বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলা জুড়ে শীতের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আর শীত আসলো মানেই বাজারে বাজারে ছেয়ে যায় হরেক রকমের সবজিতে। আর শীতের সবজি মানেই গাজর, ফুলকপি (Cauliflower), বাঁধাকপি সহ গাদাগাদা সবজি ওঠার সময়। আর বাঙালিরাও মন ভরে এই সময় সবজি খেয়ে থাকেন। তবে এর মধ্যে সবথেকে যে সবজি পছন্দ করেন সেটি হচ্ছে ফুলকপি (Cauliflower)। ফুলকপি ভাজা, ফুলকপি আলু তরকারি, বড়া, রোস্ট ফুলকপি দিয়ে মাছের ঝোল আইটেমে ভরপুর এই সবজি। তবে কি জানেন? এই যে গপগপিয়ে সাদা সাদা ফুলকপি (Cauliflower) গুলো খাচ্ছেন সেগুলি আপনার জন্য বিষের সমান।
কেনো ফুলকপি (Cauliflower) ক্ষতিকর?
বিজ্ঞানের ভাষায় ফুলকপিকে (Cauliflower) বিভিন্ন রোগের পাওয়ারফুল ওষুধ বলা হয়। ফুলকপিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস, ফোলেট, ভিটামিন কে এবং ফাইবার পুষ্টি উপাদান। তবুও এই ফুলকপি খাওয়া ক্ষতিকর। তবে সবার জন্য ক্ষতিকর নয়, বিশেষ কিছু রোগীরা আছেন যারা এই ফুলকপি খেতে পারবেন না। চিকিৎসকরা পর্যন্ত এই সমস্ত রোগীদের ফুলকপি খেতে মানা করে।
কি কি রোগ থাকলে ফুলকপি (Cauliflower) খাওয়া যায় না চলুন দেখে নিই:
১) থাইরয়েডের সমস্যা: যে সমস্ত ব্যক্তি থাইরয়েডে ভুগছেন, তারা ফুলকপি (Cauliflower) থেকে দশ হাত দূরে থাকুন। কারণ এতে থাকা বিশিষ্ট কিছু উপাদান আপনার T3 এবং T4 হরমোনের মাত্রাকে প্রভাবিত করে। অনেক সময় এই হরমোনের মাত্রা অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়ে যায়। এতে করে আপনার শরীরে বিশেষ বিশেষ ক্ষতি হতে পারে। তাই থাইরয়েড রোগীরা ফুলকপি (Cauliflower) খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
আরও পড়ুন : প্রতি গানে পারিশ্রমিক ১০ কোটি টাকা! অরিজিৎ-শ্রেয়ার চেয়েও “দামি” বলিউডের এই শিল্পী
২) কিডনি সমস্যা: যারা কিডনি সমস্যায় ভুগছেন, চিকিৎসকরা তাদের ফুলকপি (Cauliflower) খাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলছেন। কারণ এতে করে কিডনিতে স্টোন হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। চিকিৎসকদের মতে, ফুলকপিতে (Cauliflower) অক্সালেট থাকে। এটি এমন একটি যৌগ যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে সক্ষম।
আরও পড়ুন : হয়ে যান সাবধান! এই কলা খেলে নির্ঘাত হবে ক্যান্সার, বিপদে পড়ার আগে এখনই নিন জেনে
৩) এলার্জি: কেউ যদি এলার্জির সমস্যায় ভোগেন তাহলে তারাও এই সবজি খাওয়া বন্ধ রাখুন। চেষ্টা করুন সীমিত মাত্রায় ফুলকপি খাবার কিংবা এড়িয়ে চলার।
৪) রক্তে সমস্যা: অনেকেই আছেন যারা রক্ত পাতলা করার ওষুধ খান। তবে মনে রাখবেন, ফুলকপিতে (Cauliflower) পটাশিয়াম বেশি থাকে। যারা ফুলকপি বেশি খান, তাদের রক্ত কিন্তু ধীরে ধীরে ঘন হতে থাকে। তাই যারা ব্লাড থিনিনের ওষুধ খাচ্ছেন আগে তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই ফুলকপি (Cauliflower) খান।
৫) গ্যাস, অম্বলের সমস্যা: প্রায় প্রত্যেকের ঘরে ঘরেই গ্যাস, অম্বল, বদ হজমের সমস্যা লেগেই থাকে। ফুলকপিতে (Cauliflower) ভিটামিন এ, বি এবং সি পাওয়া যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হলেও, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপকারী। গবেষকরা বলেন, পেট ফাঁপা, গ্যাস এবং অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা রয়েছে এই উপাদানগুলি সেই সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই ফুলকপি (Cauliflower) না খাওয়াই মঙ্গল।
৫) ব্রেস্ট ফিডিং: যে সমস্ত মায়েরা শিশুদের ব্রেস্ট ফিডিং করান, তারা ফুলকপি (Cauliflower) খাওয়া এড়িয়ে চলুন। যেহেতু ফুলকপি গ্যাস, অম্বলের মত সমস্যা সৃষ্টি করে। মায়ের গ্যাস অম্বল থেকে বাচ্চাদেরও সমস্যা হতে পারে। তাই মায়েরা ফুলকপি (Cauliflower) খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
ফুলকপির (Cauliflower) উপকারী গুণগুলো যেমন জানলেন, তেমনি কিছু উপকারী জেনে নিন:
ফুলকপিতে থাকা বিশেষ কিছু গুণ টাইপ ২ ডায়াবেটিসের হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও অন্ত্রের মাইক্রোবোয়াম তৈরি করে, অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। গবেষকদের মতে ফুলকপিতে থাকা সালফোরাফেন, গ্লুকোসিনোলেটের মতো যৌগ তৈরি করে। এই যৌগগুলি শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি করতে দেয় না। যেকোনো ক্যান্সারের হাত থেকে আপনাকে বাঁচাতে বেশ সাহায্য করে। তবে উপকারী হলেও চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, সীমিত পরিমাণ ফুলকপি খাওয়ার।