ডিএ মামলা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় করা পোস্টে মলয়বাবু লিখেছেন, ‘আইনি দেবীর রূপ পরিবর্তন হয়েছে। দেবীর হাতে তরোয়ালের জায়গায় এবার সংবিধান এসেছে। এতদিন দেবীর চোখ বন্ধ ছিল ফলে ডিএ মামলাটি দৃষ্টি গোচর হয়নি। এবারে আশা করা হচ্ছে, আগামী ০৭.০১.২৫ ডিএ মামলাটি শোনা হতে পারে।’
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২০ মে ডিএ মামলা হাইকোর্টে উঠলে আদালতের নির্দেশ ছিল, তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। তবে সেবার জয় পেয়েও মেলেনি বকেয়া। উচ্চ আদালতের ডিএ (Dearness Allowance) রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিভিউ পিটিশন দাখিল করেছিল রাজ্য। যদিও তা খারিজ হয়ে যায়। এরই মাঝে তিনটি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন রাজ্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলার দায়ের করে। সেই মামলার মধ্যেই পাল্টা সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য।
আরও পড়ুন: চায়ের দোকানে ঢুকে ফিল্মি কায়দায় তৃণমূল নেতাকে গুলি করে খুন! ভাটপাড়ায় ঘটনায় শিউরে উঠবেন
সেই ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা চলছে। বর্তমানে ২০২৪ সাল। হাইকোর্টে ডিএ মামলাকারীরা জয় পেয়েছিল। গত ২০২২ সালের ২০ মে হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে তিন মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে হবে। এরপরই রাজ্য সরকার স্পেশাল লিভ পিটিশন দায়ের করে। সেই প্রেক্ষিতেই মামলা শুরু হয়। তারপর থেকে আরও একাধিকবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা আদালতে উঠলেও বারে বারে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। এবারে ফের শুনানির আশায় দিন গুনছেন সরকারি কর্মীরা।